Ajker Patrika

মাওলানা আবদুর রশিদ

সম্পাদকীয়
মাওলানা আবদুর রশিদ

ছিলেন একজন আজীবন সংগ্রামী মানুষ। মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও তিনি রক্তে-মাংসে আধুনিক চিন্তার অধিকারী ছিলেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ৩টায় পূর্ববঙ্গ গণপরিষদের অধিবেশন শুরু হয়। মাত্র ঘণ্টা কয়েক আগে ছাত্রদের ওপর গুলি চালানোর প্রতিবাদে অধিবেশন সেদিনের জন্য স্থগিত রাখার দাবি জানান তিনি। একুশের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আইন পরিষদে এটিই প্রথম প্রতিবাদ।

একই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে তিনি পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করে মুসলিম লীগ থেকে পদত্যাগ করেন। শুধু তা-ই নয়, ভাষা আন্দোলনের কারণে দীর্ঘদিন কারাবরণও করেন। এরপর তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগে যোগ দেন।

তিনি প্রথম বাঙালি হিসেবে পার্লামেন্টে বাংলা ভাষায় বক্তৃতা করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন। লাহোরের এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সেরা বক্তার স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ‘তর্কবাগীশ’ উপাধি লাভ করেছিলেন।

১৯১৯ সালে মাওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ এন্ট্রান্স পরীক্ষার্থী। তখন খেলাফত আন্দোলনে উপমহাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন বেশ সরগরম। ছাত্র তর্কবাগীশ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে খেলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

১৯২২ সালের ২৮ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা হাটে ব্রিটিশ পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়ে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন। ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনী এই আন্দোলন দমন করতে পিছপা হয়নি। আন্দোলনে অনেক মানুষ আহত-নিহত হন। তিনি গ্রেপ্তার হন এবং দীর্ঘ এক বছর জেলে বন্দী থাকেন। এ ঘটনা ঐতিহাসিক সলঙ্গা বিদ্রোহ নামে খ্যাত।

১৯৫৬ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গবন্ধু তখন যুগ্ম সম্পাদক, পরে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তর্কবাগীশের সঙ্গে।

একাত্তরের স্বাধীনতার পর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি প্রথম মাদ্রাসা শিক্ষাকে আধুনিকীকরণ এবং বিজ্ঞানসম্মত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার তরুটিয়া গ্রামে ১৯০০ সালের ২৭ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত