Ajker Patrika

ঢেউখেলানো কণ্ঠ এক

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ৫৭
ঢেউখেলানো কণ্ঠ এক

যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, তখনো রেডিও জনপ্রিয় নয়। জনপ্রিয় হলো রেকর্ড। গান রেকর্ড করার ক্ষেত্রে বাঙালি মুসলমানরা ছিল পিছিয়ে। আবুল কাসেম মল্লিক গান করতে ভালো বাসতেন। কিন্তু এই নামে গান করলে রেকর্ড বিক্রি হবে না বলে সন্দেহ করল গ্রামোফোন কোম্পানি। তাই তাঁর নাম হলো কে মল্লিক। ‘লোহারই বাঁধনে বেঁধেছ সংসার’… তাঁর গাওয়া একটি জনপ্রিয় গান। কাজী নজরুল ইসলামের ‘আমারে চোখ ইশারায়’ আর ‘বাগিচায় বুলবুলি তুই ফুল শাখাতে’ গান দুটি দিয়ে প্রথম রেকর্ডও করেন কে মল্লিক।

দ্বিতীয় মুসলমান গায়ক আব্বাসউদ্দীন। তাঁর সুললিত কণ্ঠে মদিরা ছিল। কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিংয়ে চাকরি করতেন তিনি। থাকতেন বউবাজার স্ট্রিটে এক মেসে। আবদুল আহাদ প্রায়ই বিকেলের দিকে আব্বাসউদ্দীনের মেসে যেতেন। একদিন বিকেলে আবদুল আহাদ আসতেই আব্বাসউদ্দীন বললেন, ‘চলো, আমার সঙ্গে। আমাকে গান করতে হবে এক জায়গায়।’

ক্যামবেল হাসপাতালে কোনো এক প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আয়োজনে গান হবে। তখন গাইছিলেন সুধীরলাল চক্রবর্তী। এরপর মঞ্চে উঠলেন আব্বাসউদ্দীন। তখনো মঞ্চে মাইক্রোফোনের প্রচলন হয়নি। খালি গলায়ই গাইতে হতো গান। আব্বাসউদ্দীন ধরলেন ‘আমার হাড়কালা হলোরে, দেহ কালার লাগি…’। প্যান্ডেলের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছড়িয়ে গেল ঢেউখেলানো কণ্ঠ। স্তব্ধ হয়ে মানুষ শুনতে লাগল গান। গান শেষ হতেই করতালিতে ফেটে পড়ল চারদিক।

সেটা মুসলিম জাগরণের সময়। আব্বাসউদ্দীন তখন পল্লির গানগুলোকে সামনে নিয়ে আসছেন। উত্তর বাংলার ভাওয়াইয়া, পূর্ব বাংলার ভাটিয়ালি, পল্লিগীতি, মুর্শিদি, মারফতি, সারি ইত্যাদি গান সুধীসমাজে পরিচিত হলো আব্বাসউদ্দীনের মাধ্যমেই। মুকুন্দ দাসের পর আব্বাসউদ্দীনই ছিলেন প্রকৃত গণশিল্পী। পল্লির হাজার হাজার মানুষের সামনে তিনি গান করেছেন।

আব্বাসউদ্দীনের কণ্ঠে কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশীর ঈদ…’ গানটি এখন ধ্রুপদি সংগীতে পরিণত হয়েছে।

সূত্র: আবদুল আহাদ, আসা যাওয়ার পথের ধারে, পৃষ্ঠা ৪৬-৪৮

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএসএফের হাতে আটক বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় মিলেছে

বুড়িগঙ্গা থেকে তরুণ-তরুণীর হাত বাঁধা লাশ উদ্ধার

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাইরান কাজীর বিষয়ে ইলন মাস্কের মন্তব্যে বিস্ময়

অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশকালে বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তাকে আটকের দাবি বিএসএফের

মালয়েশিয়ায় স্থায়ী বসবাসের সুযোগ, আবেদন ফি মাত্র ১৪ হাজার টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত