Ajker Patrika

জনশুমারির জন্য ব্যয়বহুল ট্যাবেই ভরসা রাখল বিবিএস

আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২২, ০৮: ৫২
জনশুমারির জন্য ব্যয়বহুল ট্যাবেই ভরসা রাখল বিবিএস

শেষ পর্যন্ত দেশের মানুষের সংখ্যা হিসাব করতে ব্যয়বহুল ট্যাবেই ভরসা রাখল বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস। অনেক সমালোচনা ও বির্তকের পর প্রায় সাড়ে চার শ কোটি টাকা খরচে কেনা প্রায় চার লাখ ট্যাব দিয়েই মাঠপর্যায়ে জনশুমারির কাজ করবেন সংশ্লিষ্টরা। ত্রুটি, জাল-জালিয়াতির মুখে দফায় দফায় সরকারের ক্রয় কমিটির দুয়ার থেকে ফিরে আসা প্রশ্নবিদ্ধ ট্যাব কেনার প্রস্তাবটি শেষ পর্যন্ত অনুমোদন পেয়েছে। আর এ কাজ পেয়েছে ওয়ালটন ডিজি-টেক লিমিটেড। গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে মোট ১২টি প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।

জানা যায়, মাত্র এক দশকের ব্যবধানে জনশুমারির খরচ বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৭ গুণ। এর আগে লাখ লাখ ট্যাব কেনাকাটা, ভ্রমণসহ নানা খরচের খাত নিয়ে বিতর্কে পিছিয়ে যায় জনশুমারি কার্যক্রম। জনশুমারির মাত্র কয়েক দিনের কাজের জন্য এত বিপুল ব্যয়ে আদৌ এত ট্যাব কেনার প্রয়োজন আছে কি না, এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এমনকি এসব নিয়ে বিবিএসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই বেনামে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে এ ট্যাব কেনা থামাতে বলেছিলেন।

মূলত সরকারের বহুল প্রতীক্ষিত জনশুমারি প্রকল্পের কাজ ট্যাব কেনা জটিলতায় থেমে যায়। এক দশক পর ষষ্ঠ জনশুমারি প্রথমে হওয়ার কথা ২০২১ সালের ২ থেকে ৮ জানুয়ারি। পরে সেটি প্রায় নয় মাস পিছিয়ে ২৫ থেকে ৩১ অক্টোবর সময় পুনর্নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সে মেয়াদেও জনশুমারি করতে পারেনি বিবিএস। এরপর ২৫ থেকে ৩১ ডিসেম্বর দেশব্যাপী জনশুমারি ও গৃহগণনার পরিকল্পনা হয়। তবে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগমুহূর্তে ট্যাব কেনা নিয়ে শুরু হয় টানাপোড়েন। এক-দুবার নয়, ৩ লাখ ৯৫ হাজার ট্যাব কিনতে বিবিএসের ত্রুটিপূর্ণ প্রস্তাব চারবার ফিরিয়ে দেয় সরকারের ক্রয় কমিটি।

tab1এসব ট্যাব কেনায় মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৩৭ কোটি ১২ লাখ ১০ হাজার ৩৯৫ টাকা। বিবিএস ট্যাব কেনার প্রস্তাবটি ক্রয় কমিটির কাছে চারবার পাঠানোর পর অবশেষে অনুমোদন দেওয়া হয়। দর প্রস্তাবে জড়িত দুটি প্রতিষ্ঠান ফেয়ার ইলেকট্রনিকস এবং ওয়ালটন ডিজি-টেকের মধ্যে কাকে বেছে নেয়া হবে সেটিই ছিল মূল জটিলতা। এর মধ্যে ফেয়ার ইলেকট্রনিকসের পক্ষ থেকে ৩ লাখ ৯৫ হাজার স্যামসাং ব্র্যান্ডের ট্যাব ৫৪৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় এবং ওয়ালটনের পক্ষে ৪০২ কোটি টাকায় ট্যাব কেনার প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু বিবিএস ১৪৬ কোটি টাকা বেশি দরে ফেয়ার ইলেকট্রনিকসকেই কাজ দিতে চেয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। অন্যদিকে, বিবিএস ওয়ালটনের ট্যাবের জন্য অপেক্ষাকৃত কম দর প্রস্তাব করলেও তাদের প্রস্তাবে নানা অভিযোগে শোকজ করে। আর এতেই অনিশ্চিত হয়ে যায় প্রকল্পের আসল কার্যক্রম। যদিও বর্তমানে ওয়ালটনের দেওয়া যে দর প্রস্তাবটি সরকার অনুমোদন দিয়েছে সেখানেও ওয়ালটনের আগের প্রস্তাবের চেয়ে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা বেশি।

এসব নিয়ে জনশুমারির প্রকল্প পরিচালক কবির উদ্দিন আহম্মদের মুঠোফোনে কয়েক দফা কল করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

আরও ১১ প্রস্তাব অনুমোদন
জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পের ট্যাব কেনার বাইরে আরও ১১টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ক্রয় কমিটির সভায়। এর মধ্যে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুটি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দুটি, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দুটি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের দুটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রস্তাব রয়েছে। ট্যাব কেনাসহ ক্রয় কমিটির অনুমোদিত ১২টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ১,৭০৬ কোটি ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৭৮ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুরোনো রাউটার ফেলে না দিয়ে যে কাজে ব্যবহার করতে পারেন

পাকিস্তানের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার সামনে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে ভারত: ব্রিটিশ বিশ্লেষক

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

প্রশাসনিক আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ ভুল, আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধ সঠিক: বিএনপি

প্রথম ভাষণে গাজা প্রসঙ্গে যা বললেন পোপ লিও চতুর্দশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত