কমিউনিটি ক্লিনিক
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের ‘কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা’ (সিএইচসিপি) বেতন পাচ্ছেন না আট মাস ধরে। পরিবার নিয়ে তাঁরা দুঃসহ আর্থিক অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, স্বাস্থ্য খাতের পাঁচ বছর মেয়াদি অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) চালু না থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধের অভাবও দেখা দিয়েছে কোথাও কোথাও।
‘স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’ নামে এই ওপি গত বছরের জুনে শেষ হলেও নতুন পর্ব শুরু হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটে রাজস্ব খাত থেকে সিএইচসিপিদের বেতন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ১৪ হাজারের বেশি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এখন অধীর আগ্রহে তারই পথ চেয়ে আছেন।
দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা এবং টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচি পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। গত বছরের জুনে শেষ হয় ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’। ওই বছরের জুলাই মাসেই পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকার পঞ্চম এইচপিএনএসপি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময় তা অনুমোদন করেনি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সিএইচসিপিদের সংগঠন বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছে, ওপি চালু না থাকায় ১৪ হাজারের কিছু বেশি সিএইচসিপি গত জুনের পর আর বেতন পাননি।
তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। ১৯৯৮ সালে গ্রামাঞ্চলের প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা করে সরকার। দেশজুড়ে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মিত হয়েছে। এখানে গর্ভকালীন ও প্রসূতিসেবা, শিশুদের যাবতীয় রোগের চিকিৎসা, প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই), পুষ্টিবিষয়ক শিক্ষাদান ও পরামর্শ এবং পুষ্টিকর অতিরিক্ত খাদ্য সরবরাহসহ বেশ কিছু সেবা দেওয়া হয়।
দেশজুড়ে কষ্টের দিনলিপি
আট মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন সিএইচসিপিরা। অনেকে জড়িয়ে পড়েছেন ঋণে।
জয়পুরহাট জেলার ১১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা গত বছরের জুলাই মাস থেকে বেতন না পাওয়ায় কষ্টে দিন যাপন করছেন। সদর উপজেলার চকবরকত ইউনিয়নের আরজি-জগদীশপুরের সিএইচসিপি আসাদুজ্জামান বলেন, ‘কম বেতনের চাকরিতে এমনিতেই দিন চলে টানাটানি করে। তার ওপরে সোনালী ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা স্যালারি ঋণ নেওয়া আছে। কিছু ধার-দেনাও হয়েছে। খুব কষ্টে আছি।’
ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের কেশুরতা ক্লিনিকের মনিরা বেগম বলেন, ‘বেতন নাই। কিস্তি দিতে পারছি না। প্রতিদিন অন্যের কথা শুনতে হয়।’
বাগেরহাটে ৭ মাস ধরে বেতন পান না ২১১ ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা। চরম অর্থকষ্টে ভুগছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া এসব কর্মী। কোথাও কোথাও নিয়মিত ওষুধের সরবরাহও বন্ধ রয়েছে।
কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মো. বাশার শেখ বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে ক্লিনিকে গেলে ঠিকঠাক সেবা পাই না। ওষুধ চাইলে বলে নাই। আবার শুনছি সিএইচসিপিরা ঠিকমতো বেতন পান না। তাই কাজে কম আসছেন তাঁরা।’
মেহেরপুরের গাংনীর হোগলবাড়িয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মো. সাজেদুর রহমান বলেন, ‘কী কষ্টে যে আছি, তা বলে বোঝানো সম্ভব না। আমি অসুস্থ, স্ত্রী অসুস্থ...ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া। সব মিলিয়ে অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে বসবাস করছি।’
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলা ক্লিনিকের শামীম হোসেন বলেন, ‘ওপি না থাকার কারণে বেতন হচ্ছে না। আমরা পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।’
সিএইচসিপিদের জাতীয় সংগঠনের সভাপতি ও ঢাকার কেরানীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের অগ্রখোলা কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি, সংশোধিত বাজেট অনুমোদনের পর রাজস্ব খাত থেকে আমাদের বেতন হবে। আর জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বেতন দেওয়া হবে ওপি থেকে। এসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঠিক কবে নাগাদ বেতন হাতে পাব, বুঝতে পারছি না।’
এ ছাড়া জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার ২১টি ক্লিনিক; কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ৩৫টি ক্লিনিক; দিনাজপুরের বিরামপুর, ফুলবাড়ী ও খানসামা উপজেলার ৭১টি ক্লিনিক; ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার ১৬টি ক্লিনিক, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের ২০টি ক্লিনিক এবং মেহেরপুরের গাংনীর ৩৫টি ক্লিনিকের কর্মীদের বেতন না পাওয়ার কথা সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানিয়েছেন আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিরা।
ওষুধের ঘাটতির আশঙ্কা
কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধের ব্যয় আসে পাঁচ বছর মেয়াদি ওপি থেকে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ক্লিনিকে সর্বশেষ ওষুধ সরবরাহ করা হয় গত ২ অক্টোবর। সাধারণত এক দফার সরবরাহে চার থেকে পাঁচ মাস চলে। সংকটের আশঙ্কায় কেন্দ্র থেকে ওষুধ বিতরণে সতর্ক হতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক সিএইচসিপি। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ঠান্ডা-জ্বর ও কৃমির ওষুধ এবং আয়রন, ফলিক অ্যাসিডসহ বিভিন্ন ধরনের ২২টি ওষুধ বিনা মূল্যে দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ওষুধের সংকট দেখা দিতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ওষুধ ওপি থেকে নাকি রাজস্ব খাত থেকে কেনা হবে, তা এখন বিবেচনাধীন। কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টের কাছে অর্থ বিভাগ ওষুধের বাজেট চেয়েছে। সংকটের শঙ্কায় আমরা ক্লিনিকগুলোকে যৌক্তিকভাবে ওষুধ খরচ করতে বলেছি।’
ওপি ছেড়ে সমাধানের পথে
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে চলমান ওপি প্রক্রিয়া থেকে বের হওয়ার কথা ভাবছে সরকারের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। ১৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে বর্তমান সেক্টর কর্মসূচি পদ্ধতির ওপি থেকে বের হওয়ার কৌশল নির্ধারণের জন্য সভা হয়। এতে পুরো কর্মসূচিকেই রাজস্ব খাতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই (সম্ভাব্য তারিখ) সংশোধিত বাজেট অনুমোদনের পর রাজস্ব খাত থেকে সিএইচসিপিদের বেতন দিতে আরও তিন মাসের মতো সময় লাগবে। পঞ্চবার্ষিক এই কর্মসূচির বিকল্প ভাবার জন্য পরিকল্পনা কমিশন থেকেও তাগিদ দেওয়া হয়েছিল।
সিবিএইচসির লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ওপিতে যেসব কর্মসূচি বা দপ্তর কর্তৃপক্ষ কাজ করে, তাদের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে ওপি থেকে বের হওয়া এবং এর কার্যক্রম ভবিষ্যতে কীভাবে পরিচালনা করা যায়, তার রোডম্যাপ (পথনকশা) থাকতে হবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের অভিমত
বর্তমান ওপি পদ্ধতি থেকে বের হওয়ার জন্য কমপক্ষে দুই বছর আগে পরিকল্পনা থাকার প্রয়োজন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা খাতের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি এই এইচপিএনএসপি নামের ওপি। এটা প্রায় ৩০ বছর ধরে চলছে। জনস্বাস্থ্যের বড় কাজগুলো এর মাধ্যমেই হয়। পরিবর্তন করতে চাইলে ওপি চলমান অবস্থায় দু-তিন বছর আগেই এ থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার ছিল।’
প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন আজকের পত্রিকার বাগেরহাট, জয়পুরহাট ও কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ), গাংনী (মেহেরপুর), জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা), ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম), আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) এবং দিনাজপুরের বিরামপুর, ফুলবাড়ী ও খানসামা প্রতিনিধি।
আরও খবর পড়ুন:

গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের ‘কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা’ (সিএইচসিপি) বেতন পাচ্ছেন না আট মাস ধরে। পরিবার নিয়ে তাঁরা দুঃসহ আর্থিক অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, স্বাস্থ্য খাতের পাঁচ বছর মেয়াদি অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) চালু না থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধের অভাবও দেখা দিয়েছে কোথাও কোথাও।
‘স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’ নামে এই ওপি গত বছরের জুনে শেষ হলেও নতুন পর্ব শুরু হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটে রাজস্ব খাত থেকে সিএইচসিপিদের বেতন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ১৪ হাজারের বেশি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এখন অধীর আগ্রহে তারই পথ চেয়ে আছেন।
দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা এবং টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচি পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। গত বছরের জুনে শেষ হয় ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’। ওই বছরের জুলাই মাসেই পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকার পঞ্চম এইচপিএনএসপি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময় তা অনুমোদন করেনি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সিএইচসিপিদের সংগঠন বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছে, ওপি চালু না থাকায় ১৪ হাজারের কিছু বেশি সিএইচসিপি গত জুনের পর আর বেতন পাননি।
তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। ১৯৯৮ সালে গ্রামাঞ্চলের প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা করে সরকার। দেশজুড়ে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মিত হয়েছে। এখানে গর্ভকালীন ও প্রসূতিসেবা, শিশুদের যাবতীয় রোগের চিকিৎসা, প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই), পুষ্টিবিষয়ক শিক্ষাদান ও পরামর্শ এবং পুষ্টিকর অতিরিক্ত খাদ্য সরবরাহসহ বেশ কিছু সেবা দেওয়া হয়।
দেশজুড়ে কষ্টের দিনলিপি
আট মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন সিএইচসিপিরা। অনেকে জড়িয়ে পড়েছেন ঋণে।
জয়পুরহাট জেলার ১১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা গত বছরের জুলাই মাস থেকে বেতন না পাওয়ায় কষ্টে দিন যাপন করছেন। সদর উপজেলার চকবরকত ইউনিয়নের আরজি-জগদীশপুরের সিএইচসিপি আসাদুজ্জামান বলেন, ‘কম বেতনের চাকরিতে এমনিতেই দিন চলে টানাটানি করে। তার ওপরে সোনালী ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা স্যালারি ঋণ নেওয়া আছে। কিছু ধার-দেনাও হয়েছে। খুব কষ্টে আছি।’
ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের কেশুরতা ক্লিনিকের মনিরা বেগম বলেন, ‘বেতন নাই। কিস্তি দিতে পারছি না। প্রতিদিন অন্যের কথা শুনতে হয়।’
বাগেরহাটে ৭ মাস ধরে বেতন পান না ২১১ ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা। চরম অর্থকষ্টে ভুগছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া এসব কর্মী। কোথাও কোথাও নিয়মিত ওষুধের সরবরাহও বন্ধ রয়েছে।
কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মো. বাশার শেখ বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে ক্লিনিকে গেলে ঠিকঠাক সেবা পাই না। ওষুধ চাইলে বলে নাই। আবার শুনছি সিএইচসিপিরা ঠিকমতো বেতন পান না। তাই কাজে কম আসছেন তাঁরা।’
মেহেরপুরের গাংনীর হোগলবাড়িয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মো. সাজেদুর রহমান বলেন, ‘কী কষ্টে যে আছি, তা বলে বোঝানো সম্ভব না। আমি অসুস্থ, স্ত্রী অসুস্থ...ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া। সব মিলিয়ে অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে বসবাস করছি।’
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলা ক্লিনিকের শামীম হোসেন বলেন, ‘ওপি না থাকার কারণে বেতন হচ্ছে না। আমরা পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।’
সিএইচসিপিদের জাতীয় সংগঠনের সভাপতি ও ঢাকার কেরানীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের অগ্রখোলা কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি, সংশোধিত বাজেট অনুমোদনের পর রাজস্ব খাত থেকে আমাদের বেতন হবে। আর জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বেতন দেওয়া হবে ওপি থেকে। এসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঠিক কবে নাগাদ বেতন হাতে পাব, বুঝতে পারছি না।’
এ ছাড়া জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার ২১টি ক্লিনিক; কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ৩৫টি ক্লিনিক; দিনাজপুরের বিরামপুর, ফুলবাড়ী ও খানসামা উপজেলার ৭১টি ক্লিনিক; ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার ১৬টি ক্লিনিক, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের ২০টি ক্লিনিক এবং মেহেরপুরের গাংনীর ৩৫টি ক্লিনিকের কর্মীদের বেতন না পাওয়ার কথা সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানিয়েছেন আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিরা।
ওষুধের ঘাটতির আশঙ্কা
কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধের ব্যয় আসে পাঁচ বছর মেয়াদি ওপি থেকে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ক্লিনিকে সর্বশেষ ওষুধ সরবরাহ করা হয় গত ২ অক্টোবর। সাধারণত এক দফার সরবরাহে চার থেকে পাঁচ মাস চলে। সংকটের আশঙ্কায় কেন্দ্র থেকে ওষুধ বিতরণে সতর্ক হতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক সিএইচসিপি। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ঠান্ডা-জ্বর ও কৃমির ওষুধ এবং আয়রন, ফলিক অ্যাসিডসহ বিভিন্ন ধরনের ২২টি ওষুধ বিনা মূল্যে দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ওষুধের সংকট দেখা দিতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ওষুধ ওপি থেকে নাকি রাজস্ব খাত থেকে কেনা হবে, তা এখন বিবেচনাধীন। কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টের কাছে অর্থ বিভাগ ওষুধের বাজেট চেয়েছে। সংকটের শঙ্কায় আমরা ক্লিনিকগুলোকে যৌক্তিকভাবে ওষুধ খরচ করতে বলেছি।’
ওপি ছেড়ে সমাধানের পথে
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে চলমান ওপি প্রক্রিয়া থেকে বের হওয়ার কথা ভাবছে সরকারের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। ১৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে বর্তমান সেক্টর কর্মসূচি পদ্ধতির ওপি থেকে বের হওয়ার কৌশল নির্ধারণের জন্য সভা হয়। এতে পুরো কর্মসূচিকেই রাজস্ব খাতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই (সম্ভাব্য তারিখ) সংশোধিত বাজেট অনুমোদনের পর রাজস্ব খাত থেকে সিএইচসিপিদের বেতন দিতে আরও তিন মাসের মতো সময় লাগবে। পঞ্চবার্ষিক এই কর্মসূচির বিকল্প ভাবার জন্য পরিকল্পনা কমিশন থেকেও তাগিদ দেওয়া হয়েছিল।
সিবিএইচসির লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ওপিতে যেসব কর্মসূচি বা দপ্তর কর্তৃপক্ষ কাজ করে, তাদের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে ওপি থেকে বের হওয়া এবং এর কার্যক্রম ভবিষ্যতে কীভাবে পরিচালনা করা যায়, তার রোডম্যাপ (পথনকশা) থাকতে হবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের অভিমত
বর্তমান ওপি পদ্ধতি থেকে বের হওয়ার জন্য কমপক্ষে দুই বছর আগে পরিকল্পনা থাকার প্রয়োজন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা খাতের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি এই এইচপিএনএসপি নামের ওপি। এটা প্রায় ৩০ বছর ধরে চলছে। জনস্বাস্থ্যের বড় কাজগুলো এর মাধ্যমেই হয়। পরিবর্তন করতে চাইলে ওপি চলমান অবস্থায় দু-তিন বছর আগেই এ থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার ছিল।’
প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন আজকের পত্রিকার বাগেরহাট, জয়পুরহাট ও কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ), গাংনী (মেহেরপুর), জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা), ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম), আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) এবং দিনাজপুরের বিরামপুর, ফুলবাড়ী ও খানসামা প্রতিনিধি।
আরও খবর পড়ুন:
কমিউনিটি ক্লিনিক
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের ‘কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা’ (সিএইচসিপি) বেতন পাচ্ছেন না আট মাস ধরে। পরিবার নিয়ে তাঁরা দুঃসহ আর্থিক অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, স্বাস্থ্য খাতের পাঁচ বছর মেয়াদি অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) চালু না থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধের অভাবও দেখা দিয়েছে কোথাও কোথাও।
‘স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’ নামে এই ওপি গত বছরের জুনে শেষ হলেও নতুন পর্ব শুরু হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটে রাজস্ব খাত থেকে সিএইচসিপিদের বেতন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ১৪ হাজারের বেশি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এখন অধীর আগ্রহে তারই পথ চেয়ে আছেন।
দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা এবং টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচি পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। গত বছরের জুনে শেষ হয় ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’। ওই বছরের জুলাই মাসেই পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকার পঞ্চম এইচপিএনএসপি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময় তা অনুমোদন করেনি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সিএইচসিপিদের সংগঠন বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছে, ওপি চালু না থাকায় ১৪ হাজারের কিছু বেশি সিএইচসিপি গত জুনের পর আর বেতন পাননি।
তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। ১৯৯৮ সালে গ্রামাঞ্চলের প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা করে সরকার। দেশজুড়ে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মিত হয়েছে। এখানে গর্ভকালীন ও প্রসূতিসেবা, শিশুদের যাবতীয় রোগের চিকিৎসা, প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই), পুষ্টিবিষয়ক শিক্ষাদান ও পরামর্শ এবং পুষ্টিকর অতিরিক্ত খাদ্য সরবরাহসহ বেশ কিছু সেবা দেওয়া হয়।
দেশজুড়ে কষ্টের দিনলিপি
আট মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন সিএইচসিপিরা। অনেকে জড়িয়ে পড়েছেন ঋণে।
জয়পুরহাট জেলার ১১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা গত বছরের জুলাই মাস থেকে বেতন না পাওয়ায় কষ্টে দিন যাপন করছেন। সদর উপজেলার চকবরকত ইউনিয়নের আরজি-জগদীশপুরের সিএইচসিপি আসাদুজ্জামান বলেন, ‘কম বেতনের চাকরিতে এমনিতেই দিন চলে টানাটানি করে। তার ওপরে সোনালী ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা স্যালারি ঋণ নেওয়া আছে। কিছু ধার-দেনাও হয়েছে। খুব কষ্টে আছি।’
ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের কেশুরতা ক্লিনিকের মনিরা বেগম বলেন, ‘বেতন নাই। কিস্তি দিতে পারছি না। প্রতিদিন অন্যের কথা শুনতে হয়।’
বাগেরহাটে ৭ মাস ধরে বেতন পান না ২১১ ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা। চরম অর্থকষ্টে ভুগছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া এসব কর্মী। কোথাও কোথাও নিয়মিত ওষুধের সরবরাহও বন্ধ রয়েছে।
কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মো. বাশার শেখ বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে ক্লিনিকে গেলে ঠিকঠাক সেবা পাই না। ওষুধ চাইলে বলে নাই। আবার শুনছি সিএইচসিপিরা ঠিকমতো বেতন পান না। তাই কাজে কম আসছেন তাঁরা।’
মেহেরপুরের গাংনীর হোগলবাড়িয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মো. সাজেদুর রহমান বলেন, ‘কী কষ্টে যে আছি, তা বলে বোঝানো সম্ভব না। আমি অসুস্থ, স্ত্রী অসুস্থ...ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া। সব মিলিয়ে অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে বসবাস করছি।’
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলা ক্লিনিকের শামীম হোসেন বলেন, ‘ওপি না থাকার কারণে বেতন হচ্ছে না। আমরা পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।’
সিএইচসিপিদের জাতীয় সংগঠনের সভাপতি ও ঢাকার কেরানীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের অগ্রখোলা কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি, সংশোধিত বাজেট অনুমোদনের পর রাজস্ব খাত থেকে আমাদের বেতন হবে। আর জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বেতন দেওয়া হবে ওপি থেকে। এসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঠিক কবে নাগাদ বেতন হাতে পাব, বুঝতে পারছি না।’
এ ছাড়া জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার ২১টি ক্লিনিক; কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ৩৫টি ক্লিনিক; দিনাজপুরের বিরামপুর, ফুলবাড়ী ও খানসামা উপজেলার ৭১টি ক্লিনিক; ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার ১৬টি ক্লিনিক, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের ২০টি ক্লিনিক এবং মেহেরপুরের গাংনীর ৩৫টি ক্লিনিকের কর্মীদের বেতন না পাওয়ার কথা সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানিয়েছেন আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিরা।
ওষুধের ঘাটতির আশঙ্কা
কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধের ব্যয় আসে পাঁচ বছর মেয়াদি ওপি থেকে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ক্লিনিকে সর্বশেষ ওষুধ সরবরাহ করা হয় গত ২ অক্টোবর। সাধারণত এক দফার সরবরাহে চার থেকে পাঁচ মাস চলে। সংকটের আশঙ্কায় কেন্দ্র থেকে ওষুধ বিতরণে সতর্ক হতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক সিএইচসিপি। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ঠান্ডা-জ্বর ও কৃমির ওষুধ এবং আয়রন, ফলিক অ্যাসিডসহ বিভিন্ন ধরনের ২২টি ওষুধ বিনা মূল্যে দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ওষুধের সংকট দেখা দিতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ওষুধ ওপি থেকে নাকি রাজস্ব খাত থেকে কেনা হবে, তা এখন বিবেচনাধীন। কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টের কাছে অর্থ বিভাগ ওষুধের বাজেট চেয়েছে। সংকটের শঙ্কায় আমরা ক্লিনিকগুলোকে যৌক্তিকভাবে ওষুধ খরচ করতে বলেছি।’
ওপি ছেড়ে সমাধানের পথে
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে চলমান ওপি প্রক্রিয়া থেকে বের হওয়ার কথা ভাবছে সরকারের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। ১৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে বর্তমান সেক্টর কর্মসূচি পদ্ধতির ওপি থেকে বের হওয়ার কৌশল নির্ধারণের জন্য সভা হয়। এতে পুরো কর্মসূচিকেই রাজস্ব খাতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই (সম্ভাব্য তারিখ) সংশোধিত বাজেট অনুমোদনের পর রাজস্ব খাত থেকে সিএইচসিপিদের বেতন দিতে আরও তিন মাসের মতো সময় লাগবে। পঞ্চবার্ষিক এই কর্মসূচির বিকল্প ভাবার জন্য পরিকল্পনা কমিশন থেকেও তাগিদ দেওয়া হয়েছিল।
সিবিএইচসির লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ওপিতে যেসব কর্মসূচি বা দপ্তর কর্তৃপক্ষ কাজ করে, তাদের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে ওপি থেকে বের হওয়া এবং এর কার্যক্রম ভবিষ্যতে কীভাবে পরিচালনা করা যায়, তার রোডম্যাপ (পথনকশা) থাকতে হবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের অভিমত
বর্তমান ওপি পদ্ধতি থেকে বের হওয়ার জন্য কমপক্ষে দুই বছর আগে পরিকল্পনা থাকার প্রয়োজন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা খাতের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি এই এইচপিএনএসপি নামের ওপি। এটা প্রায় ৩০ বছর ধরে চলছে। জনস্বাস্থ্যের বড় কাজগুলো এর মাধ্যমেই হয়। পরিবর্তন করতে চাইলে ওপি চলমান অবস্থায় দু-তিন বছর আগেই এ থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার ছিল।’
প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন আজকের পত্রিকার বাগেরহাট, জয়পুরহাট ও কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ), গাংনী (মেহেরপুর), জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা), ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম), আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) এবং দিনাজপুরের বিরামপুর, ফুলবাড়ী ও খানসামা প্রতিনিধি।
আরও খবর পড়ুন:

গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের ‘কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা’ (সিএইচসিপি) বেতন পাচ্ছেন না আট মাস ধরে। পরিবার নিয়ে তাঁরা দুঃসহ আর্থিক অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, স্বাস্থ্য খাতের পাঁচ বছর মেয়াদি অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) চালু না থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধের অভাবও দেখা দিয়েছে কোথাও কোথাও।
‘স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’ নামে এই ওপি গত বছরের জুনে শেষ হলেও নতুন পর্ব শুরু হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটে রাজস্ব খাত থেকে সিএইচসিপিদের বেতন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ১৪ হাজারের বেশি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এখন অধীর আগ্রহে তারই পথ চেয়ে আছেন।
দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা এবং টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচি পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। গত বছরের জুনে শেষ হয় ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’। ওই বছরের জুলাই মাসেই পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকার পঞ্চম এইচপিএনএসপি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময় তা অনুমোদন করেনি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সিএইচসিপিদের সংগঠন বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছে, ওপি চালু না থাকায় ১৪ হাজারের কিছু বেশি সিএইচসিপি গত জুনের পর আর বেতন পাননি।
তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। ১৯৯৮ সালে গ্রামাঞ্চলের প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা করে সরকার। দেশজুড়ে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মিত হয়েছে। এখানে গর্ভকালীন ও প্রসূতিসেবা, শিশুদের যাবতীয় রোগের চিকিৎসা, প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই), পুষ্টিবিষয়ক শিক্ষাদান ও পরামর্শ এবং পুষ্টিকর অতিরিক্ত খাদ্য সরবরাহসহ বেশ কিছু সেবা দেওয়া হয়।
দেশজুড়ে কষ্টের দিনলিপি
আট মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন সিএইচসিপিরা। অনেকে জড়িয়ে পড়েছেন ঋণে।
জয়পুরহাট জেলার ১১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা গত বছরের জুলাই মাস থেকে বেতন না পাওয়ায় কষ্টে দিন যাপন করছেন। সদর উপজেলার চকবরকত ইউনিয়নের আরজি-জগদীশপুরের সিএইচসিপি আসাদুজ্জামান বলেন, ‘কম বেতনের চাকরিতে এমনিতেই দিন চলে টানাটানি করে। তার ওপরে সোনালী ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা স্যালারি ঋণ নেওয়া আছে। কিছু ধার-দেনাও হয়েছে। খুব কষ্টে আছি।’
ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের কেশুরতা ক্লিনিকের মনিরা বেগম বলেন, ‘বেতন নাই। কিস্তি দিতে পারছি না। প্রতিদিন অন্যের কথা শুনতে হয়।’
বাগেরহাটে ৭ মাস ধরে বেতন পান না ২১১ ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা। চরম অর্থকষ্টে ভুগছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া এসব কর্মী। কোথাও কোথাও নিয়মিত ওষুধের সরবরাহও বন্ধ রয়েছে।
কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মো. বাশার শেখ বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে ক্লিনিকে গেলে ঠিকঠাক সেবা পাই না। ওষুধ চাইলে বলে নাই। আবার শুনছি সিএইচসিপিরা ঠিকমতো বেতন পান না। তাই কাজে কম আসছেন তাঁরা।’
মেহেরপুরের গাংনীর হোগলবাড়িয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মো. সাজেদুর রহমান বলেন, ‘কী কষ্টে যে আছি, তা বলে বোঝানো সম্ভব না। আমি অসুস্থ, স্ত্রী অসুস্থ...ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া। সব মিলিয়ে অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে বসবাস করছি।’
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলা ক্লিনিকের শামীম হোসেন বলেন, ‘ওপি না থাকার কারণে বেতন হচ্ছে না। আমরা পরিবার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।’
সিএইচসিপিদের জাতীয় সংগঠনের সভাপতি ও ঢাকার কেরানীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের অগ্রখোলা কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি, সংশোধিত বাজেট অনুমোদনের পর রাজস্ব খাত থেকে আমাদের বেতন হবে। আর জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বেতন দেওয়া হবে ওপি থেকে। এসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঠিক কবে নাগাদ বেতন হাতে পাব, বুঝতে পারছি না।’
এ ছাড়া জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার ২১টি ক্লিনিক; কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ৩৫টি ক্লিনিক; দিনাজপুরের বিরামপুর, ফুলবাড়ী ও খানসামা উপজেলার ৭১টি ক্লিনিক; ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার ১৬টি ক্লিনিক, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের ২০টি ক্লিনিক এবং মেহেরপুরের গাংনীর ৩৫টি ক্লিনিকের কর্মীদের বেতন না পাওয়ার কথা সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানিয়েছেন আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিরা।
ওষুধের ঘাটতির আশঙ্কা
কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধের ব্যয় আসে পাঁচ বছর মেয়াদি ওপি থেকে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ক্লিনিকে সর্বশেষ ওষুধ সরবরাহ করা হয় গত ২ অক্টোবর। সাধারণত এক দফার সরবরাহে চার থেকে পাঁচ মাস চলে। সংকটের আশঙ্কায় কেন্দ্র থেকে ওষুধ বিতরণে সতর্ক হতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক সিএইচসিপি। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ঠান্ডা-জ্বর ও কৃমির ওষুধ এবং আয়রন, ফলিক অ্যাসিডসহ বিভিন্ন ধরনের ২২টি ওষুধ বিনা মূল্যে দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ওষুধের সংকট দেখা দিতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ওষুধ ওপি থেকে নাকি রাজস্ব খাত থেকে কেনা হবে, তা এখন বিবেচনাধীন। কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টের কাছে অর্থ বিভাগ ওষুধের বাজেট চেয়েছে। সংকটের শঙ্কায় আমরা ক্লিনিকগুলোকে যৌক্তিকভাবে ওষুধ খরচ করতে বলেছি।’
ওপি ছেড়ে সমাধানের পথে
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে চলমান ওপি প্রক্রিয়া থেকে বের হওয়ার কথা ভাবছে সরকারের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। ১৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে বর্তমান সেক্টর কর্মসূচি পদ্ধতির ওপি থেকে বের হওয়ার কৌশল নির্ধারণের জন্য সভা হয়। এতে পুরো কর্মসূচিকেই রাজস্ব খাতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই (সম্ভাব্য তারিখ) সংশোধিত বাজেট অনুমোদনের পর রাজস্ব খাত থেকে সিএইচসিপিদের বেতন দিতে আরও তিন মাসের মতো সময় লাগবে। পঞ্চবার্ষিক এই কর্মসূচির বিকল্প ভাবার জন্য পরিকল্পনা কমিশন থেকেও তাগিদ দেওয়া হয়েছিল।
সিবিএইচসির লাইন ডিরেক্টর ডা. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ওপিতে যেসব কর্মসূচি বা দপ্তর কর্তৃপক্ষ কাজ করে, তাদের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে ওপি থেকে বের হওয়া এবং এর কার্যক্রম ভবিষ্যতে কীভাবে পরিচালনা করা যায়, তার রোডম্যাপ (পথনকশা) থাকতে হবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের অভিমত
বর্তমান ওপি পদ্ধতি থেকে বের হওয়ার জন্য কমপক্ষে দুই বছর আগে পরিকল্পনা থাকার প্রয়োজন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা খাতের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি এই এইচপিএনএসপি নামের ওপি। এটা প্রায় ৩০ বছর ধরে চলছে। জনস্বাস্থ্যের বড় কাজগুলো এর মাধ্যমেই হয়। পরিবর্তন করতে চাইলে ওপি চলমান অবস্থায় দু-তিন বছর আগেই এ থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার ছিল।’
প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন আজকের পত্রিকার বাগেরহাট, জয়পুরহাট ও কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ), গাংনী (মেহেরপুর), জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা), ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম), আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) এবং দিনাজপুরের বিরামপুর, ফুলবাড়ী ও খানসামা প্রতিনিধি।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
৯ ঘণ্টা আগে
পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পছন্দ, বিসিএস ও মেধাক্রমসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অটোমেশন পদ্ধতিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদনের ভিত্তিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা জরুরি।
১১ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ মানুষ বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়। আর এই দংশনের কারণে বছরে মৃত্যু হয় ৭ হাজার ৫১১ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরও জনস্বাস্থ্যে সাপের দংশনের সমস্যাটি উপেক্ষিত।
২০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি।
আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৬, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮৪, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৮৯, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৫, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬ জন রয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় ৫৭৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৭২ হাজার ৯৬৬ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।
চলতি বছরের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ৭৬ হাজার ৫১৪ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ ও ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নারী রয়েছে।
এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিন, এপ্রিলে সাত, মে মাসে তিন, জুনে ১৯, জুলাইয়ে ৪১, আগস্টে ৩৯ ও সেপ্টেম্বরে ৭৬, অক্টোবরে ৮০ জন মারা গেছে। মার্চে কারও মৃত্যু হয়নি। আর নভেম্বরে এখন পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি।
আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৬, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮৪, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৮৯, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৫, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬ জন রয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় ৫৭৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৭২ হাজার ৯৬৬ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।
চলতি বছরের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ৭৬ হাজার ৫১৪ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ ও ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নারী রয়েছে।
এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিন, এপ্রিলে সাত, মে মাসে তিন, জুনে ১৯, জুলাইয়ে ৪১, আগস্টে ৩৯ ও সেপ্টেম্বরে ৭৬, অক্টোবরে ৮০ জন মারা গেছে। মার্চে কারও মৃত্যু হয়নি। আর নভেম্বরে এখন পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের ‘কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা’ (সিএইচসিপি) বেতন পাচ্ছেন না আট মাস ধরে। পরিবার নিয়ে তাঁরা দুঃসহ আর্থিক অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, স্বাস্থ্য খাতের পাঁচ বছর মেয়াদি অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) চালু না...
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
৯ ঘণ্টা আগে
পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পছন্দ, বিসিএস ও মেধাক্রমসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অটোমেশন পদ্ধতিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদনের ভিত্তিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা জরুরি।
১১ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ মানুষ বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়। আর এই দংশনের কারণে বছরে মৃত্যু হয় ৭ হাজার ৫১১ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরও জনস্বাস্থ্যে সাপের দংশনের সমস্যাটি উপেক্ষিত।
২০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক তাঁদের ব্যবস্থাপত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) অনুমোদিত ও নিবন্ধিত নয় এমন ওষুধ লিখে আসছেন। এতে রোগীদের স্বাস্থ্য বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়ছে। বিষয়টি তদন্তে মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবু হেনা চৌধুরীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন ফার্মাকোলজি বিভাগের সভাপতি ডা. ইলোরা শারমিন এবং উপ-রেজিস্ট্রার (আইন) ডা. আবু হেনা হেলাল উদ্দিন আহমেদ। সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক (আইন) অ্যাডভোকেট তানিয়া আক্তার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএমইউর চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ওষুধ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোনো ওষুধ, ভিটামিন, মিনারেল বা সাপ্লিমেন্টের নাম প্রেসক্রিপশনে লেখা হলে তা আইনভঙ্গের শামিল কি না এবং হলে কী ধরনের আইনি প্রতিকার বা শাস্তি প্রযোজ্য হতে পারে, তা নির্ধারণ করে প্রচলিত আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ক্ষেত্রে প্রামাণ্য আইন হিসেবে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস আইন-২০২৩’ এবং ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০’ উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে—যেসব ভিটামিন, মিনারেল সাপ্লিমেন্ট ও হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট বিদেশ থেকে আমদানি হয়, সেগুলো ডিজিডিএ ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কীভাবে যাচাই-বাছাই করে, কিংবা এসব পণ্য ব্যবহারের অনুমোদন দেয় কি না, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ডিজিডিএর ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত ওষুধের তালিকা সহজেই পাওয়া যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসকদের সচেতন করতে আইটি সেকশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রতিকার হিসেবে বিএমইউর চিকিৎসকেরা যেন অননুমোদিত ওষুধ প্রেসক্রিপশনে না লেখেন সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট ছাপানো এবং সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার সুপারিশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক তাঁদের ব্যবস্থাপত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) অনুমোদিত ও নিবন্ধিত নয় এমন ওষুধ লিখে আসছেন। এতে রোগীদের স্বাস্থ্য বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়ছে। বিষয়টি তদন্তে মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবু হেনা চৌধুরীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন ফার্মাকোলজি বিভাগের সভাপতি ডা. ইলোরা শারমিন এবং উপ-রেজিস্ট্রার (আইন) ডা. আবু হেনা হেলাল উদ্দিন আহমেদ। সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক (আইন) অ্যাডভোকেট তানিয়া আক্তার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএমইউর চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ওষুধ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোনো ওষুধ, ভিটামিন, মিনারেল বা সাপ্লিমেন্টের নাম প্রেসক্রিপশনে লেখা হলে তা আইনভঙ্গের শামিল কি না এবং হলে কী ধরনের আইনি প্রতিকার বা শাস্তি প্রযোজ্য হতে পারে, তা নির্ধারণ করে প্রচলিত আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ক্ষেত্রে প্রামাণ্য আইন হিসেবে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস আইন-২০২৩’ এবং ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০’ উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে—যেসব ভিটামিন, মিনারেল সাপ্লিমেন্ট ও হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট বিদেশ থেকে আমদানি হয়, সেগুলো ডিজিডিএ ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কীভাবে যাচাই-বাছাই করে, কিংবা এসব পণ্য ব্যবহারের অনুমোদন দেয় কি না, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ডিজিডিএর ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত ওষুধের তালিকা সহজেই পাওয়া যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসকদের সচেতন করতে আইটি সেকশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রতিকার হিসেবে বিএমইউর চিকিৎসকেরা যেন অননুমোদিত ওষুধ প্রেসক্রিপশনে না লেখেন সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট ছাপানো এবং সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার সুপারিশ করা হয়েছে।

গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের ‘কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা’ (সিএইচসিপি) বেতন পাচ্ছেন না আট মাস ধরে। পরিবার নিয়ে তাঁরা দুঃসহ আর্থিক অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, স্বাস্থ্য খাতের পাঁচ বছর মেয়াদি অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) চালু না...
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ ঘণ্টা আগে
পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পছন্দ, বিসিএস ও মেধাক্রমসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অটোমেশন পদ্ধতিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদনের ভিত্তিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা জরুরি।
১১ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ মানুষ বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়। আর এই দংশনের কারণে বছরে মৃত্যু হয় ৭ হাজার ৫১১ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরও জনস্বাস্থ্যে সাপের দংশনের সমস্যাটি উপেক্ষিত।
২০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চিকিৎসকদের বদলি ও পদায়ন আপাতত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বদলি-পদায়ন কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে অটোমেশন পদ্ধতি চালুর প্রস্তুতি চলমান থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সিনিয়র ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রশাসনিক পদে থাকা চিকিৎসকেরা প্রায়ই উচ্চতর পদে চলতি দায়িত্ব বা পছন্দের কর্মস্থলে বদলি ও পদায়নের জন্য আবেদন করে থাকেন। বর্তমানে চিকিৎসকদের পদোন্নতি কার্যক্রম চলমান থাকায় এসব আবেদন নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিগগির পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পছন্দ, বিসিএস ও মেধাক্রমসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অটোমেশন পদ্ধতিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদনের ভিত্তিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা জরুরি।
বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়, বদলি-পদায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, গতি ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে অটোমেশন ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদন বিবেচনা করা হবে না।

জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চিকিৎসকদের বদলি ও পদায়ন আপাতত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বদলি-পদায়ন কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে অটোমেশন পদ্ধতি চালুর প্রস্তুতি চলমান থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সিনিয়র ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রশাসনিক পদে থাকা চিকিৎসকেরা প্রায়ই উচ্চতর পদে চলতি দায়িত্ব বা পছন্দের কর্মস্থলে বদলি ও পদায়নের জন্য আবেদন করে থাকেন। বর্তমানে চিকিৎসকদের পদোন্নতি কার্যক্রম চলমান থাকায় এসব আবেদন নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিগগির পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পছন্দ, বিসিএস ও মেধাক্রমসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অটোমেশন পদ্ধতিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদনের ভিত্তিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা জরুরি।
বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়, বদলি-পদায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, গতি ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে অটোমেশন ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদন বিবেচনা করা হবে না।

গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের ‘কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা’ (সিএইচসিপি) বেতন পাচ্ছেন না আট মাস ধরে। পরিবার নিয়ে তাঁরা দুঃসহ আর্থিক অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, স্বাস্থ্য খাতের পাঁচ বছর মেয়াদি অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) চালু না...
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
৯ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ মানুষ বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়। আর এই দংশনের কারণে বছরে মৃত্যু হয় ৭ হাজার ৫১১ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরও জনস্বাস্থ্যে সাপের দংশনের সমস্যাটি উপেক্ষিত।
২০ ঘণ্টা আগেমুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ মানুষ বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়। আর এই দংশনের কারণে বছরে মৃত্যু হয় ৭ হাজার ৫১১ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরও জনস্বাস্থ্যে সাপের দংশনের সমস্যাটি উপেক্ষিত। প্রাথমিক চিকিৎসার সুযোগ সীমিত। জীবন বাঁচাতে অপরিহার্য অ্যান্টিভেনমের প্রাপ্যতা নিয়ে সমস্যা লেগেই থাকে। খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সাপের দংশনকে বৈশ্বিকভাবে অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে ২৪৪ জন সাপের দংশনের শিকার হয় এবং এতে ৫ জনের মৃত্যু ঘটে। মৃত্যু না হলেও সাপের দংশনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের ১১ শতাংশ বিষক্রিয়াজনিত পক্ষাঘাতে ভোগে। বছরে আড়াই হাজার গরুরও মৃত্যু হয় সাপের দংশনে, যা গ্রামীণ অর্থনীতির ওপর তুলনামূলকভাবে ছোট হলেও একটি চাপ।
পেশাভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাপের দংশনের সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন গৃহবধূরা। তাঁরা মোট আক্রান্তের ৩২ শতাংশ। এরপর রয়েছে কৃষিশ্রমিক ২৬ শতাংশ ও শিক্ষার্থী ১৯ শতাংশ। বিভিন্ন মাধ্যমে দীর্ঘদিনের নানা প্রচারণার পরও চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে ৬১ শতাংশ ভুক্তভোগী এখনো ওঝার কাছে যায়। মাত্র ৩৫ শতাংশ যায় প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যসেবাদাতার কাছে। ওঝার অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রায়ই কাজে আসে না। এটি মৃত্যুহার ও স্বাস্থ্যের জটিলতা বাড়িয়ে দেয়।
ডব্লিউএইচওর হিসাবে, বছরে বিশ্বে প্রায় ৫৮ লাখ মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখ মারা যায়। এশিয়ায় আক্রান্ত হয় প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ। মৃত্যুর সংখ্যার প্রায় তিন গুণ মানুষ স্থায়ী শারীরিক অক্ষমতা বা অঙ্গচ্ছেদের শিকার হয়। সময়মতো সুচিকিৎসা না পেলে বিষধর সাপের দংশন পক্ষাঘাত (প্যারালাইসিস), রক্তপাতজনিত জটিলতা এবং কিডনি ও টিস্যুর ক্ষতি করতে পারে।
দেশজুড়ে সাপের দংশন ও চিকিৎসার চিত্র
উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় বিশেষায়িত সরকারি চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি বছরের শুরু থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সাপের দংশনের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে ১ হাজার ২০৫ জন। তাদের মধ্যে ২৬০ জন বিষধর সাপের দংশনে আক্রান্ত হয়েছিল। আর এতে মারা গেছে ৩০ জন। এর মধ্যে ১০ জন চন্দ্রবোড়া (রাসেলস ভাইপার) এবং বাকিরা কালাচ, কেউটে ও গোখরা সাপের দংশনের শিকার হয়েছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশেষায়িত সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সাপের দংশনের শিকার রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৪১৪ জন। মারা গেছে ৭ জন।
দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাপের দংশনের ঘটনা ঘটে খুলনা বিভাগে; প্রতি লাখে ৬১৬ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বরিশাল বিভাগ, যেখানে প্রতি লাখে ৪২৯ জন সাপের দংশনের শিকার হয়। সারা দেশের ২৬টি জেলার সরকারি হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরু থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ওই সব এলাকায় সাড়ে ৯ হাজার সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একটা বড় অংশ বিষধর সাপের দংশনের শিকার। গত মাস পর্যন্ত ২ হাজার ৫২৭ রোগীর শরীরে সাপের বিষের প্রতিষেধক (অ্যান্টিভেনম) প্রয়োগ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাপে কাটা রোগীর শরীরে অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের সময় তাঁর শ্বাসকষ্ট, কিডনি বিকল হওয়া, রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা, হৃদ্যন্ত্রের জটিলতা এবং অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসাকেন্দ্রে আইসিইউ, অক্সিজেন এবং ডায়ালাইসিস সুবিধা থাকা প্রয়োজন।
প্রতিষেধক ও তার কার্যকারিতা
বাংলাদেশের একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ৮২ প্রজাতির সাপের মধ্যে ২৮টি বিষধর। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানভিত্তিক তথ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রকুইস্টে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাটি। এতে বলা হয়েছে, সাপের ধরনভেদে অ্যান্টিভেনমের পরিমাণ ও প্রয়োগও ভিন্ন। যেমন গোখরার কামড়ে ১০০-২০০ মিলিলিটার এবং চন্দ্রবোড়ার ক্ষেত্রে ১০০-৮০০ মিলিলিটার।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রয়োগ করা অ্যান্টিভেনম কার্যকর হচ্ছে শুধু চন্দ্রবোড়া, গোখরা ও ক্রেইটজাতীয় সাপের বিষের বিরুদ্ধে। সামুদ্রিক সাপ, গ্রিন পিট ভাইপার, বিরলজাতের ক্রেইটসহ অন্য কিছু বিষধর সাপের দংশনে এটি অকার্যকর। বাংলাদেশে গোখরার তিনটি এবং ক্রেইটের পাঁচটি প্রজাতি রয়েছে। বর্তমানে দেশে গ্রিন পিট ভাইপারের বিষের প্রতিষেধক খুবই জরুরি। এটা কাছাকাছি দেশের মধ্যে থাইল্যান্ডে তৈরি হয়। তবে সেটা আমদানির অনুমতি নেই। অন্যদিকে সামুদ্রিক সব সাপের বিষ মারাত্মক ক্ষতিকর হলেও দেশে এর প্রতিষেধক পাওয়া যায় না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাপের একক প্রজাতির জন্য মনোভ্যালেন্ট এবং দুই বা ততোধিক প্রজাতির জন্য পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম ব্যবহৃত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ব্যবহৃত পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম সব বিষধর সাপের ক্ষেত্রে শতভাগ কার্যকর নয়। এ জন্য স্থানীয় সাপের বিষের ভিত্তিতে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা অপরিহার্য। সার্বিকভাবে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় সাপের দংশনের বিষক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে অপর্যাপ্ত বলে মূল্যায়ন করেছে ডব্লিউএইচও।
অ্যান্টিভেনমের প্রাপ্যতার সংকট
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছর অ্যান্টিভেনমের দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে। দেশে এ প্রতিষেধক বাজারজাত করে একটিমাত্র ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। তাদের আমদানি করা অ্যান্টিভেনম ভারতের তামিলনাড়ুতে উৎপাদিত। ভারত থেকে বাল্ক পরিমাণে তরল আমদানি করে দেশীয় প্রতিষ্ঠানটি ভায়ালে ভরে বাজারজাত করে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিষয়ক সরকারি কার্যক্রমের কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) বিদ্যমান না থাকায় এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিভেনম সরবরাহ করা হচ্ছে না। হাসপাতালগুলোকে নিজ উদ্যোগে কিনতে বলা হয়েছে। বিষধর সাপের দংশনে আহত রোগীদের চিকিৎসায় বছরে ১০ থেকে ২০ লাখ ভায়াল অ্যান্টিভেনমের প্রয়োজন।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ টক্সিকোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ ফায়েজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাধীনতার আগে ১৯৬৭ সালে পাকিস্তানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্টিভেনম উৎপাদন করেছিল। বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের উদ্যোগ নেওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে। মুন্সিগঞ্জে সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) নতুন কারখানায় অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।
অ্যান্টিভেনমের অসম প্রাপ্যতা প্রসঙ্গে ডা. ফায়েজ বলেন, চিকিৎসা খাতে সাপের দংশনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। হাসপাতালভিত্তিক তথ্যও আংশিক। কোথায় কত মানুষ সাপের দংশনে মারা যাচ্ছে, তা পূর্ণাঙ্গভাবে জানা নেই। ফলে অ্যান্টিভেনম সমানভাবে বিতরণ করা হয় না। আর আমদানিনির্ভরতা, বরাদ্দ ও দামে সংকট সৃষ্টি হয়।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অ্যান্টিভেনমের ঘাটতি রয়েছে। উচ্চ আদালত গত আগস্টে উপজেলা পর্যায়ে অ্যান্টিভেনম সরবরাহের জন্য সরকারের প্রতি নির্দেশনা দেন। ২৮ অক্টোবরের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। ওই নির্দেশনার পর দুই মাস পেরোলেও অনেক এলাকায় এখনো অ্যান্টিভেনম পাওয়া যাচ্ছে না বা খুব কম মজুত রয়েছে বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘অ্যান্টিভেনমের সংকট একেবারে নেই, তা বলা ঠিক হবে না। যেখানে ঘাটতি আছে, সেখানকার হাসপাতালকে পাশের উপজেলা থেকে সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। যে ওষুধ প্রতিষ্ঠান এটি তৈরি করছে, তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা উৎপাদন বাড়াচ্ছে। দু-তিন মাসের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভেনম রিসার্চ সেন্টারে দেশীয় অ্যান্টিভেনম তৈরির লক্ষ্যে কাজ চলছে। সেখানে ইতিমধ্যে রাসেলস ভাইপারের অ্যান্টিভেনম তৈরির পর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হয়েছে। এতে সাফল্যও পাওয়া গেছে বলে সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা জানিয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সমন্বয়ক ডা. আবদুল্লাহ আবু সাঈদ বলেন, ‘সেন্টারের কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটি অনুমোদিত হলে আগামী তিন বছর অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের লক্ষ্যে গবেষণা চালিয়ে একটা ফল পাওয়া যাবে। এরপর উৎপাদনে যেতে ইডিসিএলের হয়তো আরও কয়েক বছর সময় লাগবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ মানুষ বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়। আর এই দংশনের কারণে বছরে মৃত্যু হয় ৭ হাজার ৫১১ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরও জনস্বাস্থ্যে সাপের দংশনের সমস্যাটি উপেক্ষিত। প্রাথমিক চিকিৎসার সুযোগ সীমিত। জীবন বাঁচাতে অপরিহার্য অ্যান্টিভেনমের প্রাপ্যতা নিয়ে সমস্যা লেগেই থাকে। খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সাপের দংশনকে বৈশ্বিকভাবে অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে ২৪৪ জন সাপের দংশনের শিকার হয় এবং এতে ৫ জনের মৃত্যু ঘটে। মৃত্যু না হলেও সাপের দংশনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের ১১ শতাংশ বিষক্রিয়াজনিত পক্ষাঘাতে ভোগে। বছরে আড়াই হাজার গরুরও মৃত্যু হয় সাপের দংশনে, যা গ্রামীণ অর্থনীতির ওপর তুলনামূলকভাবে ছোট হলেও একটি চাপ।
পেশাভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাপের দংশনের সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন গৃহবধূরা। তাঁরা মোট আক্রান্তের ৩২ শতাংশ। এরপর রয়েছে কৃষিশ্রমিক ২৬ শতাংশ ও শিক্ষার্থী ১৯ শতাংশ। বিভিন্ন মাধ্যমে দীর্ঘদিনের নানা প্রচারণার পরও চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে ৬১ শতাংশ ভুক্তভোগী এখনো ওঝার কাছে যায়। মাত্র ৩৫ শতাংশ যায় প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যসেবাদাতার কাছে। ওঝার অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রায়ই কাজে আসে না। এটি মৃত্যুহার ও স্বাস্থ্যের জটিলতা বাড়িয়ে দেয়।
ডব্লিউএইচওর হিসাবে, বছরে বিশ্বে প্রায় ৫৮ লাখ মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখ মারা যায়। এশিয়ায় আক্রান্ত হয় প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ। মৃত্যুর সংখ্যার প্রায় তিন গুণ মানুষ স্থায়ী শারীরিক অক্ষমতা বা অঙ্গচ্ছেদের শিকার হয়। সময়মতো সুচিকিৎসা না পেলে বিষধর সাপের দংশন পক্ষাঘাত (প্যারালাইসিস), রক্তপাতজনিত জটিলতা এবং কিডনি ও টিস্যুর ক্ষতি করতে পারে।
দেশজুড়ে সাপের দংশন ও চিকিৎসার চিত্র
উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় বিশেষায়িত সরকারি চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি বছরের শুরু থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সাপের দংশনের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে ১ হাজার ২০৫ জন। তাদের মধ্যে ২৬০ জন বিষধর সাপের দংশনে আক্রান্ত হয়েছিল। আর এতে মারা গেছে ৩০ জন। এর মধ্যে ১০ জন চন্দ্রবোড়া (রাসেলস ভাইপার) এবং বাকিরা কালাচ, কেউটে ও গোখরা সাপের দংশনের শিকার হয়েছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশেষায়িত সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সাপের দংশনের শিকার রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৪১৪ জন। মারা গেছে ৭ জন।
দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাপের দংশনের ঘটনা ঘটে খুলনা বিভাগে; প্রতি লাখে ৬১৬ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বরিশাল বিভাগ, যেখানে প্রতি লাখে ৪২৯ জন সাপের দংশনের শিকার হয়। সারা দেশের ২৬টি জেলার সরকারি হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরু থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ওই সব এলাকায় সাড়ে ৯ হাজার সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একটা বড় অংশ বিষধর সাপের দংশনের শিকার। গত মাস পর্যন্ত ২ হাজার ৫২৭ রোগীর শরীরে সাপের বিষের প্রতিষেধক (অ্যান্টিভেনম) প্রয়োগ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাপে কাটা রোগীর শরীরে অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের সময় তাঁর শ্বাসকষ্ট, কিডনি বিকল হওয়া, রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা, হৃদ্যন্ত্রের জটিলতা এবং অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসাকেন্দ্রে আইসিইউ, অক্সিজেন এবং ডায়ালাইসিস সুবিধা থাকা প্রয়োজন।
প্রতিষেধক ও তার কার্যকারিতা
বাংলাদেশের একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ৮২ প্রজাতির সাপের মধ্যে ২৮টি বিষধর। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানভিত্তিক তথ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রকুইস্টে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাটি। এতে বলা হয়েছে, সাপের ধরনভেদে অ্যান্টিভেনমের পরিমাণ ও প্রয়োগও ভিন্ন। যেমন গোখরার কামড়ে ১০০-২০০ মিলিলিটার এবং চন্দ্রবোড়ার ক্ষেত্রে ১০০-৮০০ মিলিলিটার।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রয়োগ করা অ্যান্টিভেনম কার্যকর হচ্ছে শুধু চন্দ্রবোড়া, গোখরা ও ক্রেইটজাতীয় সাপের বিষের বিরুদ্ধে। সামুদ্রিক সাপ, গ্রিন পিট ভাইপার, বিরলজাতের ক্রেইটসহ অন্য কিছু বিষধর সাপের দংশনে এটি অকার্যকর। বাংলাদেশে গোখরার তিনটি এবং ক্রেইটের পাঁচটি প্রজাতি রয়েছে। বর্তমানে দেশে গ্রিন পিট ভাইপারের বিষের প্রতিষেধক খুবই জরুরি। এটা কাছাকাছি দেশের মধ্যে থাইল্যান্ডে তৈরি হয়। তবে সেটা আমদানির অনুমতি নেই। অন্যদিকে সামুদ্রিক সব সাপের বিষ মারাত্মক ক্ষতিকর হলেও দেশে এর প্রতিষেধক পাওয়া যায় না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাপের একক প্রজাতির জন্য মনোভ্যালেন্ট এবং দুই বা ততোধিক প্রজাতির জন্য পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম ব্যবহৃত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ব্যবহৃত পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম সব বিষধর সাপের ক্ষেত্রে শতভাগ কার্যকর নয়। এ জন্য স্থানীয় সাপের বিষের ভিত্তিতে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা অপরিহার্য। সার্বিকভাবে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় সাপের দংশনের বিষক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে অপর্যাপ্ত বলে মূল্যায়ন করেছে ডব্লিউএইচও।
অ্যান্টিভেনমের প্রাপ্যতার সংকট
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছর অ্যান্টিভেনমের দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে। দেশে এ প্রতিষেধক বাজারজাত করে একটিমাত্র ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। তাদের আমদানি করা অ্যান্টিভেনম ভারতের তামিলনাড়ুতে উৎপাদিত। ভারত থেকে বাল্ক পরিমাণে তরল আমদানি করে দেশীয় প্রতিষ্ঠানটি ভায়ালে ভরে বাজারজাত করে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিষয়ক সরকারি কার্যক্রমের কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) বিদ্যমান না থাকায় এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিভেনম সরবরাহ করা হচ্ছে না। হাসপাতালগুলোকে নিজ উদ্যোগে কিনতে বলা হয়েছে। বিষধর সাপের দংশনে আহত রোগীদের চিকিৎসায় বছরে ১০ থেকে ২০ লাখ ভায়াল অ্যান্টিভেনমের প্রয়োজন।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ টক্সিকোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ ফায়েজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাধীনতার আগে ১৯৬৭ সালে পাকিস্তানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্টিভেনম উৎপাদন করেছিল। বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের উদ্যোগ নেওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে। মুন্সিগঞ্জে সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) নতুন কারখানায় অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।
অ্যান্টিভেনমের অসম প্রাপ্যতা প্রসঙ্গে ডা. ফায়েজ বলেন, চিকিৎসা খাতে সাপের দংশনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। হাসপাতালভিত্তিক তথ্যও আংশিক। কোথায় কত মানুষ সাপের দংশনে মারা যাচ্ছে, তা পূর্ণাঙ্গভাবে জানা নেই। ফলে অ্যান্টিভেনম সমানভাবে বিতরণ করা হয় না। আর আমদানিনির্ভরতা, বরাদ্দ ও দামে সংকট সৃষ্টি হয়।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অ্যান্টিভেনমের ঘাটতি রয়েছে। উচ্চ আদালত গত আগস্টে উপজেলা পর্যায়ে অ্যান্টিভেনম সরবরাহের জন্য সরকারের প্রতি নির্দেশনা দেন। ২৮ অক্টোবরের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। ওই নির্দেশনার পর দুই মাস পেরোলেও অনেক এলাকায় এখনো অ্যান্টিভেনম পাওয়া যাচ্ছে না বা খুব কম মজুত রয়েছে বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘অ্যান্টিভেনমের সংকট একেবারে নেই, তা বলা ঠিক হবে না। যেখানে ঘাটতি আছে, সেখানকার হাসপাতালকে পাশের উপজেলা থেকে সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। যে ওষুধ প্রতিষ্ঠান এটি তৈরি করছে, তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা উৎপাদন বাড়াচ্ছে। দু-তিন মাসের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভেনম রিসার্চ সেন্টারে দেশীয় অ্যান্টিভেনম তৈরির লক্ষ্যে কাজ চলছে। সেখানে ইতিমধ্যে রাসেলস ভাইপারের অ্যান্টিভেনম তৈরির পর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হয়েছে। এতে সাফল্যও পাওয়া গেছে বলে সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা জানিয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সমন্বয়ক ডা. আবদুল্লাহ আবু সাঈদ বলেন, ‘সেন্টারের কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটি অনুমোদিত হলে আগামী তিন বছর অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের লক্ষ্যে গবেষণা চালিয়ে একটা ফল পাওয়া যাবে। এরপর উৎপাদনে যেতে ইডিসিএলের হয়তো আরও কয়েক বছর সময় লাগবে।’

গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের ‘কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা’ (সিএইচসিপি) বেতন পাচ্ছেন না আট মাস ধরে। পরিবার নিয়ে তাঁরা দুঃসহ আর্থিক অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, স্বাস্থ্য খাতের পাঁচ বছর মেয়াদি অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) চালু না...
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
৯ ঘণ্টা আগে
পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পছন্দ, বিসিএস ও মেধাক্রমসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অটোমেশন পদ্ধতিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদনের ভিত্তিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা জরুরি।
১১ ঘণ্টা আগে