Ajker Patrika

কেকের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সংগীতাঙ্গন

আপডেট : ০২ জুন ২০২২, ১৫: ০২
কেকের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সংগীতাঙ্গন

মঙ্গলবার রাতে কলকাতার নজরুল মঞ্চে কনসার্ট শেষে হোটেলে ফিরে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান ভারতের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। তিনি কেকে নামে পরিচিত। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ভারতসহ বাংলাদেশেও নেমে আসে শোকের ছায়া। শিল্পী-কলাকুশলী থেকে ভক্ত—সবাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেন। অনেকেই কেকের ছবি শেয়ার করেছেন, অনেকেই কেকের গাওয়া গান শেয়ার করেছেন।

ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে গায়কের।

গতকাল বিকেলে কলকাতার রবীন্দ্র সদনে গান স্যালুট দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় গায়ককে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। মমতার পরেই গায়কের কফিনে মালা দেন তাঁর স্ত্রী জ্যোতি কৃষ্ণা ও পুত্র নকুল কৃষ্ণা কুন্নাথ। ফুলেল শ্রদ্ধা শেষে গান স্যালুট দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় কেকে-কে। ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে উড়োজাহাজে করে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বাইয়ে। আজ তাঁর শেষকৃত্য হবে মুম্বাইয়ের ভারসোভা মহাশ্মশানে।

নব্বইয়ের দশকে কুমার শানু, উদিত নারায়ণরা যখন বলিউড কাঁপাচ্ছেন, সেই সময়ে কেকের উত্থান। কণ্ঠের তারুণ্য আর ব্যতিক্রমী মেজাজ আলাদা করে চিনিয়েছিল তাঁকে। নতুন প্রজন্ম সেই কণ্ঠেই খুঁজে পেয়েছিল সময়ের স্পন্দন। ‘ইয়ারো’ যেমন বলে বন্ধুত্বের কথা, তেমনই ‘তু হি মেরি শাব হ্যায়’ গানে প্রেমের ঘোষণা। আবার ‘সাচ ক্যাহে রাহা হ্যায়’ গানে প্রেম ভাঙার যন্ত্রণা। কৈশোর, তারুণ্যের প্রায় সব আবেগই ধরা পড়েছে তাঁর গানে।

কেকের এই অকালপ্রয়াণ মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে ভক্তদের। একটা প্রজন্ম তাঁর গান শুনে কিশোর থেকে পরিণত হয়েছেন। তাঁদের প্রেমের শুরু কিংবা ভাঙন, দুই মুহূর্তেরই সাক্ষী কেকের গান।

কলকাতার নজরুল মঞ্চে জীবনের শেষ কনসার্টে ভক্তদের সামনে কেকেম্যানেজারের ভাষ্য
কেকের সার্বক্ষণিক সঙ্গী ‍ছিলেন ম্যানেজার রীতেশ ভাট। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, কলকাতার নজরুল মঞ্চ থেকে তড়িঘড়ি করে বের হচ্ছেন কেকে। কেকের ম্যানেজার সংবাদমাধ্যমে পরবর্তী সময়টা বর্ণনা করেন। তিনি জানান, গাড়িতে উঠে কেকে বলেন, ‘আমার ঠাণ্ডা লাগছে, এসি বন্ধ করো।’ হাতে-পায়ে টান ধরার কথাও বলেন কেকে।

রীতেশ ভাট জানান, নজরুল মঞ্চ থেকে ২০ মিনিটের দূরত্ব ওবেরয় গ্র্যান্ড হোটেলে ছিলেন কেকে। লবিতে ভক্তরা তাঁকে আটকে ধরেন। আবদার জানান সেলফির। কেকে করজোড়ে বলেন, ‘শরীরটা ভালো লাগছে না, আগামীকাল ছবি তুলব, কথা দিলাম।’ এরপর হোটেল রুমে প্রবেশ করেন তাঁরা।
হোটেল রুমের সোফায় বসে বমি করেন কেকে, তারপর মুখথুবড়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সেই সময়ই অজ্ঞান হয়ে পড়েন কেকে। দ্রুত হোটেলকর্মীদের সহযোগিতায় কেকেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা অজানা কেকে

  • কেকের জন্ম দিল্লিতে এক মালায়লি পরিবারে। দিল্লিতেই বেড়ে ওঠা। বাবা সি এস নায়ার ও মা কুনাথ কনকাবলী দুজনেই ভালো গাইতেন।
  • কেকে কখনো কোথাও গান শেখেননি। কিশোর কুমার ছিলেন তাঁর অনুপ্রেরণা।
  • ১৯৯৬ সালে তামিল সিনেমা ‘কদাল দেশম’-এ এ আর রাহমান তাঁকে প্রথম সিনেমায় গান গাওয়ার সুযোগ করে দেন। একই বছর গুলজারের ‘মাচিস’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে অভিষেক হয় তাঁর।
  • বলিউডে পা দেওয়ার আগেই কেকে ১১টি ভাষায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার জিঙ্গেল গেয়েছেন।
  • হিন্দিতে ৫০০টিরও বেশি এবং অন্যান্য ভাষায় দুই শতাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।
  • পেস্ট্রি ও দক্ষিণ ভারতীয় খাবার ভালোবাসতেন। পছন্দ করতেন জিনস ও টি-শার্ট।
  • ১৯৯১ সালে দীর্ঘ দিনের প্রেমিকা জ্যোতিকে বিয়ে করেন। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে নকুলকৃষ্ণ কুন্নাথ ও মেয়ে তামারা কুন্নাথ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার নিষিদ্ধ করল বিমান বাংলাদেশ

আমাকে ধর্ষণের সময় পাশে দাঁড়িয়ে দেখছিল দুই যুবক: ধর্ষণের শিকার তরুণী

বংশরক্ষায় মৃত ছেলের শুক্রাণু চান মা, সংরক্ষণের নির্দেশ মুম্বাই হাইকোর্টের

যেখানে মিলেছে ‘কামসূত্র’ নির্মাতা মীরা নায়ার ও তাঁর পুত্র মামদানির সংগ্রাম

ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভারতের সংসদীয় কমিটির দীর্ঘ বৈঠক

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত