অনলাইন ডেস্ক
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নতুন মোড় নিল যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি অংশগ্রহণের পর। গতকাল রোববার ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর এখন ইরান-ইসরায়েল সংঘাত যেন পরিণত হয়েছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতে। যুক্তরাষ্ট্রের এই সরাসরি আক্রমণের বিপরীতে ইরান কী জবাব দেবে সেটা দেখার অপেক্ষায় বিশ্ব। তবে এই বৈরিতা নতুন নয়। ১৯৫০-এর দশক থেকে বিশ্ব দেখে এসেছে এই দুই দেশের দ্বন্দ্ব। ইরানে মার্কিন হস্তক্ষেপ, মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর কার্যকলাপ ও পারমাণবিক কর্মসূচি—ধাপে ধাপে দুই দেশের মধ্যে বিবাদের উৎস যেন বেড়েই চলেছে। আর এখন তা পৌঁছেছে সর্বোচ্চ পর্যায়ে।
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব-প্রতিপত্তি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লব। এ বিপ্লবের পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রতিপক্ষে পরিণত হয়েছিল ইরান। এই বিপ্লবের মাধ্যমে পতন হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির সরকারের। বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি। তবে এই বিপ্লবের আছে এক লম্বা ইতিহাস। একদিনের পশ্চিমা প্রভাবে ইরান উত্তাল হয়ে ওঠেনি। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গর্জন উঠেছিল দীর্ঘ এক সময়ের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে।
যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সাত দশকের দ্বৈরথ—
১৯৫৩: মার্কিন-সমর্থিত অভ্যুত্থান ও শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির ক্ষমতায় ফেরা
১৯০০-এর দশকের প্রথম দিকে ইরানে তেল আবিষ্কার হয়। এরপর থেকে ব্রিটিশ-নিয়ন্ত্রিত অ্যাংলো-ইরানিয়ান অয়েল কোম্পানি (বর্তমানে বিপি) নামে যৌথ উদ্যোগের কোম্পানির মাধ্যমে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি তেল উত্তোলনে সিংহভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ করত। ১৯৫১ সালের নির্বাচনের পর দেশটিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক কোম্পানিটি জাতীয়করণের উদ্যোগ নেন। এই উদ্যোগ ক্ষুব্ধ হয় ব্রিটিশেরা। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাহায্য নিয়ে ইরানে অভ্যুত্থান ঘটানো হয় আর ক্ষমতায় ফেরেন পূর্বে ক্ষমতাচ্যুত শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি। যিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিয়ভাজন। আর এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের সম্পর্কের টানাপোড়েন।
১৯৫৭: পারমাণবিক কর্মসূচি ‘অ্যাটমস ফর পিস’
পারমাণবিক শক্তিধর ইরান গড়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা দেখেছিলেন শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি। তাঁর এই স্বপ্নে সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা মিত্ররা। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ারের ‘অ্যাটমস ফর পিস’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি বেসামরিক পারমাণবিক চুক্তি হয়। এর এক দশক পর যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে একটি পারমাণবিক চুল্লি ও জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়াম সরবরাহ করে। এই পারমাণবিক সহযোগিতাই পরবর্তী সময়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে বর্তমান উত্তেজনার ভিত্তি গড়ে দেয়।
১৯৭৯: ইসলামি বিপ্লব
তেহরান-ওয়াশিংটনের সুসম্পর্কের বাতাস বইলেও ইরানের জনগণের মনে বাসা বাঁধছিল পাহলভির স্বৈরশাসন ও পশ্চিমা প্রভাবের জাঁতাকলে পিষ্ট হওয়ার ক্ষোভ। এই ক্ষোভ ১৯৭৮ সালের শেষ দিকে এসে পরিণত হলো বিপ্লবী আন্দোলনে। এই আন্দোলনে সমাপ্তি হলো ১৯৭৯ সালের জানুয়ারিতে, পাহলভিকে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করার মাধ্যমে। বিপ্লবে সফর ইরানে ফিরলেন নির্বাসিত ইসলামি নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি। দেশে ফিরে এসে কাঁধে তুলে নিলেন নতুন ইসলামি প্রজাতন্ত্রের শাসনভার। নতুন রূপ নিল যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্কের বৈরিতা।
১৯৮০: যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন
দেশ ছেড়ে পালানো শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভিকে ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেওয়া হলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ইরান। ইরানি ছাত্ররা তেহরানের মার্কিন দূতাবাসে ঢুকে ৫২ জন মার্কিন নাগরিককে টানা ৪৪৪ দিন জিম্মি করে রাখে। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটন ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। দেশটির ওপর আরোপ করে নিষেধাজ্ঞা। অন্যদিকে নির্বাসিত অবস্থায়ই মৃত্যু হয় পাহলভির।
১৯৮০–৮৮: ইরাক-ইরান যুদ্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক প্রীতি
সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে ইরাক আক্রমণ চালায় ইরানে। খোমেনির ইসলামি মতাদর্শ প্রতিহত করতে আগ্রহী সাদ্দাম এ সময় পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন। আর এই সমর্থন ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটায়। আট বছরব্যাপী এই যুদ্ধে প্রাণ হারায় ইরান-ইরাকের হাজার হাজার মানুষ।
১৯৮৪: ইরানকে ‘সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক’ ঘোষণা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ইরানকে ‘রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাসবাদে পৃষ্ঠপোষক’ ঘোষণা করেন। লেবাননে ইসরায়েলের হামলা এবং এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়ার পরিণতিতে এই আখ্যা পায় ইরান। বৈরুতের একটি সামরিক ঘাঁটিতে এক হামলায় ২৪১ জন মার্কিন সেনা নিহত হন। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, হিজবুল্লাহ এই হামলা চালিয়েছিল, আর তাদের সমর্থন দিয়েছিল ইরান।
তবে পরবর্তীতে রিগ্যান প্রশাসন হিজবুল্লাহর হাতে আটক মার্কিন জিম্মিদের মুক্ত করতে গোপনে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এই গোপন যোগাযোগ প্রকাশ হয়ে গেলে এই ‘ইরান-কন্ট্রা অ্যাফেয়ার’-এর কারণে ব্যাপক বিতর্কের মুখে পড়েন প্রেসিডেন্ট রিগ্যান।
১৯৮৮: ইরান এয়ার ফ্লাইট ভূপাতিত করে যুক্তরাষ্ট্র
ইরাকের সঙ্গে তখন তুমুল যুদ্ধ চলছিল ইরানের। এমন উত্তেজনার মধ্যেই পারস্য উপসাগরে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজগুলোর মধ্যে একাধিক সরাসরি সংঘর্ষ ঘটে। ১৯৮৮ সালের ৮ জুলাই একটি মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ ইরানের জলসীমায় প্রবেশ করে দুবাইগামী বেসামরিক ইরান এয়ারের ফ্লাইট (আইআর ৬৫৫) লক্ষ্য করে গুলি চালায়। বিমানে থাকা ২৯০ জন যাত্রীর সবাই মারা যান।
এ ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক ভুল’ বলে দাবি করে নিহতদের পরিবারকে ৬১.৮ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিলেও আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখপ্রকাশ বা দায় স্বীকার করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৯৫: কঠোর নিষেধাজ্ঞার খড়্গ
১৯৯৫ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর একাধিক নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে মার্কিন কোম্পানিগুলোর ইরানের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য নিষিদ্ধ করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। একই সময় মার্কিন কংগ্রেস একটি আইন পাস করে, যাতে বলা হয় কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান যদি ইরানের জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করে বা দেশটিকে উন্নত অস্ত্র বিক্রি করে, তাহলে তাদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং হিজবুল্লাহ, হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের মতো গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থনের অভিযোগ তুলে এসব নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
২০০২: ৯/১১-পরবর্তী উত্তেজনা
২০০১ সালে ৯/১১ হামলার পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ তাঁর স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে ইরাক ও উত্তর কোরিয়ার পাশাপাশি ইরানকেও ‘অশুভ অক্ষ’ (Axis of Evil)-এর অংশ বলে উল্লেখ করেন। অথচ সেই সময় আফগানিস্তানে তালেবান ও আল-কায়েদার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপনে আলোচনা চালাচ্ছিল ইরান। বুশের এ মন্তব্যের পর এই আলোচনা ভেস্তে যায়। ২০০২ সালের শেষে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা ইরানে উচ্চ মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম খুঁজে পান, যার ফলে ইরানের ওপর আরও বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
২০১৩: পারমাণবিক চুক্তি জেসিপিওএ
২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরানের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা শুরু করেন। যার পরিণতিতে ২০১৫ সালে ইরান জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে সই করে। এই চুক্তির আওতায় নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিনিময়ে পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করতে রাজি হয় ইরান। চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন অংশ নেয়।
২০১৮: পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসা
প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে জেসিপিওএ চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আবারও ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। ট্রাম্প সরে যাওয়ার পর ইরানও চুক্তির প্রতিশ্রুতি থেকে দূরে সরে আসে। চুক্তিতে আরোপিত সীমা অতিক্রম করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করে দেশটি।
২০২০: কাসেম সোলাইমানির মৃত্যু
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) এলিট কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি। এর এক বছর আগে ট্রাম্প প্রশাসন কুদস ফোর্সকে একটি ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।
২০২৫: ট্রাম্পের চিঠি ও আলোচনার প্রস্তাব
পাঁচ বছর পর চলতি বছরের মার্চ মাসে এই সম্পর্কের পালে লাগে নতুন হাওয়া। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি পাঠান। চিঠিতে নতুন একটি পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। আর এ নিয়ে আলোচনার জন্য ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেন। তবে খামেনির কাছে প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যাত হয়। খামেনি বলেন, আলোচনার নামে ইরানের ওপর শর্ত চাপিয়ে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপরও ওমানের মধ্যস্থতায় ওমান ও ইতালিতে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়।
কয়েক দফা বৈঠকের পর ট্রাম্প দাবি করেন, চুক্তির খুব কাছাকাছি আছেন তাঁরা। ইরানও আশাবাদ প্রকাশ করে তবে তারা এটাও জানায়, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ার অধিকার থেকে একচুলও পিছিয়ে না আসার ইচ্ছে নেই তাদের। যা নিয়ে আলোচনা চলতে থাকলেও ষষ্ঠ দফা বৈঠকের আগের দিন ইরানজুড়ে হামলা চালায় ইসরায়েল।
২০২৫: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা
ইসরায়েলের এই হামলার জবাবে ইরানও ইসরায়েলে হামলা চালায়। এরপর গত রোববার ‘নিরাপত্তা হুমকি’ ও ‘ইসরায়েলের রক্ষা’র যুক্তি দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। আবারও সরাসরি ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের আগুনে ইরান পুড়বে না কি ইরান থেকে যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটবে—সেটি দেখার অপেক্ষায় বিশ্ব।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নতুন মোড় নিল যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি অংশগ্রহণের পর। গতকাল রোববার ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর এখন ইরান-ইসরায়েল সংঘাত যেন পরিণত হয়েছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতে। যুক্তরাষ্ট্রের এই সরাসরি আক্রমণের বিপরীতে ইরান কী জবাব দেবে সেটা দেখার অপেক্ষায় বিশ্ব। তবে এই বৈরিতা নতুন নয়। ১৯৫০-এর দশক থেকে বিশ্ব দেখে এসেছে এই দুই দেশের দ্বন্দ্ব। ইরানে মার্কিন হস্তক্ষেপ, মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর কার্যকলাপ ও পারমাণবিক কর্মসূচি—ধাপে ধাপে দুই দেশের মধ্যে বিবাদের উৎস যেন বেড়েই চলেছে। আর এখন তা পৌঁছেছে সর্বোচ্চ পর্যায়ে।
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব-প্রতিপত্তি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লব। এ বিপ্লবের পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রতিপক্ষে পরিণত হয়েছিল ইরান। এই বিপ্লবের মাধ্যমে পতন হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির সরকারের। বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি। তবে এই বিপ্লবের আছে এক লম্বা ইতিহাস। একদিনের পশ্চিমা প্রভাবে ইরান উত্তাল হয়ে ওঠেনি। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গর্জন উঠেছিল দীর্ঘ এক সময়ের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে।
যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সাত দশকের দ্বৈরথ—
১৯৫৩: মার্কিন-সমর্থিত অভ্যুত্থান ও শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির ক্ষমতায় ফেরা
১৯০০-এর দশকের প্রথম দিকে ইরানে তেল আবিষ্কার হয়। এরপর থেকে ব্রিটিশ-নিয়ন্ত্রিত অ্যাংলো-ইরানিয়ান অয়েল কোম্পানি (বর্তমানে বিপি) নামে যৌথ উদ্যোগের কোম্পানির মাধ্যমে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি তেল উত্তোলনে সিংহভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ করত। ১৯৫১ সালের নির্বাচনের পর দেশটিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক কোম্পানিটি জাতীয়করণের উদ্যোগ নেন। এই উদ্যোগ ক্ষুব্ধ হয় ব্রিটিশেরা। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাহায্য নিয়ে ইরানে অভ্যুত্থান ঘটানো হয় আর ক্ষমতায় ফেরেন পূর্বে ক্ষমতাচ্যুত শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি। যিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিয়ভাজন। আর এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের সম্পর্কের টানাপোড়েন।
১৯৫৭: পারমাণবিক কর্মসূচি ‘অ্যাটমস ফর পিস’
পারমাণবিক শক্তিধর ইরান গড়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা দেখেছিলেন শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি। তাঁর এই স্বপ্নে সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা মিত্ররা। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ারের ‘অ্যাটমস ফর পিস’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি বেসামরিক পারমাণবিক চুক্তি হয়। এর এক দশক পর যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে একটি পারমাণবিক চুল্লি ও জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়াম সরবরাহ করে। এই পারমাণবিক সহযোগিতাই পরবর্তী সময়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে বর্তমান উত্তেজনার ভিত্তি গড়ে দেয়।
১৯৭৯: ইসলামি বিপ্লব
তেহরান-ওয়াশিংটনের সুসম্পর্কের বাতাস বইলেও ইরানের জনগণের মনে বাসা বাঁধছিল পাহলভির স্বৈরশাসন ও পশ্চিমা প্রভাবের জাঁতাকলে পিষ্ট হওয়ার ক্ষোভ। এই ক্ষোভ ১৯৭৮ সালের শেষ দিকে এসে পরিণত হলো বিপ্লবী আন্দোলনে। এই আন্দোলনে সমাপ্তি হলো ১৯৭৯ সালের জানুয়ারিতে, পাহলভিকে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করার মাধ্যমে। বিপ্লবে সফর ইরানে ফিরলেন নির্বাসিত ইসলামি নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি। দেশে ফিরে এসে কাঁধে তুলে নিলেন নতুন ইসলামি প্রজাতন্ত্রের শাসনভার। নতুন রূপ নিল যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্কের বৈরিতা।
১৯৮০: যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন
দেশ ছেড়ে পালানো শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভিকে ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেওয়া হলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ইরান। ইরানি ছাত্ররা তেহরানের মার্কিন দূতাবাসে ঢুকে ৫২ জন মার্কিন নাগরিককে টানা ৪৪৪ দিন জিম্মি করে রাখে। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটন ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। দেশটির ওপর আরোপ করে নিষেধাজ্ঞা। অন্যদিকে নির্বাসিত অবস্থায়ই মৃত্যু হয় পাহলভির।
১৯৮০–৮৮: ইরাক-ইরান যুদ্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক প্রীতি
সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে ইরাক আক্রমণ চালায় ইরানে। খোমেনির ইসলামি মতাদর্শ প্রতিহত করতে আগ্রহী সাদ্দাম এ সময় পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন। আর এই সমর্থন ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটায়। আট বছরব্যাপী এই যুদ্ধে প্রাণ হারায় ইরান-ইরাকের হাজার হাজার মানুষ।
১৯৮৪: ইরানকে ‘সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক’ ঘোষণা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ইরানকে ‘রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাসবাদে পৃষ্ঠপোষক’ ঘোষণা করেন। লেবাননে ইসরায়েলের হামলা এবং এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়ার পরিণতিতে এই আখ্যা পায় ইরান। বৈরুতের একটি সামরিক ঘাঁটিতে এক হামলায় ২৪১ জন মার্কিন সেনা নিহত হন। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, হিজবুল্লাহ এই হামলা চালিয়েছিল, আর তাদের সমর্থন দিয়েছিল ইরান।
তবে পরবর্তীতে রিগ্যান প্রশাসন হিজবুল্লাহর হাতে আটক মার্কিন জিম্মিদের মুক্ত করতে গোপনে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এই গোপন যোগাযোগ প্রকাশ হয়ে গেলে এই ‘ইরান-কন্ট্রা অ্যাফেয়ার’-এর কারণে ব্যাপক বিতর্কের মুখে পড়েন প্রেসিডেন্ট রিগ্যান।
১৯৮৮: ইরান এয়ার ফ্লাইট ভূপাতিত করে যুক্তরাষ্ট্র
ইরাকের সঙ্গে তখন তুমুল যুদ্ধ চলছিল ইরানের। এমন উত্তেজনার মধ্যেই পারস্য উপসাগরে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজগুলোর মধ্যে একাধিক সরাসরি সংঘর্ষ ঘটে। ১৯৮৮ সালের ৮ জুলাই একটি মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ ইরানের জলসীমায় প্রবেশ করে দুবাইগামী বেসামরিক ইরান এয়ারের ফ্লাইট (আইআর ৬৫৫) লক্ষ্য করে গুলি চালায়। বিমানে থাকা ২৯০ জন যাত্রীর সবাই মারা যান।
এ ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক ভুল’ বলে দাবি করে নিহতদের পরিবারকে ৬১.৮ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিলেও আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখপ্রকাশ বা দায় স্বীকার করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৯৫: কঠোর নিষেধাজ্ঞার খড়্গ
১৯৯৫ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর একাধিক নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে মার্কিন কোম্পানিগুলোর ইরানের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য নিষিদ্ধ করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। একই সময় মার্কিন কংগ্রেস একটি আইন পাস করে, যাতে বলা হয় কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান যদি ইরানের জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করে বা দেশটিকে উন্নত অস্ত্র বিক্রি করে, তাহলে তাদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং হিজবুল্লাহ, হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের মতো গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থনের অভিযোগ তুলে এসব নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
২০০২: ৯/১১-পরবর্তী উত্তেজনা
২০০১ সালে ৯/১১ হামলার পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ তাঁর স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে ইরাক ও উত্তর কোরিয়ার পাশাপাশি ইরানকেও ‘অশুভ অক্ষ’ (Axis of Evil)-এর অংশ বলে উল্লেখ করেন। অথচ সেই সময় আফগানিস্তানে তালেবান ও আল-কায়েদার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপনে আলোচনা চালাচ্ছিল ইরান। বুশের এ মন্তব্যের পর এই আলোচনা ভেস্তে যায়। ২০০২ সালের শেষে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা ইরানে উচ্চ মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম খুঁজে পান, যার ফলে ইরানের ওপর আরও বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
২০১৩: পারমাণবিক চুক্তি জেসিপিওএ
২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরানের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা শুরু করেন। যার পরিণতিতে ২০১৫ সালে ইরান জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে সই করে। এই চুক্তির আওতায় নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিনিময়ে পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করতে রাজি হয় ইরান। চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন অংশ নেয়।
২০১৮: পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসা
প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে জেসিপিওএ চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আবারও ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। ট্রাম্প সরে যাওয়ার পর ইরানও চুক্তির প্রতিশ্রুতি থেকে দূরে সরে আসে। চুক্তিতে আরোপিত সীমা অতিক্রম করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করে দেশটি।
২০২০: কাসেম সোলাইমানির মৃত্যু
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) এলিট কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি। এর এক বছর আগে ট্রাম্প প্রশাসন কুদস ফোর্সকে একটি ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।
২০২৫: ট্রাম্পের চিঠি ও আলোচনার প্রস্তাব
পাঁচ বছর পর চলতি বছরের মার্চ মাসে এই সম্পর্কের পালে লাগে নতুন হাওয়া। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি পাঠান। চিঠিতে নতুন একটি পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। আর এ নিয়ে আলোচনার জন্য ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেন। তবে খামেনির কাছে প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যাত হয়। খামেনি বলেন, আলোচনার নামে ইরানের ওপর শর্ত চাপিয়ে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপরও ওমানের মধ্যস্থতায় ওমান ও ইতালিতে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়।
কয়েক দফা বৈঠকের পর ট্রাম্প দাবি করেন, চুক্তির খুব কাছাকাছি আছেন তাঁরা। ইরানও আশাবাদ প্রকাশ করে তবে তারা এটাও জানায়, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ার অধিকার থেকে একচুলও পিছিয়ে না আসার ইচ্ছে নেই তাদের। যা নিয়ে আলোচনা চলতে থাকলেও ষষ্ঠ দফা বৈঠকের আগের দিন ইরানজুড়ে হামলা চালায় ইসরায়েল।
২০২৫: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা
ইসরায়েলের এই হামলার জবাবে ইরানও ইসরায়েলে হামলা চালায়। এরপর গত রোববার ‘নিরাপত্তা হুমকি’ ও ‘ইসরায়েলের রক্ষা’র যুক্তি দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। আবারও সরাসরি ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের আগুনে ইরান পুড়বে না কি ইরান থেকে যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটবে—সেটি দেখার অপেক্ষায় বিশ্ব।
মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে রাশিয়ার কাছ থেকে সরাসরি সহায়তা চেয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে চিঠি পাঠিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়েছে, এই চিঠি পৌঁছে দিতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি আজ সোমবার মস্কো গেছেন...
১ মিনিট আগেইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে রাশিয়ার চালানো ‘ভয়াবহ’ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। আজ সোমবার ভোররাতে এই হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের সরকারি সূত্র।
১ ঘণ্টা আগেবিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানে শাসন পরিবর্তন হলেও এর মানে এই নয় যে নতুন সরকার যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইসরায়েলের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ হবে। বরং আরও কঠোরপন্থী নেতার উত্থান হতে পারে, যাঁরা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের আঘাতের প্রতিক্রিয়ায় নিজেদের নিরাপদ রাখতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে।
১ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পাল্টা জবাবে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ছে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে। হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান—এই যুদ্ধের শেষ তাদের হাতে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে চলছে টানটান বৈঠক, আর ইরানি পত্রিকায় ঘৃণা ঝরে পড়ছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।
২ ঘণ্টা আগে