Ajker Patrika

মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া চান না মিজোরা

ডয়চে ভেলে
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫: ৪৭
মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া চান না মিজোরা

মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ও বর্ডার পাস বন্ধের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে সায় নেই মিজোদের। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যে পা রাখলেই বোঝা যায়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষিত এ দুই সিদ্ধান্ত নিয়ে মিজোরাম কতটা আলোড়িত। 

মিজোরামে ইয়ং মিজোরাম অ্যাসোসিয়েশন বা ওয়াইএমএ সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠন। গোষ্ঠীটির সভাপতি লালমাছুয়ানা জানিয়েছেন, ‘নাগাল্যান্ডও এই সিদ্ধান্তের বিরোধী। মিজোরামের বিধায়কেরা এর বিরোধিতা করেছেন, মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী বিরোধিতা করেছেন। নাগাল্যান্ডের সঙ্গে আমরা বৈঠকে বসেছি। ভারত সরকারকে কোনোভাবেই এই কাজ করতে দেওয়া হবে না।’ 

ভারত-বাংলাদেশ ও ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে এ ধরনের বেড়া দেওয়া হয়নি। বরং এই সীমান্ত সাধারণ মানুষের জন্য খোলা। বর্ডার পাস থাকলে মিয়ানমার সীমান্তের ৪০ কিলোমিটার ও ভারতীয় সীমান্তের ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ঢুকতে পারে দুই দেশের কুকি, জো, চিন গোষ্ঠীর মানুষ। 

এর একটা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট আছে। স্থানীয়দের বক্তব্য, জো, কুকি ও চিন একই জনজাতির মানুষ। ব্রিটিশ আমলে তারা একসঙ্গে বসবাস করত। দেশভাগের পর একটা দল সাবেক পূর্ব পাকিস্তান ও বর্তমান বাংলাদেশে থেকে যায়, একটা দল ভারতে বসবাস করে এবং একটা দল মিয়ানমারে থাকে। এদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক আছে, বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে এবং নিয়মিত যাতায়াত আছে। 

কিন্তু মণিপুরের সাম্প্রতিক ঘটনার পর পরিস্থিতি বদলে গেছে। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী ও মেতাইরা দাবি জানিয়েছে, মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে প্রচুর সশস্ত্র মানুষ মণিপুরে ঢুকছে এবং তারা মেতাইদের আক্রমণ করছে। তারপর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ও বর্ডার পাস বন্ধ করার কথা জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। 

মিজোরামের সীমান্ত এলাকা চম্পাইয়ের ব্লক রিসোর্স সেন্টারের কো-অর্ডিনেটর লালরিনমুয়ানা বলেন, ‘আমরা (কুকি, জো, চিন) সবাই ভাই। বুঝতে হবে, এটা আমাদের গ্রেটার ল্যান্ড। আমরা এখানে বেড়া বসাতে দেব না। এত অভিবাসী এখানে আছেন, তাদের তাহলে কী হবে?’ তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘মণিপুর চাইলে সেখানে কাঁটাতারের বেড়া লাগাক। আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু আমরা এখানে কাঁটাতারের বেড়া লাগাতে বা বর্ডার পাস বন্ধ করতে দেব না।’ 

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার আপত্তি অগ্রাহ্য করে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করলে কী করবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে লালরিনমুয়ানার বক্তব্য, ‘এখন সে ব্যাপারে কিছু বলব না। সরকার সেই সিদ্ধান্ত নিলে তখন দেখা যাবে।’ 

মিজোরাম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের চিন রাজ্য। সেখানে সবচেয়ে প্রভাবশালী দুই সংগঠন—পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) ও চিন ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ)। তারা আবার চিন ন্যাশনাল ফোর্সের অধীনে। এই ফোর্সের সদস্যরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সাবেক সেনা। তারাই বিদ্রোহী দুই সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তারাই পুরো এলাকার দখল নিয়েছে। সীমান্তে এখন চিন ডিফেন্স ফোর্সের আউটপোস্ট থাকলেও মিয়ানমারের কোনো সেনা এখানে নেই। বিদ্রোহীরাও সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার বিরোধী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত