Ajker Patrika

দেশে প্রতি হাজারে ১১ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশে প্রতি হাজারে ১১ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত

বিশ্বের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের অন্যান্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও বাড়ছে স্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যা। দেশে প্রতি এক হাজার জনে ১১ দশমিক ৪ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ময়মনসিংহ ও খুলনা অঞ্চলে (১৪ জন)। সবচেয়ে কম রাজশাহীতে।

স্ট্রোকে আক্রান্ত ৪৮ শতাংশ রোগীই উচ্চ রক্তচাপের, ১৯ শতাংশের দেহে অতিরিক্ত মেদ ও ১৭ শতাংশ মানসিক চাপের শিকার। এছাড়া অতিরিক্ত ডায়াবেটিসের কারণেও বাড়ছে স্ট্রোক। 

আজ বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক কর্মশালায় এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢামেকের নিউরোসায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম। 

অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, 'নানা কারণে স্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে উচ্চ রক্তচাপের কারণে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে স্ট্রোক হয়, যা অন্যতম প্রধান কারণ। বিশেষ করে অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।' 

অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, 'প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো। স্ট্রোক সম্পূর্ণ প্রতিরোধ ও নিরাময়যোগ্য। স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে ফাস্ট ফুড ও ধূমপান ত্যাগ করা, ব্লাড পেশার আর সুগার থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, লক্ষণ দেখার সঙ্গে সঙ্গে অবহেলা না করে হাসপাতালে নেওয়া ও সর্বোপরি জনসচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ।' 

এই অধ্যাপক বলেন, 'স্ট্রোকের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ঢামেক অনেক অগ্রসর হয়েছে। এই রোগের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হচ্ছে। ১৯৮০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ইউরোপ ও আমেরিকাতে স্ট্রোকের ৪২ শতাংশ রোগী কমেছে। কিন্তু অনুন্নত ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এই রোগ শতভাগ বেড়েছে। 

ঢামেকের নিউরোসায়েন্স বিভাগের আরেক সহযোগী অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, 'প্রতিদিন অপারেশন লাগবে এমন ১০ জনের বেশি স্ট্রোকের রোগী আসে এই হাসপাতালে। তবে দুই-তিনজনের সার্জারি করা সম্ভব হয়। আমরা চাই ১০ জনকেই সময়মতো সার্জারি করাতে। কিন্তু সেই সুবিধা এই মুহূর্তে নেই। স্ট্রোক রোগীদের আইসিইউ ও এসডিইউ অনেক বেশি প্রয়োজন। তবে ঢামেকে এখনো বসানো সম্ভব হয়নি। এটা দ্রুত সময়ের মধ্যে বসানোর ব্যবস্থা নিলে দুর্ভোগ কমবে।' 

নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আহমেদ হোসাইন চৌধুরী বলেন, 'রোগীর সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিশ্চিতে নিউরোলজি বিভাগের একটি আইসিইউ ইউনিট খুলতে হবে। তাহলে অনেক রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে। এ জন্য সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।' 

স্ট্রোকের লক্ষণ মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া, চোখে ঘোর দেখা, চেহারা পরিবর্তন হওয়া, বাহু অবশ হওয়া, কথা বলার সময় জড়তা চলে আসা ইত্যাদি। এসব লক্ষণ দেখা দিলে সঠিক সময়ে (৩ থেকে ৪ ঘণ্টার) মধ্যে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। 

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সবশেষ তথ্যমতে, স্ট্রোকে মৃত্যু বিশ্বে দ্বিতীয়। আর বাংলাদেশে তৃতীয়। বিশ্বে প্রতি বছর দেড় কোটি মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ মারা যায়, সমমান পরিমাণ অক্ষম ও সুস্থ হয়। 

ঢামেকের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক রাজিউল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হকসহ অনেকে।       

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালদূষণকারী কারখানা পেল পরিবেশবান্ধব পুরস্কার

ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভারতের সংসদীয় কমিটির দীর্ঘ বৈঠক

ইস্পাহানে বাংকার বাস্টার মারেনি যুক্তরাষ্ট্র, অক্ষত ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম

বাবুই পাখির কান্না কেউ শুনল না, কেটে ফেলা হলো তালগাছটি

গোষ্ঠীস্বার্থে বহু মানুষের স্বপ্ন নষ্ট করেছে এই প্ল্যাটফর্ম: দায়িত্ব ছেড়ে উমামা ফাতেমার পোস্ট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত