Ajker Patrika

উত্তাল শ্রীলঙ্কায় ‘লড়াই’ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা বিক্ষোভকারীদের 

আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২২, ১৫: ২১
উত্তাল শ্রীলঙ্কায় ‘লড়াই’ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা বিক্ষোভকারীদের 

বিক্ষোভে উত্তাল শ্রীলঙ্কা। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপক্ষে দেশ ছেড়ে পালালেও শান্ত হচ্ছে না বিক্ষোভকারীরা। কলম্বোজুড়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে। ওদিকে ‘লড়াই’ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বুধবার সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসে। তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে এগোতে থাকে। একপর্যায়ে জোর করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় চত্বরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। এ সময় কেউ কেউ কার্যালয়ের ফটক ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। ফটক ধরে টানাটানিও শুরু হয়।

কর্তব্যরত সেনাসদস্যদের লক্ষ্য করে একপর্যায়ে ঢিল ছুড়তে থাকে বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ শুরুতে কোনো ভূমিকা পালন করেনি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চারপাশে বিক্ষোভকারীদের জমায়েত ক্রমেই বাড়ছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে পুলিশ একসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে শুরু করে। এতে বিক্ষোভকারীদের কিছুটা ছত্রভঙ্গ করা গেলেও পরিস্থিতির আহামরি কোনো উন্নতি হয়নি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ এখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতেই আছে। দেশটির সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ও কারফিউ জারি করার পরও বিক্ষোভকারীরা পিছু হটবেন না বলে জানিয়েছেন। এমনই একজন ৩১ বছর বয়সী ভিরাগা পেরেরা। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘আমাদের দেশ চূড়ান্ত মাত্রার অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি এখন। যে ধরনের আচরণ আমাদের সঙ্গে করা হচ্ছে, বিশেষ করে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সশস্ত্র হেলিকপ্টার পাঠিয়ে, তাতে এটি স্পষ্ট যে শাসকশ্রেণির আচরণ আসলে কেমন। আমরা এসব সহ্য করব না। আমরা আসতেই থাকব, লড়াই চালাতেই থাকব ততক্ষণ, যতক্ষণ না আমরা নিশ্চয়তা পাচ্ছি যে এ দেশে আমাদের এবং আমাদের সন্তানদের কোনো ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা আছে।’

সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসে।অব্যাহত বিক্ষোভের মুখে গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। এখন তিনি মালদ্বীপে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে দেশটিতে জরুরি অবস্থা ও কারফিউ জারি করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।

কিছুদিন ধরেই ধীরে ধীরে ফের উত্তপ্ত হচ্ছিল শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক পরিস্থিতি। প্রথমে কারফিউ জারি করলেও পরে গতকাল শুক্রবার তা প্রত্যাহার করে নেয় শ্রীলঙ্কার পুলিশ বিভাগ। এর পর থেকেই পুরো দেশে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। গত শনিবার থেকে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো। সারা দেশ থেকে বিক্ষোভকারীরা এসে জড়ো হয় শহরটিতে। সরকারবিরোধী র‍্যালি ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের একপর্যায়ে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়ে তারা। চলমান অচলাবস্থার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া বাসভবন ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন। ওই সময় প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনেও তাণ্ডব চালায় বিক্ষোভকারীরা।

১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর সবচেয়ে নাজুক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। দেশটির অর্থনৈতিক সংকট এতটাই তীব্র যে, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য, জ্বালানি তেল এমনকি ওষুধ কেনার প্রয়োজনীয় অর্থ নেই সেখানে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে কিছুদিন আগে জানিয়েছিলেন, তাঁদের অর্থনীতি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশটির নেতৃত্ব পর্যায়ে ব্যাপক ভুল ব্যবস্থাপনা এবং দেশটির জনগণের কিঞ্চিৎ দুর্ভাগ্য মিলিয়েই এই বিপর্যয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিঁদুরে নিহত প্রায় দেড় শ সেনার তালিকা প্রকাশ করে মুছে ফেলল পাকিস্তানি টিভি

ঢাবিতে পাঁচ প্যানেলে ভোটের যুদ্ধ

দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এনসিপির মাহিন সরকারকে বহিষ্কার

যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকারকে বহিষ্কারের কারণ জানাল এনসিপি

আদালতে আসামির স্বীকারোক্তি—১০ লাখ টাকা লোন দেয়নি বলে ব্যাংকে চুরির সিদ্ধান্ত নিই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত