Ajker Patrika

কানাডার অভিবাসী বন্দিশিবিরে নিপীড়ন, আটকদের মধ্যে বিপুলসংখ্যক শিশু

কানাডার অভিবাসী বন্দিশিবিরে নিপীড়ন, আটকদের মধ্যে বিপুলসংখ্যক শিশু

কানাডায় অভিবাসী আটক নিয়ে ভয়ংকর তথ্য দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। বিশেষ করে দেশটির কুইবেক প্রদেশে অভিবাসী বন্দিশিবিরে অমানবিক আচরণের গল্প উঠে এসেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কুইবেক প্রদেশে শুরু হয়েছে হ্যাশট্যাগ ওয়েলকামটুকানাডা ক্যাম্পেইন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক অভিবাসী আটক ছিল এ প্রদেশে। এর মধ্যে শত শত অভিবাসী বন্দী ছিল প্রাদেশিক কারাগারে। সরকারি পরিসংখ্যান মতেই, গত কয়েক বছর ধরে কুইবেক প্রদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিশু অভিবাসী আটক ছিল। এদের মধ্যে অধিকাংশের বয়স ছয় বছরের কম। 

কানাডার প্রাদেশিক কারাগারগুলোতে অভিবাসীদের নিষ্ঠুরভাবে বন্দী রাখার বিরুদ্ধে ২০২১ সালের অক্টোবরে যৌথভাবে ক্যাম্পেইন শুরু করে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এরপর থেকে এ পর্যন্ত ৫ হাজারে বেশি মানুষ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া সরকারের প্রতি লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। প্রাদেশিক সরকার নিশ্চিত করেছে, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হবে এবং অভিবাসন আটক চুক্তির বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে। যদিও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। 

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এ সংক্রান্ত গবেষণায় উঠে আসা একজন ভুক্তভোগী আমিনা। আমিনা ওইরকম একটি অভিবাসী বন্দিশিবিরে ছিলেন। মাত্র সাত বছর বয়সে তিনি আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে কানাডায় যান এবং পরিবারসহ আটক হন। 

আমিনা বলেন, ‘আমার মা-বাবার হাতে হাতকড়ার দৃশ্য আমি কখনো ভুলতে পারব না। আমি দেখছিলাম আমার মায়ের হাতে হাতকড়া আর কোলে আমার দুগ্ধপোষ্য ভাই।’ 

 ‘আটক কেন্দ্রে বলা হয়েছিল, আমাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে আমাদের আলাদা করা হবে। আমার মনে আছে, আমি চিৎকার করতে থাকি আর রুম থেকে দৌড়ে বাইরে গিয়ে আমার মাকে খুঁজতে থাকি।’ 

আটক কেন্দ্রে কয়েক সপ্তাহ থাকার পর আমিনাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এখন আমিনা অভিবাসী আইনজীবী হওয়ার লক্ষ্যে পড়াশোনা করছেন। তাঁর চাওয়া, অন্য কোনো পরিবারের সঙ্গে যেন এমনটি না ঘটে। 

আমিনা যে একা এমন ভুক্তভোগী তা নন। ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের মার্চের মধ্যে কানাডায় প্রায় ৮ হাজার ৮২৫ জনকে আটক ছিলেন। 

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গবেষণায় দেখা গেছে, আটক অভিবাসীদের নিয়মিত হাতকড়া পরানো হয়, শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়। মাস কিংবা বছর পার হলেও তাঁদের মুক্তি মেলে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত