Ajker Patrika

অপবাদ সহ্য করতে না পেরে হত্যা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২২, ১১: ৫৮
অপবাদ সহ্য করতে না পেরে হত্যা

টাঙ্গাইলে চুরির অপবাদ সহ্য করতে না পেরে কাঠ ব্যবসায়ী সামসুল হককে পিটিয়ে হত্যা করেন তাঁর দোকানের সাবেক কর্মচারী ইয়াছিন মিয়া। গতকাল রোববার দুপুরে এ ঘটনার দেড় মাস পর হত্যাকারী ওই যুবককে গ্রেপ্তারের পর এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রহস্য উদ্‌ঘাটনের কথা জানান টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার।

এর আগে গত শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ইয়াছিন মিয়া (১৯) উপজেলার গদুরগাতি গ্রামের বাসিন্দা।

জেলা পুলিশের সভাকক্ষে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ২৪ জানুয়ারি পৌর শহরের সন্তোষ বাগবাড়ি যক্ষ্মা হাসপাতালের সামনে থেকে সামসুল হক (৫৫) নামের এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন তাঁর ভাই শামিম আল মামুন বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন।

মামলাটি টাঙ্গাইল থানা-পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে। পরে সামসুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ইয়াছিন মিয়াকে (১৯) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

এ সময় পুলিশ সুপার আরও জানান, ইয়াছিন মিয়া ৬ মাস আগে সামসুল হকের কাঠের দোকানে মাসিক ১ হাজার ৫০০ টাকা বেতনে কাজ করতেন। তাঁকে বিভিন্ন সময় চুরির অপবাদ দেওয়া হতো। সর্বশেষ সাত মাস আগে সামসুল হকের দোকান থেকে একটি কুড়াল হারিয়ে যায়। সেই চুরির অপবাদও ইয়াছিনকে দেওয়া হয়। তাঁর বাবাকে ডেকে এনে মারধর করানো হয়। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে দোকান ছেড়ে চলে যান ইয়াছিন।

ঘটনার দিন রাতে সামসুল হক মোবাইল ব্যবহার করতে করতে বাড়ি ফিরছিলেন। ওই সময় ইয়াছিন লাঠি দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করেন। সামসুল মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর ইয়াছিন চলে যান। কিছুক্ষণ পর ইয়াছিন এসে দেখতে পান সামসুল সেখানে জীবিত অবস্থায় পড়ে আছেন। পরে পুনরায় তাঁকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন এবং সামসুলের মোবাইল ফোন নিয়ে চলে যান।

এ ঘটনার দীর্ঘদিন পর সামসুলের ফোনে অন্য সিম ব্যবহার করে কথা বলেন ইয়াছিন। সেই সূত্র ধরে ইয়াছিনের খোঁজ পায় পুলিশ। পরে গতকাল রোববার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। এই হত্যাকাণ্ড তিনি একাই ঘটিয়েছেন বলেও জানান পুলিশ সুপার। পরে তাঁকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ জানুয়ারি রাত থেকে নিখোঁজ হন শামসুল হক। পরদিন সোমবার বিকেলে বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সামনের পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর মঙ্গলবার রাতে নিহত সামসুলের ভাই মো. শামীম আল মামুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত