Ajker Patrika

দেউলিয়া হওয়ার শঙ্কায় মালদ্বীপের সরকারি বন্ড বিক্রির হিড়িক

দেউলিয়া হওয়ার শঙ্কায় মালদ্বীপের সরকারি বন্ড বিক্রির হিড়িক

দেউলিয়া হয়ে পড়ার আশঙ্কায় মালদ্বীপের সরকারি বন্ড বিক্রির হিড়িক পড়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্রটির ডলারের রিজার্ভ কমে যাওয়ায় সুকুক বন্ডের রেকর্ড দরপতন হয়েছে। অক্টোবর মাসের কুপন বা সুদ পাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে বিনিয়োগকারীরা বন্ড বিক্রি করে দিচ্ছেন।

২০২৬ সাল মেয়াদী এই ইসলামী বন্ডের প্রতি ডলারে ৭০ সেন্টের নিচে নেমে গেছে, এটি রেকর্ড দরপতন। এই মাসে দুই অংকের লোকসানের ফলে ব্লুমবার্গের সার্বভৌম বন্ড সূচকে সবচেয়ে বাজে পারফরমারের তালিকায় নেমেছে সুকুক বন্ড।

ড্যান্সকে ব্যাংকের পোর্টফোলিও ম্যানেজার সোরেন মোরচ ব্লুমবার্গকে বলেন, ‘আমরা গ্রীষ্মের শুরুতে আমাদের বেশিরভাগ বন্ড বিক্রি করে দিয়েছি। কারণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগত কমছে। তারপর থেকে পরিস্থিতি আসলেই অনেক বেশি খারাপ। এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল মুসলিম দেশগুলি মালদ্বীপকে সুকুক বন্ডে দেউলিয়া হতে দেবে কিনা।’ 

এর আগে কোনো সরকারই কখনো এ ধরনের বন্ডে দেউলিয়া হয়নি। 

দ্বীপপুঞ্জের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক ‘ব্যাংক অব মালদ্বীপ’ গ্রাহকদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের উপর সীমা বেঁধে দেওয়ায় নতুন করে চাপে পড়ে সুকুক বন্ড। ফিচ রেটিংও দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়ার কথা তুলে ধরে জুনে দ্বিতীয়বারের মতো মালদ্বীপের ঋণমান নামিয়ে দিয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত বন্ডহোল্ডারদেরকে ভীত করে তুলেছে। 

ব্লুমবার্গের তথ্য অনুসারে, সুকুক বন্ডের সুদ বাবদ ২০২৬ সালে মালদ্বীপকে প্রায় ৫০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে। আপাতত আগামী ৮ অক্টোবর পরবর্তী কিস্তির সুদ পরিশোধ করতে পারে কিনা সেদিকে সকলের দৃষ্টি থাকবে।

এমঅ্যান্ডজির জ্যেষ্ঠ বন্ড কৌশলবিদ পূরভি হরলালকা বলেন, ‘মালদ্বীপের সুকুক বন্ডে দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়ার কারণ দেশটিকে প্রচুর বিদেশি ঋণ শোধ করতে হবে। কিন্তু এর জন্য তাদের পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেই। শেষ মুহূর্তে চীন, জিসিসি বা উপসাগরীয় দেশ ও ভারতের মতো বন্ধুরাষ্ট্র সরকার থেকে বৈদেশিক মুদ্রা না এলে অক্টোবরের সুদ পরিশোধ করতে না পারার সম্ভাবনাই জোরালো।’

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ জুন পর্যন্ত মালদ্বীপের রিজার্ভ প্রায় অর্থেক কমে ৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলারে নেমেছে, যা একবছর আগে ছিল ৭০ কোটি ডলার ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলারে নেমেছে। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ৪০ কোটি ডলারের মুদ্রা বিনিময় আলোচনা চলছে বলে গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। 

এবছর পর্যটন থেকে রাজস্ব আয় বাড়লেও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানির উপর অতিনির্ভরতা ও ডলারের বিপরীতে দেশী মুদ্রা নির্ধারিত দরের কারণে রিজার্ভ কমেছে। গত ২৯ অগাস্ট মালদ্বীপের রেটিং সিসি-তে নামিয়ে দিয়েছে ফিচ। ঋণমান সংস্থাটি বলেছে, ‘দেশটির বৈদেশিক দায় ও তারল্য পরিস্থিতির তীব্র চাপ মালদ্বীপের দেউলিয়া হওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলেছে।’

গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চীনপন্থী পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর ‘দেশে ভারতের উপস্থিতি কমানোর’ প্রচার চালিয়েছেন। বিনিয়োগকারীদের কেউ কেউ এটিকে বিপৎসঙ্কেত হিসেবে নিয়েছেন। 

বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান কোলি ফ্রন্টিয়ার মার্কেটসের পোর্টফোলিও ম্যানেজার ম্যাকিয়েজ ওজনিকা বলেন, ‘ইন্ডিয়া আউট বা ভারত তাড়াও প্রচারণার পরে মালদ্বীপ যে এখন ভারতের কাছ থেকে ছাড় পেতে চাচ্ছে, সেটা একটা রেড ফ্ল্যাগ বা সতর্কবার্তা। ডলারের সরবরাহ সংকটের খবরে বন্ড বিক্রির হিড়িক পড়েছে। চীন, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যকে কেন্দ্র করে সামনে আকর্ষণীয় ঘটনা ঘটবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত