Ajker Patrika

বাপ-ছেলের পুলিৎজার জয়, স্থানীয় সাংবাদিকতায় চমক

আপডেট : ১০ মে ২০২৩, ১০: ৩৪
বাপ-ছেলের পুলিৎজার জয়, স্থানীয় সাংবাদিকতায় চমক

জন আর্চিবল্ডের জীবনের সেরা মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি এসেছিল ২০১৮ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম সংবাদ প্রকাশক অ্যালাবামা মিডিয়া গ্রুপের পত্রিকায় প্রকাশিত ধারাবাহিক মন্তব্য প্রতিবেদনের জন্য পুলিৎজার জিতেছিলেন তিনি। 

গত সোমবার (৮ মে) এল আরেক স্মরণীয় মুহূর্ত। পৌর পুলিশ বাহিনীর বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য পুলিৎজার পেলেন তিনি, সঙ্গে তাঁর ছেলে রামসে আর্চিবল্ড। সহকর্মীদের একটি দলের অংশ হিসেবে আর্চিবল্ড স্থানীয় রিপোর্টিংয়ে দ্বিতীয়বার পুরস্কার জিতলেন।

ছেলের এই অর্জনে উচ্ছ্বসিত জন আর্চিবল্ড এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি বাকরুদ্ধ। এটি একটি বড় সম্মান। আপনার সন্তানের সঙ্গে এমন উদ্‌যাপন—এটি সোনালি মুহূর্ত।’ 

এএল ডটকমের চার সাংবাদিক ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর মধ্যে বাকি দুজন হলেন অনুসন্ধানী সম্পাদক অ্যাশলি রেমকাস ও শানেল স্টিফেনস। 

সোমবার অ্যালাবামা মিডিয়া গ্রুপ দুটি পুলিৎজার জিতে নিয়েছে। প্রায় ১১০ জন সাংবাদিক নিয়ে গঠিত বার্তা বিভাগের জন্য এটি একটি বিস্ময়কর কীর্তি বলেই মনে করা হচ্ছে। সংবাদপত্র প্রকাশক প্রতিষ্ঠানটি কাইল হোয়াইটমায়ার কলামের জন্য মন্তব্য প্রতিবেদন ক্যাটাগরিতেও পুরস্কার জিতেছে। কাইল হোয়াইটমায়ার একজন রাজনৈতিক কলাম লেখক। কীভাবে অ্যালাবামার কনফেডারেট ইতিহাস আজও এই অঙ্গরাজ্যকে প্রভাবিত করে, সেটি নিয়েই তিনি ধারাবাহিক কলাম লিখেছেন। 

যেখানে পাঠকেরা এখন প্রথাগত ছাপা কাগজের সংবাদপত্র পড়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছে, করপোরেট মালিকেরা সংবাদপত্র বন্ধ করে দিচ্ছেন। সেখানে খুব কমসংখ্যক সংবাদ সংস্থার স্থানীয় সরকার বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এবং ঝুঁকিপূর্ণ সাংবাদিকতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। 

পুলিৎজার জেতার পর ফেসবুকে এই ছবি শেয়ার করে জন আর্চিবল্ড লিখেছেন, তোমরা অনেক পথ পেরিয়েছ বাচ্চারাএএল ডটকম বর্তমান সময়ের অর্থনৈতিক উত্থান-পতনের মধ্যে দৃঢ়ভাবে টিকে থাকতে পেরেছে। অ্যাডভান্স লোকালের মালিকানাধীন একাধিক জাতীয় সংবাদপত্রের প্রকাশক অ্যালাবামা মিডিয়া গ্রুপ তিনটি সংবাদপত্র প্রকাশ করত: দ্য বার্মিংহাম নিউজ, মোবাইল’স প্রেস-রেজিস্টার ও দ্য হান্টসভিল টাইমস। এএল ডটকমের প্রধান সম্পাদক কেলি অ্যান স্কট গত ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা দিয়েছেন, সংস্থাটি সেই সংবাদপত্রগুলো ছাপানো বন্ধ করবে। পাঠক ও বিজ্ঞাপনদাতাদের অভ্যাস পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে সেই সব সংবাদপত্রের পাঠকদের এএল ডটকমে আসার আহ্বান জানান কেলি।

তবে গত সোমবার কেলি স্কট এক সাক্ষাৎকারে বলেন, অ্যালাবামা মিডিয়া গ্রুপে পাঁচ বছর আগের তুলনায় অনেক বেশি সাংবাদিক রয়েছে। 

কেলি স্কট বলেন, ‘আমেরিকায় স্থানীয় সাংবাদিকতা এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেই সব লোকের মাধ্যমে তৈরি হওয়া গল্প ও মন্তব্য বা আলোচনা জাতীয় সংলাপে উঠে আসছে, যাঁরা নিজেরা যেখান থেকে এসেছেন সেই সব স্থানকে ভালোবাসেন। এটি দেখতে দুর্দান্ত লাগে।’ 

রামসে আর্চিবল্ড (৩১) অ্যালাবামা মিডিয়া গ্রুপের একজন ডেটা রিপোর্টার। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে তাঁর বাবা জন এবং অনুসন্ধানী সম্পাদক অ্যাশলি রেমকাসের সঙ্গে যোগ দেন। এই অনুসন্ধানী দলের প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে, ব্রুকসাইড শহরের স্থানীয় পুলিশ বাহিনী তাদের রাজস্ব বাড়াতে আক্রমণাত্মক পুলিশিংয়ে জড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবেদনগুলো প্রকাশের পর পুলিশের প্রধান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরে রাজ্য সরকার এ নিয়ে তদন্ত শুরু করে। 

অ্যাশলি রেমকাসের অবশ্য এটি দ্বিতীয় পুলিৎজার। ২০২১ সালে বছরব্যাপী এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে তিনি পুলিশের সাহায্যকারী কুকুরের আক্রমণে সাধারণ নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য তুলে এনেছিলেন। 

রেমকাস এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তাঁর কোম্পানি সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদপত্র ছাপানো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিলেও তিনি অ্যালাবামার স্থানীয় সংবাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনো আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘ছাপা কাগজে আসছে নাকি অনলাইনে প্রকাশিত হচ্ছে, সেটি বিষয় নয়, বরং সাংবাদিকতাই প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি না যে পাঠকের কাছে সংবাদ পৌঁছানোর পদ্ধতি আমাদের সেই কাজটি করা থেকে বিরত রাখছে।’ 

বার্মিংহামে নিজেদের বাড়িতে গত সোমবার পুলিৎজার জয় উদ্‌যাপন করেছেন রামসে আর্চিবল্ড। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ব্রুকসাইডের অনুসন্ধানটি প্রাথমিকভাবে শহরে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎকার নেওয়া, সহকর্মীদের সঙ্গে ফোন কল এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে করা হয়েছিল। কারণ তখনো (করোনার কারণে) অফিসে ফেরার আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। 

জন আর্চিবল্ড বলেন, তিনি তাঁর ছেলের সাংবাদিকতায় আসা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন। কারণ কয়েক দশক ধরে এই শিল্প অর্থনৈতিকভাবে ঝুঁকির মুখে রয়েছে। জন বলেন, কিন্তু তিনি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানতেন যে ছেলের পথ আটকে দাঁড়ানোর চেষ্টা করাটা বিফল হবে! 

‘আমি কখনই তাকে নিরুৎসাহিত করব না, কারণ আমার নিজের জীবন থেকে আমি জানি যে একমাত্র এই ব্যাপারটাই গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি আপনার কাজ থেকে কেমন অনুভূতি পাচ্ছেন।’ যোগ করেন জন আর্চিবল্ড। 

বিভিন্ন ক্ষেত্রে এবার পুলিৎজার জিতল যারা: 

জনসেবায় অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) 
ব্রেকিং নিউজে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস
অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল
ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদনে দ্য আটলান্টিকের কেইটলিন ডিকারসন
স্থানীয় সাংবাদিকতায় এএল ডটকম এবং মিসিসিপি টু ডে
জাতীয় সাংবাদিকতায় ওয়াশিংটন পোস্টের ক্যারোলিন কিচনার
আন্তর্জাতিক সাংবাদিকতায় নিউইয়র্ক টাইমস
ফিচার লেখায় ওয়াশিংটন পোস্টের এলি স্যাসলো
মন্তব্য প্রতিবেদনে এএল ডটকমের কাইল হোয়াইটমায়ার
সমালোচনায় নিউইয়র্ক ম্যাগাজিনের আন্দ্রেয়া লং চু
সম্পাদকীয়তে মায়ামি হেরাল্ডের পাঁচ সাংবাদিক
সচিত্র প্রতিবেদন এবং কমেন্টারিতে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রদায়ক মোনা শালাবি
ব্রেকিং নিউজ ফটোগ্রাফিতে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের আলোকচিত্রীর দল
ফিচার ফটোগ্রাফিতে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের ক্রিস্টিনা হাউস
অডিও রিপোর্টিংয়ে গিমলেট মিডিয়ার কর্মীরা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাওবাদীদের ‘মস্তিষ্ক’ খ্যাত গণেশ উইকে এনকাউন্টারে নিহত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গণেশ উইকেকে বলা হতো মাওবাদীদের ‘মস্তিষ্ক’। ছবি: সংগৃহীত
গণেশ উইকেকে বলা হতো মাওবাদীদের ‘মস্তিষ্ক’। ছবি: সংগৃহীত

ওডিশার কান্ধামাল জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ভারতের অন্যতম শীর্ষ মাওবাদী নেতা গণেশ উইকে (৬৯) নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোরে এই অভিযানে গণেশসহ মোট চারজন মাওবাদী নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ওডিশা পুলিশ। নিহত গণেশ উইকে মাওবাদীদের ‘সেন্ট্রাল কমিটি’র (সিসি) সদস্য এবং ওডিশার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান ছিলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি ওডিশায় মাওবাদী বিরোধী অভিযানের সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল (এএনও) সঞ্জীব পান্ডা জানান, কান্ধামাল জেলার চাকাপাদা থানা এলাকায় রাম্ভা বন রেঞ্জের কাছে এই এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে গত দুই দিনে কান্ধামাল জেলায় মোট ছয়জন মাওবাদী নিহত হলেন।

গণেশ উইকেকে বলা হতো মাওবাদীদের ‘মস্তিষ্ক’। গণেশ উইকে ‘রূপা’, ‘রাজেশ তিওয়ারি’ এবং ‘পাক্কা হনুমন্তু’সহ একাধিক ছদ্মনামে পরিচিত ছিলেন। গণেশ উইকেকে ধরতে তাঁর মাথার দাম ঘোষণা করা হয়েছিল ১ কোটি ১০ লাখ রুপি।

তেলেঙ্গানার নালগোন্ডা জেলার বাসিন্দা গণেশ চার দশক ধরে মাওবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি দণ্ডকারণ্য স্পেশাল জোনাল কমিটিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

২০১৩ সালের ছত্তিশগড়ের কুখ্যাত ‘ঝিরম ঘাঁটি’ গণহত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন এই গণেশ উইকে। সেখানে শীর্ষ কংগ্রেস নেতাসহ ৩২ জন নিহত হয়েছিলেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার রাতে বেলঘর থানা এলাকার গুম্মা জঙ্গলে প্রথম সংঘর্ষে দুজন মাওবাদী নিহত হন। এরপর আজ সকালে চাকাপাদা এলাকায় দ্বিতীয় দফায় অভিযান চালায় ওডিশা পুলিশের এসওজি, সিআরপিএফ এবং বিএসএফের যৌথ বাহিনী। আজকের অভিযানে দুই নারী এবং দুই পুরুষসহ মোট চারজন মাওবাদী নিহত হয়েছেন। নিহতদের পরনে ইউনিফর্ম ছিল।

এনকাউন্টার স্থল থেকে দুটি ইনসাস রাইফেল এবং একটি পয়েন্ট থ্রি জিরো থ্রি রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই সফলতাকে ‘নকশালমুক্ত ভারত’ গড়ার পথে একটি মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, ‘২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে দেশ থেকে মাওবাদী সন্ত্রাস নির্মূল করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। গণেশ উইকের নিধন ওডিশাকে মাওবাদী মুক্ত করার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।’

উল্লেখ্য, এ অভিযানের ঠিক দুই দিন আগে মালকানগিরি জেলায় ২২ জন মাওবাদী ওডিশা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। শীর্ষ নেতৃত্বের এ পতন এই অঞ্চলে মাওবাদী সংগঠনের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে বলে মনে করছেন সমর বিশেষজ্ঞরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে ৩৫০০ কিমি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

নিজেদের পারমাণবিক সক্ষমতার প্রদর্শন হিসেবে পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে একটি মধ্যপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত। কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রটি গত মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে ভারতের পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন আইএনএস আরিঘাত থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। বিশাখাপত্তনম উপকূলের কাছে এই পরীক্ষা চালানো হয়।

এনডিটিভি জানিয়েছে, সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের নৌভিত্তিক পারমাণবিক সক্ষমতাকে বেশ শক্তিশালী করেছে।

কে-৪ সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট ভারতীয় নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এর মাধ্যমে স্থল, আকাশ ও সমুদ্র—এই তিন মাধ্যম থেকে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম দেশগুলোর তালিকায় জায়গা করে নেয় ভারত।

অগ্নি-৩ স্থলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে তৈরি কে-৪ বর্তমানে ভারতের সর্বাধিক পাল্লার সমুদ্রভিত্তিক কৌশলগত অস্ত্র। স্থল সংস্করণটিকে সমুদ্র থেকে উৎক্ষেপণের উপযোগী করে পরিবর্তন করা হয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে সাবমেরিনের উৎক্ষেপণ সাইলো থেকে বেরিয়ে পানির ভেতর ভেসে উঠে সমুদ্রপৃষ্ঠে পৌঁছানোর পর রকেট ইঞ্জিন চালু করে আকাশে ছুটে যাওয়ার সক্ষমতা।

এই ক্ষেপণাস্ত্র ২ দশমিক ৫ টন ওজনের পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম এবং ভারতের অরিহন্ত শ্রেণির সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা যায়।

কে-৪ হলো ভারতের পারমাণবিক ত্রিমাত্রিক প্রতিরোধব্যবস্থার সবচেয়ে নীরব অংশ। কারণ, অরিহন্ত শ্রেণির ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিনগুলো দীর্ঘ সময় ধরে অচেনা সমুদ্রাঞ্চলে সম্পূর্ণ নীরবে প্রতিরোধ টহল পরিচালনার জন্য তৈরি।

কে-সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর নামের ‘কে’ অক্ষরটি ভারতের সাবেক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির রূপকার এ পি জে আবদুল কালামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাখা হয়। ভারতের সমন্বিত ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চীনে এক সন্তান নীতির প্রবক্তার মৃত্যু, শ্রদ্ধার চেয়ে সমালোচনাই বেশি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৬
চীনের পরিবার পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক প্রধান পেং পেইইউন (মাঝে)। ছবি: সংগৃহীত
চীনের পরিবার পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক প্রধান পেং পেইইউন (মাঝে)। ছবি: সংগৃহীত

চীনে বিতর্কিত এক সন্তান নীতির প্রবক্তা পেং পেইইউনের মৃত্যুতে শ্রদ্ধা নিবেদনের বদলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নীতিটি ঘিরে তীব্র সমালোচনা দেখা গেছে। গত রোববার বেইজিংয়ে ৯৬তম জন্মদিনের ঠিক আগমুহূর্তে পেংয়ের মৃত্যুতে চীনাদের প্রতিক্রিয়া অনেকটা নেতিবাচক।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে পেং পেইইউনকে নারী ও শিশুবিষয়ক কাজে ‘একজন অসাধারণ নেতা’ হিসেবে প্রশংসা করা হয়েছে। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত চীনের পরিবার পরিকল্পনা কমিশনের প্রধান ছিলেন তিনি।

তবে চীনের জনপ্রিয় মাইক্রো ব্লগিং ওয়েবসাইট ওয়েইবোতে একজন লিখেছেন, ‘ভূমিষ্ঠ হতে না পারা শিশুরা ওপারে নগ্ন দেহে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।’

এনডিটিভি জানিয়েছে, ১৯৮০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চীনে দম্পতিদের কেবল একটি সন্তান নেওয়ার যে বাধ্যবাধকতা ছিল, তা কার্যকর করতে স্থানীয় কর্মকর্তারা অনেক ক্ষেত্রে নারীদের গর্ভপাত ও বন্ধ্যাকরণ করতে বাধ্য করতেন।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, এমন আশঙ্কায় বেইজিং এই এক সন্তান নীতি চালু করেছিল।

এর ফলে দীর্ঘ সময় বিশ্বের সর্বোচ্চ জনসংখ্যার দেশ থাকার পর চীনের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার শ্লথ হয়ে পড়ে এবং গত বছর টানা তৃতীয়বারের মতো জনসংখ্যা পড়তির দিকে ছিল।

ওয়েইবোতে একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘যদি এই নীতি অন্তত ১০ বছর আগে শেষ করা হতো, তাহলে চীনের জনসংখ্যা আজ এভাবে ধসে পড়ত না!’

গত বছর চীনের জনসংখ্যা কমে ১৩৯ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সামনের বছরগুলোতে এই নিম্নগতি আরও ত্বরান্বিত হবে।

জনসংখ্যার নীতিনির্ধারক হিসেবে পেং জোর দিয়েছিলেন গ্রামীণ এলাকায়। একসময় চীনের গ্রামগুলোতে বড় পরিবার গড়ে তোলা দম্পতিদের প্রধান লক্ষ্য ছিল, যাতে বৃদ্ধ বয়সে সন্তানেরা তাঁদের দেখাশোনা করতে পারে। এ ছাড়া বংশ রক্ষার জন্য ছেলেসন্তানের প্রতি ঝোঁক বেশি থাকায় মেয়েশিশুদের অবহেলা, এমনকি কন্যা ভ্রূণ হত্যার মতো ঘটনা প্রায়ই ঘটত।

ওয়েইবোতে একজন লিখেছেন, ‘ওই শিশুগুলো যদি জন্ম নিত, তাহলে আজ তাদের বয়স প্রায় ৪০ হতো—জীবনের সেরা সময়।’

২০১০-এর দশকে এসে পেং প্রকাশ্যে তাঁর অবস্থান বদলান এবং বলেন, এক সন্তান নীতি শিথিল করা উচিত। বর্তমানে বেইজিং কমে যাওয়া জন্মহার বাড়াতে শিশু পরিচর্যা ভর্তুকি, দীর্ঘ মাতৃত্বকালীন ছুটি ও করছাড়ের মতো উদ্যোগ নিচ্ছে।

জনসংখ্যা হ্রাস ও বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি চীনের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। দেশটিতে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে গেলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কম্বোডিয়ায় বিষ্ণুমূর্তি গুঁড়িয়ে দিল থাই সেনারা, ভারতের তীব্র নিন্দা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৫
একটি ব্যাকহো লোডার দিয়ে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ছবি: স্ক্রিনশট
একটি ব্যাকহো লোডার দিয়ে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ছবি: স্ক্রিনশট

কম্বোডিয়ায় হিন্দু দেবতার মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে চলমান সীমান্ত সংঘাতের জেরে থাই সেনাবাহিনী এটি ধ্বংস করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই ঘটনাকে ‘অসম্মানজনক’ বলে অভিহিত করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্ত বিরোধপূর্ণ এলাকায় সম্প্রতি নির্মিত একটি হিন্দু দেবতার মূর্তি ধ্বংসের খবর আমাদের নজরে এসেছে। এই অঞ্চলের মানুষের কাছে হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতারা অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র এবং এটি আমাদের অভিন্ন সভ্যতার ঐতিহ্যের অংশ। এই ধরনের কাজ সারা বিশ্বের অনুসারীদের মনে আঘাত দেয়, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি ব্যাকহো লোডার দিয়ে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কম্বোডিয়ার প্রেহ বিহারের মুখপাত্র লিম চানপানহা জানান, ২০১৪ সালে নির্মিত মূর্তিটি থাইল্যান্ড সীমান্ত থেকে মাত্র ১০০ মিটার ভেতরে কম্বোডিয়ার সীমানায় ছিল। তিনি এই ঘটনাকে প্রাচীন ও পবিত্র স্থাপত্যের ওপর আঘাত হিসেবে নিন্দা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত জুলাই মাস থেকে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলেও চলতি মাসে পুনরায় সংঘাত শুরু হয়েছে। নয়াদিল্লি মনে করে, কূটনৈতিক সংলাপের মাধ্যমেই জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্পদের বিনাশ রোধ করা সম্ভব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত