Ajker Patrika

যেখানে প্রাণভয়ে হার মানে রক্তের সম্পর্কও

রয়টার্স, লন্ডন
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ৫৬
যেখানে প্রাণভয়ে হার মানে রক্তের সম্পর্কও

গত তিন মাস প্রায় প্রতিদিন মিয়ানমারে গড়ে ছয় থেকে সাতটি পরিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদপত্রগুলোতে ছেলেমেয়ে, ভাতিজি, ভাগনে ও নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যারা প্রকাশ্যে ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তার বিরোধিতা করেছে।

এক বছর আগে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে দেশটির সেনাবাহিনী ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার পর গত নভেম্বর থেকে এ ধরনের বিজ্ঞপ্তিগুলো আসতে শুরু করে। কারণ, অভ্যুত্থানের পর বিরোধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত এবং প্রতিবাদকারীদের পাশাপাশি যারা তাদের আশ্রয় দিচ্ছে, তাদেরও গ্রেপ্তারের ঘোষণা দেয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। আর এ ঘোষণার পর থেকেই মূলত সংবাদপত্রে সন্তানদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছেন অভিভাবকেরা।

মিয়ানমারে সন্তানদের সঙ্গে অভিভাবকদের সম্পর্কচ্ছেদের অন্তত ৫৭০টি বিজ্ঞপ্তি পর্যালোচনা করেছে রয়টার্স। লিন লিন বো বো নামে দেশটির সাবেক এক গাড়ি বিক্রয়কর্মীও তাঁদের একজন। গত নভেম্বরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদপত্র দ্য মিররে প্রকাশ করা বিজ্ঞপ্তিতে লিনের মা-বাবা বলেন, ‘আমরা ঘোষণা করছি যে, আমরা লিন লিন বো বোকে প্রত্যাখ্যান করেছি। কারণ, সে কখনো তার বাবা-মায়ের কথা শোনেনি।’

বর্তমানে থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছের একটি শহরে বাস করা লিন জানান, তাঁর মা তাঁকে বলেছিলেন যে, সেনারা তাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে।  পরে সংবাদপত্রে ত্যাজ্য হওয়ার বিজ্ঞপ্তি পড়ে কেঁদেছিলেন বলেও জানান তিনি। মানবাধিকার সংস্থা ‘বার্মা ক্যাম্পেইন ইউকে’র (বিসিইউ) অ্যাডভোকেসি অফিসার ওয়াই নিন উইন্ত থনের মতে, আশির দশকের শেষের দিকে এবং ২০০৭ সালের বিশৃঙ্খলার সময়ও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বিরোধীদের পরিবারকে নিশানা বানিয়েছিল। গত ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর সেই কৌশলই ব্যবহার করছে তারা। তবে এবার সংবাদপত্রে সম্পর্কচ্ছেদের বিজ্ঞপ্তি বেশি দেখা যাচ্ছে বলে জানান উইন্ত থন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত