Ajker Patrika

মণিপুরে জাতিগত সহিংসতায় বাবা ছেলেসহ নিহত ৬

আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৩, ১৮: ৪৭
মণিপুরে জাতিগত সহিংসতায় বাবা ছেলেসহ নিহত ৬

ভারতের মণিপুরে নতুন করে জাতিগত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার পর্যন্ত এক দিনে বাবা, ছেলেসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ভারতের এনডিটিভি জানিয়েছে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষ্ণুপুর-চুরাচাঁদপুরের সীমানা অঞ্চলে মেইতি ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে আজ সকাল থেকে দিনব্যাপী এই সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন।

সহিংসতার পর এই অঞ্চলে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে ভারতের সেনাবাহিনী, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে পূর্ব ও পশ্চিম ইম্ফলে কারফিউ অব্যাহত থাকবে।  

গতকাল শনিবার ছিল মণিপুরে সংঘর্ষের সবচেয়ে ভয়ংকর দিন। বিষ্ণুপুর-চুরাচাঁদপুরে সারা দিন ধরে মর্টার শেল ছোড়া হয় এবং গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলিও হয়। 

গতকাল শেষ রাতের দিকে এক হামলার ঘটনায় বিষ্ণুপুরের কোয়াক্তার অঞ্চলে নিরস্ত্র বাবা, ছেলেসহ গ্রামের তিন বাসিন্দা মারা যান। গত ৩ মে মনিপুরে সহিংসতা শুরু হয়। এরপর গ্রামবাসী পালিয়ে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেন। চলমান সহিংসতার মধ্যে তাঁরা সেখানেই ছিলেন। গ্রামটি নির্জন হয়ে পড়েছিল। গত শুক্রবার তাঁরা গ্রাম পাহারা দিতে ফিরে আসেন। 

নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা জানান, দুজনকে গুলি করার আগে তাঁদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। এর পরপরই পাল্টা হামলা শুরু হয়। কোয়াক্তার দুটি পার্শ্ববর্তী গ্রাম, ফুজাং এবং সোংডোতে মর্টার শেল ও গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়। এর ফলে দুজন নিহত হয় এবং বেশ কিছু লোক আহত হয়।

এদিকে বিষ্ণুপুরের তেরখাংসাংবিতে একযোগে হামলায় একজন নিহত ও একজন পুলিশ কমান্ডোসহ তিনজন বন্দুকের গুলিতে আহত হন বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।

ইম্ফলের পূর্বাঞ্চলের জেলা সানসাবি ও থামনাপোকপি গ্রামে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের গুলি করার খবরও পাওয়া গেছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা ইম্ফল পশ্চিম জেলার ল্যাংগোলে বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে ইম্ফলেও। 

গতকাল মণিপুরের বিজেপি বিধায়ক রাজকুমার ইমো সিং (মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের জামাতা) কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘নিরাপত্তাব্যবস্থার ত্রুটি’র অভিযোগ তুলেন। বিষ্ণুপুর জেলায় যে হামলায় তিনজন নিহত হয়েছিল, সেখানে ‘দায়িত্বে অবহেলার’ জন্য আধা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

মণিপুর পুলিশ বলছে, রাজ্যের ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রান্তিক এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। বিভিন্ন জেলায় নতুন করে সহিংসতা শুরুর পরে সাতটি অবৈধ বাংকার ধ্বংস করা হয়েছে। 

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এ রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসী মেইতিরা সম্প্রতি তফসিলি উপজাতিভুক্ত হওয়ার দাবি তুলেছে। এই নিয়ে সংখ্যালঘু কুকিদের সঙ্গে তাদের জাতিগত দাঙ্গা শুরু হয়।

তিন দিন ধরে মণিপুরে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার বিষ্ণুপুরে পুলিশের অন্তত দুটি নিরাপত্তা ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে স্বয়ংক্রিয় বন্দুকসহ অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করে নিয়ে যায় উচ্ছৃঙ্খল জনতা। ইম্ফলে ওয়েস্টে আরেক ঘটনায় গোলাগুলিতে এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন।

পুলিশ জানিয়েছে, মণিপুরের পাহাড়ি ও উপত্যকার জেলাগুলোতে মোট ১২৯টি চেকপয়েন্ট বসানো হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রায় ১ হাজার ৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত