মুফতি আইয়ুব নাদীম
প্রশংসা এমন এক গুরুত্বপূর্ণ ও ও সর্বজনীন বিষয় যা পৃথিবীর সব মাখলুক করে থাকে। এমনকি পরকালীন জীবনে জান্নাতিরা যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন সেখানেও ৫ অবস্থায় আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করবেন।
এক. যখন কাফেরদের পৃথক করা হবে: কিয়ামতের বিভীষিকাময় দিনে যখন কাফেরদের মোমিনদের থেকে পৃথক হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হবে, তখন মোমিনরা আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করবেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আর (কাফেরদের বলা হবে) হে অপরাধীরা, আজ তোমরা (মোমিনদের থেকে) পৃথক হয়ে যাও।’ (সুরা ইয়াসিন: ৫৯)
দুই. পুলসিরাত পারাপারের পর: মানুষের আমলনামা ওজন এবং হিসাব-নিকাশের পর আল্লাহর নির্দেশে সবাইকে ফেরেশতারা পুলসিরাত দেখিয়ে বলবেন, ‘এটা তোমাদের গন্তব্যে পৌঁছার পথ। এ পুল পেরিয়েই তোমাদের যেতে হবে।’
কিন্তু সবার জন্য পেরিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। পাপী বান্দারা সেটাকে চুল থেকেও চিকন ও হিরার চেয়েও ধারালো দেখতে পাবে। তারা ওই পুলে পা রাখামাত্রই তাদের পা কেটে নিম্নস্থ জাহান্নামে পড়ে যাবে। আর নেককারদের জন্য হবে সুপ্রশস্ত কুসুমাস্তীর্ণ পথ। তারা তাদের নেকির তারতম্য অনুযায়ী গতির ভিন্নতায় জান্নাতে পৌঁছে যাবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যে তা (অর্থাৎ জাহান্নাম) অতিক্রম করবে না। এটা তোমার প্রতিপালকের পক্ষে এক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। অতঃপর যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে, তাদের আমি নিষ্কৃতি দেব আর জালিমদের তাতে (জাহান্নামে) মুখ থুবড়ানো অবস্থায় ফেলে রাখব।’ (সুরা মারিয়াম: ৭১-৭২)
মোমিনরা যখন এই পুলসিরাত নিরাপদে পার হবে, তখন আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করবেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তারা বলবে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের থেকে সমস্ত দুঃখ দূর করেছেন। নিশ্চয়ই আমাদের প্রতিপালক অতি ক্ষমাশীল, অত্যন্ত গুণগ্রাহী।’ (সুরা ফাতির: ৩৪)
তিন. নহরে হায়াত থেকে গোসলের পর: নহরুল হায়াত হলো, জান্নাতের বিশেষ নহর বা নদ, যেখানে গোসল করানোর পর জাহান্নামে পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া মানুষগুলো আবার সজীবতা, সৌন্দর্য ফিরে পাবে। তখন তারা জান্নাতে প্রবেশের এবং আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সাক্ষাতের প্রস্তুতি নিতে থাকবে। একপর্যায়ে যখন তাদের জান্নাতে প্রবেশের নির্দেশ দেওয়া হবে, তখন তারা আল্লাহর প্রশংসা করবে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আর তারা বলবে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের এই স্থানে পৌঁছিয়েছেন। আল্লাহ আমাদের না পৌঁছালে আমরা কখনোই (এস্থানে) পৌঁছাতে পারতাম না।’ (সুরা আরাফ: ৪৩)
চার. জান্নাতে প্রবেশ করার পর: যাবতীয় বিচারকার্যের পর যখন তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করবে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তারা (অর্থাৎ জান্নাতবাসীরা) বলবে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের সঙ্গে নিজ ওয়াদা সত্যে পরিণত করেছেন এবং আমাদের (জান্নাতের) ভূমির এমন অধিকারী বানিয়েছেন যে, আমরা জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা হয় ঠিকানা বাড়াতে পারি। সুতরাং সৎকর্মশীলদের পুরস্কার কত উত্তম!’ (সুরা জুমার: ৭৪)
পাঁচ. জান্নাতে আপনজন পাওয়ার পর: জান্নাতবাসীরা জান্নাতে প্রবেশের পর—স্ত্রী, সন্তানসন্ততি সবকিছু পেয়ে যখন তাদের সঙ্গে একত্রে বসবাস করবে, তখন আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করবে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘(অপরদিকে) যারা ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদের ইমানের কারণে তাদের প্রতিপালক তাদের এমন স্থানে পৌঁছাবেন যে, প্রাচুর্যময় উদ্যানরাজিতে তাদের তলদেশ দিয়ে নহর বহমান থাকবে। তাতে (প্রবেশকালে) তাদের ধ্বনি হবে—হে আল্লাহ, সকল দোষ-ত্রুটি থেকে তুমি পবিত্র এবং যেখানে তাদের অভিবাদন হবে সালাম। আর তাদের শেষ ধ্বনি হবে এই যে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।’ (সুরা ইউনুস: ৯-১০)
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া কাশেফুল উলূম মাদ্রাসা, মধুপুর, টাঙ্গাইল
প্রশংসা এমন এক গুরুত্বপূর্ণ ও ও সর্বজনীন বিষয় যা পৃথিবীর সব মাখলুক করে থাকে। এমনকি পরকালীন জীবনে জান্নাতিরা যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন সেখানেও ৫ অবস্থায় আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করবেন।
এক. যখন কাফেরদের পৃথক করা হবে: কিয়ামতের বিভীষিকাময় দিনে যখন কাফেরদের মোমিনদের থেকে পৃথক হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হবে, তখন মোমিনরা আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করবেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আর (কাফেরদের বলা হবে) হে অপরাধীরা, আজ তোমরা (মোমিনদের থেকে) পৃথক হয়ে যাও।’ (সুরা ইয়াসিন: ৫৯)
দুই. পুলসিরাত পারাপারের পর: মানুষের আমলনামা ওজন এবং হিসাব-নিকাশের পর আল্লাহর নির্দেশে সবাইকে ফেরেশতারা পুলসিরাত দেখিয়ে বলবেন, ‘এটা তোমাদের গন্তব্যে পৌঁছার পথ। এ পুল পেরিয়েই তোমাদের যেতে হবে।’
কিন্তু সবার জন্য পেরিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। পাপী বান্দারা সেটাকে চুল থেকেও চিকন ও হিরার চেয়েও ধারালো দেখতে পাবে। তারা ওই পুলে পা রাখামাত্রই তাদের পা কেটে নিম্নস্থ জাহান্নামে পড়ে যাবে। আর নেককারদের জন্য হবে সুপ্রশস্ত কুসুমাস্তীর্ণ পথ। তারা তাদের নেকির তারতম্য অনুযায়ী গতির ভিন্নতায় জান্নাতে পৌঁছে যাবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যে তা (অর্থাৎ জাহান্নাম) অতিক্রম করবে না। এটা তোমার প্রতিপালকের পক্ষে এক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। অতঃপর যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে, তাদের আমি নিষ্কৃতি দেব আর জালিমদের তাতে (জাহান্নামে) মুখ থুবড়ানো অবস্থায় ফেলে রাখব।’ (সুরা মারিয়াম: ৭১-৭২)
মোমিনরা যখন এই পুলসিরাত নিরাপদে পার হবে, তখন আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করবেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তারা বলবে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের থেকে সমস্ত দুঃখ দূর করেছেন। নিশ্চয়ই আমাদের প্রতিপালক অতি ক্ষমাশীল, অত্যন্ত গুণগ্রাহী।’ (সুরা ফাতির: ৩৪)
তিন. নহরে হায়াত থেকে গোসলের পর: নহরুল হায়াত হলো, জান্নাতের বিশেষ নহর বা নদ, যেখানে গোসল করানোর পর জাহান্নামে পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া মানুষগুলো আবার সজীবতা, সৌন্দর্য ফিরে পাবে। তখন তারা জান্নাতে প্রবেশের এবং আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সাক্ষাতের প্রস্তুতি নিতে থাকবে। একপর্যায়ে যখন তাদের জান্নাতে প্রবেশের নির্দেশ দেওয়া হবে, তখন তারা আল্লাহর প্রশংসা করবে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আর তারা বলবে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের এই স্থানে পৌঁছিয়েছেন। আল্লাহ আমাদের না পৌঁছালে আমরা কখনোই (এস্থানে) পৌঁছাতে পারতাম না।’ (সুরা আরাফ: ৪৩)
চার. জান্নাতে প্রবেশ করার পর: যাবতীয় বিচারকার্যের পর যখন তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করবে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তারা (অর্থাৎ জান্নাতবাসীরা) বলবে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের সঙ্গে নিজ ওয়াদা সত্যে পরিণত করেছেন এবং আমাদের (জান্নাতের) ভূমির এমন অধিকারী বানিয়েছেন যে, আমরা জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা হয় ঠিকানা বাড়াতে পারি। সুতরাং সৎকর্মশীলদের পুরস্কার কত উত্তম!’ (সুরা জুমার: ৭৪)
পাঁচ. জান্নাতে আপনজন পাওয়ার পর: জান্নাতবাসীরা জান্নাতে প্রবেশের পর—স্ত্রী, সন্তানসন্ততি সবকিছু পেয়ে যখন তাদের সঙ্গে একত্রে বসবাস করবে, তখন আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করবে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘(অপরদিকে) যারা ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদের ইমানের কারণে তাদের প্রতিপালক তাদের এমন স্থানে পৌঁছাবেন যে, প্রাচুর্যময় উদ্যানরাজিতে তাদের তলদেশ দিয়ে নহর বহমান থাকবে। তাতে (প্রবেশকালে) তাদের ধ্বনি হবে—হে আল্লাহ, সকল দোষ-ত্রুটি থেকে তুমি পবিত্র এবং যেখানে তাদের অভিবাদন হবে সালাম। আর তাদের শেষ ধ্বনি হবে এই যে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।’ (সুরা ইউনুস: ৯-১০)
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া কাশেফুল উলূম মাদ্রাসা, মধুপুর, টাঙ্গাইল
কোরআন তিলাওয়াত মোমিনের হৃদয়ের প্রশান্তি ও আত্মার খোরাক। এর প্রতিটি আয়াতে রয়েছে অসীম জ্ঞান, দিকনির্দেশনা ও রহমতের বাণী। কোরআন তিলাওয়াতের মুগ্ধতা অন্তর বিগলিত করে, মনে প্রশান্তি আনে, আত্মা আলোকিত করে। নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত মোমিন জীবনে সার্থকতা এনে দিতে পারে।
২১ ঘণ্টা আগেমানুষের প্রতি সম্মান একটি মৌলিক মানবিক গুণ, যা সমাজে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির ভিত্তি গড়ে তোলে। প্রত্যেক মানুষ তার মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, এবং একে অপরকে সম্মান করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। ধর্ম, বর্ণ, জাতি কিংবা পেশা ভেদে কাউকে ছোট করা মানবতার পরিপন্থী। সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে পারস্পরিক...
২ দিন আগেসপ্তাহের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমাবার। জুমাবারের গুরুত্ব বোঝাতে আল্লাহর নবী (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন সপ্তাহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ও আল্লাহর কাছে অধিক সম্মানিত।’ এই দিন অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ—এর অন্যতম কারণ জুমার নামাজ। জুমার নামাজ আদায় করলেই কেবল এই দিনের বরকত, ফজিলত লাভের আশা করা যায়।
২ দিন আগেএক অপূর্ব সৌন্দর্যের দেশ ইরান, যার অলিগলি থেকে গুনগুন করে ভেসে আসে ইতিহাসের প্রাচীন সুর। এখানে মিশে আছে সংস্কৃতি, ধর্ম ও জ্ঞানের এক অমলিন কোলাহল। এই ভূমির সাহসী ও বীরত্বের গল্পগুলো ইতিহাসের পাতা আলোকিত করে। রক্তবর্ণে ভেসে ওঠে সোনালি যুগের স্মৃতি।
২ দিন আগে