Ajker Patrika

ফের ঝুঁকি নিয়ে চলছে নৌযান

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ২৫
ফের ঝুঁকি নিয়ে চলছে নৌযান

চলতি বছরের ২৭ আগস্ট শুক্রবার দিনের আলো নেভার সঙ্গে সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিভেছিল ২৩ জনের জীবনপ্রদীপ। সেদিন বিজয়নগর উপজেলার চর ইসলামপুর ইউনিয়নের লইস্কা বিল এলাকায় ঘটে মর্মান্তিক নৌ দুর্ঘটনা। একটি যাত্রীবাহী নৌকার সঙ্গে বালিবোঝাই বাল্কহেডের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণহানি হয় এই ২৩ জনের। এরপর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।

ঝুঁকি এড়াতে নির্দিষ্টসংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে আদেশ দেওয়া হয়। কিছুদিন প্রশাসনের এই নির্দেশনা মেলে চললেও এখন আবার পুরোনো রূপে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল নিয়ে চলাচল করছে নৌকাগুলো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ঘাট থেকে সদরের আনন্দবাজার ঘাট পর্যন্ত প্রতিদিন ১৪টি ইঞ্জিনচালিত যাত্রীবাহী নৌকা চলাচল করে। এই নৌপথে চলাচলকারী কোনো নৌকার রুট পারমিট নেই। রুট পারমিট নিলে বয়া, লাইফ জ্যাকেট কিনে নৌকায় রাখতে হয়। অতিরিক্ত খরচের কারণে নৌকার মালিকেরা রুট পারমিট নিতে চাননি।

গত ২৭ আগস্ট নৌ-দুর্ঘটনার পর এই রুটে চলাচলকারী নৌকাগুলোকে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন করতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যাত্রীবাহী নৌকায় ১০-১২ জন যাত্রী নিতে বলা হয়। মালামাল বহন করলে তার সঙ্গে সমন্বয় করে যাত্রী নিতে হবে। এই নিষেধাজ্ঞার পর মাস দেড়েক তা মেনে চলে নৌকার মালিকেরা। কিন্তু সম্প্রতি আবার আগের মতো অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামালসহ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে নৌযানগুলো। এতে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন যাত্রীরা।

অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন করার বিষয়ে মাসুদ মিয়া নামের এক নৌকার মাঝি বলেন, ‘প্রশাসন থেকে যতটুকু যাত্রী নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তা আমরা মেনে চলার চেষ্টা করি। কিন্তু এত কম যাত্রী নিলে আমরা কীভাবে চলব? এ জন্য অনেকেই অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছেন।’

নজরুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, ‘অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব বিষয়ে মাঝিদের জিজ্ঞেস করলে তাঁরা বলেন লোকসানের মধ্যে থাকবেন। আমাদের তো আর কিছু করার নেই, গন্তব্যে যেতে তো হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরফান উদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নৌ-দুর্ঘটনাটি আমি যোগদান করার আগে। আমি যোগদানের পর নৌকার মালিক ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আলোচনা করেছি। আলোচনা শেষে আমরা বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর মধ্যে একটি ছিল প্রত্যেক নৌকায় ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী বহন করবে। যদি মালামাল বহন করা হয়, তখন যাত্রীসংখ্যা আনুপাতিক হারে আরও কমাতে হবে।’

ইরফান উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বিষয়টি তদারক করতে একটি টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছিল। এই টিমে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা রয়েছেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় হয়তো চেয়ারম্যানের কথা তাঁরা শুনছেন না। অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহনের বিষয়টি দেখতে থানা-পুলিশকে দেখতে বলা হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ামিন হোসেন বলেন, ‘আমি আসার আগেই নৌ-দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। নৌ-চলাচলের বিষয়টি আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত