Ajker Patrika

গাদ্দাফিবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতাকে গুলি করে হত্যা, লিবিয়াজুড়ে সহিংসতা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৩ মে ২০২৫, ১৪: ৫২
ত্রিপোলির রাস্তায় সশস্ত্র সংঘর্ষের পর পড়ে আছে গুলির খোসা। ছবি: আনাদোলু
ত্রিপোলির রাস্তায় সশস্ত্র সংঘর্ষের পর পড়ে আছে গুলির খোসা। ছবি: আনাদোলু

লিবিয়ার সাবেক শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে উৎখাতের আন্দোলনে যেসব সশস্ত্র গোষ্ঠী অংশ নিয়েছিল সেগুলোর মধ্যে অন্যতম সাপোর্ট ফোর্স অ্যাপারেটাস বা এসএসএ। গতকাল সোমবার গোষ্ঠীটির শীর্ষ নেতা আব্দুল গনি কিকলি নিহত হন। তাঁর মৃত্যুর পর রাজধানী ত্রিপোলিসহ লিবিয়াজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা শুরু হয়েছে।

ত্রিপোলির তিন বাসিন্দার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির কেন্দ্রস্থল ও অন্যান্য অংশে সশস্ত্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা।

জানা গেছে, এসএসএফ নেতা আব্দুল গনি কিকলি নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এই সংঘর্ষ শুরু হয়। তিনি গানিওয়া নামেও পরিচিত। তিনি ত্রিপোলির শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অন্যতম সাপোর্ট ফোর্স অ্যাপারেটাসের কমান্ডার ছিলেন। ত্রিপোলির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা আবু সেলিম তাদের ঘাঁটি।

এসএসএ লিবিয়ার প্রেসিডেনশিয়াল কাউন্সিলের অধীনে কাজ করে। এই কাউন্সিল ২০২১ সালে জাতিসংঘ সমর্থিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আব্দুল হামিদ দিবেইবাহের নেতৃত্বে গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল ইউনিটির (জিএনইউ) সঙ্গে ক্ষমতায় আসে। জিএনইউ-এর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে নাগরিকদের ‘নিজ নিরাপত্তার জন্য’ ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এই আহ্বানের পর ত্রিপোলির অনেক রাস্তায় চালকদের দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে ও হর্ন বাজাতে দেখা যায়। জিএনইউ-এর মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম আজ মঙ্গলবার সকালে জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আবু সেলিম এলাকার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমি ভারী গুলির শব্দ শুনেছি এবং আকাশে লাল আলো দেখেছি।’ অন্য দুই বাসিন্দা জানান, আবু সেলিম এবং সালাহউদ্দিনে এসএসএ-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতেও গুলির শব্দ প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। ত্রিপোলি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্সি ফেসবুকে ঘোষণা দিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল অনুষদ, বিভাগ ও অফিসের ক্লাস, পরীক্ষা এবং প্রশাসনিক কাজ স্থগিত থাকবে।

জাতিসংঘ মিশন লিবিয়ার সকল পক্ষের প্রতি ‘অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি ফিরিয়ে আনার’ আহ্বান জানিয়েছে। তারা বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছে। জাতিসংঘ মিশন বলেছে, ‘বেসামরিক নাগরিক এবং বেসামরিক স্থাপনায় হামলা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।’

ভূমধ্যসাগরের অন্যতম প্রধান তেল উৎপাদক দেশ লিবিয়ায় ২০১১ সালে ন্যাটো সমর্থিত অভ্যুত্থানের পর থেকে খুব কমই সময়ই স্থিতিশীল ছিল। ২০১৪ সালে দেশটি পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল হিসেবে বিবদমান গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ২০২০ সালে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে বড় ধরনের লড়াই বন্ধ হলেও রাজনৈতিক সংকট নিরসনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। প্রধান পক্ষগুলো মাঝে মাঝে সশস্ত্র সংঘর্ষেও যুক্ত হচ্ছে এবং লিবিয়ার উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত