Ajker Patrika

বাজার থেকে হঠাৎ উধাও বোতলজাত সয়াবিন তেল

পাবনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ০৮
বাজার থেকে হঠাৎ উধাও বোতলজাত সয়াবিন তেল

পাবনার হাট-বাজার থেকে হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গেছে বোতলজাত সয়াবিন তেল। অভিযোগ উঠেছে, বোতলজাত সয়াবিন তেল ভেঙে কেজিদরে বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। আবার কিছু দোকানে প্যাকেটজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেল লিটার প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা মূল্য বৃদ্ধিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ক্রেতারা।

ঈদের আগে যখন প্রিয়জনের জন্য পোশাক কিনতে ক্রেতারা যখন বিপণিবিতানগুলোতে ভিড় করছেন, তখন পাবনা পৌর সদরের শালগাড়িয়া মহল্লার বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুল জলিল সয়াবিন তেল কিনতে দোকানে দোকানে হন্যে হয়ে ঘুরছেন। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পাঁচ লিটার তেলের বোতল কেনার জন্য শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় দোকানে দোকানে ঘুরলাম, কিন্তু তেল কিনতে পারিনি। পরিচিত এক দোকানির কাছে অনুরোধ করে এক লিটার তেল কিনে এখন বাড়ি ফিরছি।’

জলিলের মতো শত শত ক্রেতা গত কয়েক দিন ধরে ঘুরে ঘুরেও তেল কিনতে পারেননি। ঈদ যত এগিয়ে আসছে, সংকটও তত বাড়ছে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, প্রতি কেজি তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বেশি দামে বিক্রি করছেন সয়াবিন তেল। ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট দেখিয়ে হঠাৎ করেই দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।

ভোক্তাদের অভিযোগ, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এমন পরিস্থিতি চললেও প্রশাসনের তরফ থেকে নেওয়া হয়নি কোনো অভিযান বা উদ্যোগ। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে চাহিদা বাড়লেও তেল আমদানিকারী কোম্পানিগুলো সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় ক্রেতাদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে।

পাবনা শহরের আব্দুল হামিদ রোডের নান্নু স্টোরের মালিক মন্টু হোসেন বলেন, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কোম্পানিগুলো এখন অর্ধেক তেল সরবরাহ করছে। অথচ ঈদের আগে চাহিদা বেড়েছে। বিভিন্ন কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ধরনা দিয়েও চাহিদামতো বোতলজাত তেল পাওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে শহরের রাধানগর এলাকার রাজিউর রহমান বলেন, ঈদ এবং আগামী এক মাসের জন্য আট লিটার সয়াবিন তেল প্রয়োজন। গত দুই দিন পাবনার বড় বাজার, আব্দুল হামিদ রোডের বিভিন্ন দোকান ঘুরেও এক বোতল তেল কিনতে পারেননি তিনি। অবশেষে এক পরিচিত দোকানিকে অনুরোধ করে ৮০০ টাকায় ৫ লিটারের এক বোতল তেল কিনেছেন তিনি।

পাবনা শহরের পৈলানপুর মোড়ের খুচরা ব্যবসায়ী টিটু হোসেন বলেন, পাইকারি বাজারে তেল পাওয়া যাচ্ছে না বলে ক্রেতাদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। বোতলজাত তেলের সংকট থাকলেও খোলা তেলের সংকট নেই।

এ ব্যাপারে সিটি গ্রুপের একজন বিক্রয় প্রতিনিধি (নাম প্রকাশ না করার শর্তে) বলেন, তাঁর কর্ম এলাকায় স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১২০ কেস তেলের প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন কোম্পানি এ চাহিদা পূরণ করে। হঠাৎ করে খোলা তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ কোম্পানি বোতলজাত তেল সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এ কারণেই সংকট তৈরি হয়েছে।

পাবনা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক এ বি এম ফজলুর রহমান বলেন, আকস্মিক এই সংকট সৃষ্টি হওয়ার পর তাঁরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই সংকটের জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দায়ী নন। তেল কোম্পানিগুলো কারসাজি করে এই সংকট তৈরি করেছে।

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সহকারী পরিচালক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘বোতলজাত তেলের চেয়ে খোলা তেলের দাম বেশি হওয়ায় কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। বিষয়টি আমরা জানার পর বাজারে মনিটরিং শুরু করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত