Ajker Patrika

অ্যাক্সিওসের প্রতিবেদন

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র, মিত্রদের জানিয়েছেন ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ জুন ২০২৫, ১৬: ২২
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

ট্রাম্প প্রশাসন গত রোববার মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি মিত্র দেশকে জানিয়েছে যে, তারা ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে জড়িত হওয়ার পরিকল্পনা করছে না। তবে ইরান আমেরিকানদের লক্ষ্যবস্তু করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসকে এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন বার্তা প্রাপ্ত দুটি দেশের সূত্র।

যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র আটকাতে সাহায্য করলেও, স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে—ইসরায়েল একাই ইরানের ওপর হামলা চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা হলো, যদি ইরান এর জবাবে আমেরিকানদের ওপর হামলা চালায়, তবে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর প্রায় এক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্র একই দেশগুলোকে অনুরূপ বার্তা পাঠিয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র এতে অংশ নেবে না।

উভয় ক্ষেত্রেই, যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত আশা করেছিল যে—দেশগুলো এই বার্তাটি ইরানের কাছে পৌঁছে দেবে, যাতে মার্কিন বাহিনী বা এই অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধমূলক হামলা চালানো থেকে ইরান বিরত থাকে। হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

যদিও ইরানের নেতারা ইসরায়েলের যুদ্ধ প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন এবং কয়েক সপ্তাহ ধরে যেকোনো ইসরায়েলি হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই অঞ্চলে মার্কিন ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করার হুমকি দিয়েছেন। তবে বাস্তবে এমন কোনো হামলা ঘটেনি। এই বিষয়ে তেহরানের ভাবনা সম্পর্কে সরাসরি অবগত এক আরব কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে ঠেলে দিতে পারে, ইরানিরা এখন পর্যন্ত এমন কিছু না করার ব্যাপারে খুব সতর্ক।’

ইসরায়েল ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘নির্মূল’ করার যুদ্ধে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছে। এক মার্কিন কর্মকর্তা গত শনিবার অ্যাক্সিওসকে জানিয়েছেন যে, ট্রাম্প প্রশাসন সক্রিয়ভাবে বিষয়টি বিবেচনা করছে না। মার্কিন কর্মকর্তারা আরও দাবি করেছেন, চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ইসরায়েলের কাছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনিকে হত্যার একটি অপারেশনাল সুযোগ ছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরায়েলকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, তিনি এই পদক্ষেপের বিরোধী।

এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গতকাল সোমবার এবিসি নিউজকে বলেছেন, খামেনিকে হত্যা করলে ‘যুদ্ধের অবসান ঘটবে’ এবং এটি এখনো একটি সম্ভাবনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে যোগ দিতে পারে কিনা জানতে চাইলে ট্রাম্প সোমবার কোনো জবাব দেননি। তবে, যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ও গোপনে জানান দিচ্ছে যে, তারা জড়িত হচ্ছে না। কিন্তু মার্কিন সামরিক বাহিনী এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে।

এরই মধ্যে, দক্ষিণ চীন সাগর ছেড়ে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী নিমিৎজ মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে এবং ২৮টি কৌশলগত রিফুয়েলিং বিমান গত রোববার যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে ওই অঞ্চলের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

অপরদিকে, ট্রাম্প সোমবার জি-৭ সম্মেলনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছেন যে, ইরান পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলতে চায়। ট্রাম্প বলেন, ‘তাদের এটা আগে করা উচিত ছিল। তাদের ৬০ দিন সময় ছিল এবং ৬১ তম দিনে আমি বলেছিলাম, আমাদের কোনো চুক্তি নেই। ইরান এই যুদ্ধে জিতছে না, তাদের দেরি হওয়ার আগেই অবিলম্বে কথা বলা উচিত।’

এক আরব কূটনীতিক বলেছেন, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জানিয়েছে যে—তারা তাদের প্রতিশোধ শেষ হওয়ার পর এবং ইসরায়েল হামলা বন্ধ করার পর যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে এবং পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরু করতে ইচ্ছুক।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ইরানের যুদ্ধবিরতি চাওয়ার কোনো ইঙ্গিত পাননি এবং জোর দিয়ে বলেছেন—ইসরায়েল এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতিতে আগ্রহী নয়। কারণ তারা ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ধ্বংসের লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত