Ajker Patrika

জহির রায়হান

সম্পাদকীয়
জহির রায়হান

মাত্র ৩৭ বছরের স্বল্পায়ু জীবনে বাংলা কথাসাহিত্য ও চলচ্চিত্র জগতের এক কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব জহির রায়হান। ১৪ বছর বয়সে কবিতা দিয়ে লেখালেখিতে হাতেখড়ি। এরপর তিনি কথাসাহিত্যে হাত পাকান।

স্কুলজীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে কলকাতায়। ১৯৫৩ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হলেও, পরের বছর অর্থনীতি ছেড়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৫৮ সালে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৫০ সালে তিনি ‘যুগের আলো’ পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন। পরে তিনি ‘খাপছাড়া’, ‘যান্ত্রিক’, ‘সিনেমা’ ইত্যাদি পত্রিকায় কাজ করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি ‘প্রবাহ’ পত্রিকার সম্পাদক হন। একসময় চলচ্চিত্রকেই শিল্পচর্চার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেন এবং হয়ে ওঠেন এ দেশের চলচ্চিত্র জগতের চিরস্মরণীয় নাম।

তাঁর লেখা ‘শেষ বিকেলের মেয়ে’, ‘হাজার বছর ধরে’, ‘আরেক ফাল্গুন’সহ অন্যান্য বই এখনো পাঠকের পড়ার তৃষ্ণা মেটায়। ১৯৫৭ সালে চলচ্চিত্র জগতে তাঁর পদার্পণ ঘটে ‘জাগো হুয়া সাভেরা’ ছবিতে সহকারী হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে। আর ১৯৬১ সালে তিনি পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ‘কখনো আসেনি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। ১৯৬৪ সালে তিনি উর্দুতে পাকিস্তানের প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র ‘সঙ্গম’ নির্মাণ করেন। এর পরের বছর তিনি নির্মাণ করেন প্রথম সিনেমাস্কোপ চলচ্চিত্র ‘বাহানা’।

ভাষা আন্দোলন এবং উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি কলকাতায় চলে যান এবং সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে প্রচারাভিযান ও তথ্যচিত্র নির্মাণ শুরু করেন। বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার ওপর তাঁর নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘স্টপ জেনোসাইড’ একটি অসাধারণ কাজ।

চলচ্চিত্রের বিরলপ্রজ এই ব্যক্তি ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি নিখোঁজ ভাই শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারসহ কয়েকজন বুদ্ধিজীবীকে মিরপুর ১২ নম্বর সেক্টরের কোথাও বন্দী করে রাখা হয়েছে, এ রকম খবর পেয়ে তিনি বিহারি-অধ্যুষিত মিরপুরে যান। সেখানেই তাঁকে হত্যা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত