আহমেদ শরীফ
এখন হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগী নেই; বরং ডায়রিয়া রোগীই বেশি। চিকিৎসকেরা যথারীতি বলছেন দূষিত পানি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার এর জন্য দায়ী। সেটা যৌক্তিক, তবে তাই বলে যে হারে দেশজুড়ে ডায়রিয়া বাড়ছে, তা কি অস্বাভাবিক চিত্র নয়?
সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে খাওয়ার পানি, খাদ্যসামগ্রী ও ডায়রিয়ার জীবাণু নিয়ে একটা গবেষণা এখন সময়ের দাবি। সেই সঙ্গে সময় পেরিয়ে যাচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে গভীর গবেষণার। রমজান শুরুর আগে থেকেই শুরু হয়েছে সব ধরনের সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। শুকনো সব ধরনের খাবারের দাম নিয়মিত বিরতিতেই বেড়ে চলেছে। বিস্কুট, চানাচুর, চকলেট, আইসক্রিম, তেল, লবণ, চাল, ডাল, চিনি, আটাসহ কোন পণ্যটার দাম বাড়েনি? এ নিয়ে কোনো জবাবদিহি করতে হচ্ছে না বড় বড় কোম্পানিকে!
পরিস্থিতি এখন এমন যেন ‘দ্রব্যমূল্যের ডায়রিয়া’ হয়েছে। মানুষের ডায়রিয়া নিরাময়যোগ্য, তবে দ্রব্যমূল্যের ডায়রিয়া যেন নিরাময় করা সম্ভবই না! দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়বোধ কতটা তা এখন বিবেচনার বিষয়। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে আমাদের দেশে সবজির দাম বাড়বে, তা তো মেনে নেওয়া যায় না। বিভিন্ন সবজির যে লাগামহীন দাম আছে এখনো, তার জন্য কৃষকেরা বরাবরই উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলেন। সেই কৃষকেরাও পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ধানসহ বিভিন্ন সবজি বিক্রি করে ন্যায্যমূল্য পান না। তাঁদের সবজি রাজধানীসহ বড় সব শহরে যেতে যেতে দাম বেড়ে হয় কয়েক গুণ।
মধ্যস্বত্বভোগীরা সব সময়ই ফায়দা নিয়ে থাকে। তবে এর জন্য পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজিও বিশেষভাবে দায়ী। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ট্রাক বা অন্য সব পরিবহনে সবজি যখন শহরে আসে, তখন রাস্তার নানা জায়গায় কৃষককে চাঁদা দিতে হয়। ব্যবসায়ীরা যখন সেই পণ্য কেনেন, তাঁকেও রাজধানী বা বড় শহরে যানবাহনে পণ্য নেওয়ার সময় চাঁদা দিতে হয়। আগে শুধু ক্ষমতাসীন দলের পাতি নেতারা এই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এখন পুলিশ, আনসার, বিজিবির সদস্যরাও চাঁদাবাজি করেন।
সেদিন একটা খবর দেখলাম। ফরিদপুরের হাইওয়ে পুলিশের এক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নতুন কাজে যোগ দিয়েই পড়েন বিপদে। প্রেস ব্রিফিং করতে গিয়ে লিখিত বক্তব্যের শেষ দিকে পুলিশ চাঁদাবাজি বন্ধ করবে—সেটা বোঝাতে গিয়ে তিনি পড়েন—‘হাইওয়ে পুলিশ ছাড়া অন্য কেউ চাঁদাবাজি করলে তার দায়ভার হাইওয়ে পুলিশ নেবে না।’ পরে এটা ভাষাগত ভুল উল্লেখ করে হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিব্রতবোধ করেন। নতুন ওসিকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় অন্য এলাকায়। প্রশ্ন হলো, এটা কি কেবলই ভাষাগত ভুল ছিল? এ ঘটনা আরও দুভাবে ভাবতে পারি আমরা। একটা হলো, হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তাদের চাঁদাবাজির গোপন খায়েশ এর মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। আরেকটি ভাবনা হলো, চাঁদাবাজি ঠেকাতে নতুন ওসির দৃঢ় মনোভাবকে শুরুতেই গুঁড়িয়ে দিতে এটা কোনো স্যাবোটাজ নয় তো? ঘটনা যেটাই হোক, পুলিশ এখন যে রাস্তায় বড় ধরনের চাঁদাবাজি করে, তাতে সন্দেহ নেই।
মিডিয়ায় কাজ করি বলে আমাকে রাষ্ট্র নিশ্চয়ই দুর্নীতি দমনের অধিকার দেয়নি। এর জন্য আলাদা সংস্থা আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে। তাদের ভূমিকাই মুখ্য। তবে এখন রক্ষকই ভক্ষক হয়ে উঠেছে। রাজধানীতে ভোরবেলা অথবা মাঝরাতে দেখা যায় অদ্ভুত কিছু দৃশ্য। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সার্জেন্ট বা ট্রাফিক পুলিশ পণ্যবাহী যানবাহন থেকে চাঁদা নেয়। এ কাজে তাদের সহায়তার জন্য এক বা একাধিক দালালকেও দেখেছি। তাদের নিয়ন্ত্রণ করবে কারা?
এবার স্পষ্ট করে বলতেই হয়, দ্রব্যমূল্যের যে ডায়রিয়া চলছে, তার চিকিৎসা কী, তা এখনই নির্ধারণ করা জরুরি। স্বল্প আয়ের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। সংসারের ব্যয় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সামনে যেন কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ হানা না দেয়, সে প্রত্যাশাই করছি রাষ্ট্রের কাছে।
আহমেদ শরীফ, কবি ও সাংবাদিক
এখন হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগী নেই; বরং ডায়রিয়া রোগীই বেশি। চিকিৎসকেরা যথারীতি বলছেন দূষিত পানি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার এর জন্য দায়ী। সেটা যৌক্তিক, তবে তাই বলে যে হারে দেশজুড়ে ডায়রিয়া বাড়ছে, তা কি অস্বাভাবিক চিত্র নয়?
সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে খাওয়ার পানি, খাদ্যসামগ্রী ও ডায়রিয়ার জীবাণু নিয়ে একটা গবেষণা এখন সময়ের দাবি। সেই সঙ্গে সময় পেরিয়ে যাচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে গভীর গবেষণার। রমজান শুরুর আগে থেকেই শুরু হয়েছে সব ধরনের সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। শুকনো সব ধরনের খাবারের দাম নিয়মিত বিরতিতেই বেড়ে চলেছে। বিস্কুট, চানাচুর, চকলেট, আইসক্রিম, তেল, লবণ, চাল, ডাল, চিনি, আটাসহ কোন পণ্যটার দাম বাড়েনি? এ নিয়ে কোনো জবাবদিহি করতে হচ্ছে না বড় বড় কোম্পানিকে!
পরিস্থিতি এখন এমন যেন ‘দ্রব্যমূল্যের ডায়রিয়া’ হয়েছে। মানুষের ডায়রিয়া নিরাময়যোগ্য, তবে দ্রব্যমূল্যের ডায়রিয়া যেন নিরাময় করা সম্ভবই না! দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়বোধ কতটা তা এখন বিবেচনার বিষয়। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে আমাদের দেশে সবজির দাম বাড়বে, তা তো মেনে নেওয়া যায় না। বিভিন্ন সবজির যে লাগামহীন দাম আছে এখনো, তার জন্য কৃষকেরা বরাবরই উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলেন। সেই কৃষকেরাও পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ধানসহ বিভিন্ন সবজি বিক্রি করে ন্যায্যমূল্য পান না। তাঁদের সবজি রাজধানীসহ বড় সব শহরে যেতে যেতে দাম বেড়ে হয় কয়েক গুণ।
মধ্যস্বত্বভোগীরা সব সময়ই ফায়দা নিয়ে থাকে। তবে এর জন্য পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজিও বিশেষভাবে দায়ী। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ট্রাক বা অন্য সব পরিবহনে সবজি যখন শহরে আসে, তখন রাস্তার নানা জায়গায় কৃষককে চাঁদা দিতে হয়। ব্যবসায়ীরা যখন সেই পণ্য কেনেন, তাঁকেও রাজধানী বা বড় শহরে যানবাহনে পণ্য নেওয়ার সময় চাঁদা দিতে হয়। আগে শুধু ক্ষমতাসীন দলের পাতি নেতারা এই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এখন পুলিশ, আনসার, বিজিবির সদস্যরাও চাঁদাবাজি করেন।
সেদিন একটা খবর দেখলাম। ফরিদপুরের হাইওয়ে পুলিশের এক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নতুন কাজে যোগ দিয়েই পড়েন বিপদে। প্রেস ব্রিফিং করতে গিয়ে লিখিত বক্তব্যের শেষ দিকে পুলিশ চাঁদাবাজি বন্ধ করবে—সেটা বোঝাতে গিয়ে তিনি পড়েন—‘হাইওয়ে পুলিশ ছাড়া অন্য কেউ চাঁদাবাজি করলে তার দায়ভার হাইওয়ে পুলিশ নেবে না।’ পরে এটা ভাষাগত ভুল উল্লেখ করে হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিব্রতবোধ করেন। নতুন ওসিকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় অন্য এলাকায়। প্রশ্ন হলো, এটা কি কেবলই ভাষাগত ভুল ছিল? এ ঘটনা আরও দুভাবে ভাবতে পারি আমরা। একটা হলো, হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তাদের চাঁদাবাজির গোপন খায়েশ এর মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। আরেকটি ভাবনা হলো, চাঁদাবাজি ঠেকাতে নতুন ওসির দৃঢ় মনোভাবকে শুরুতেই গুঁড়িয়ে দিতে এটা কোনো স্যাবোটাজ নয় তো? ঘটনা যেটাই হোক, পুলিশ এখন যে রাস্তায় বড় ধরনের চাঁদাবাজি করে, তাতে সন্দেহ নেই।
মিডিয়ায় কাজ করি বলে আমাকে রাষ্ট্র নিশ্চয়ই দুর্নীতি দমনের অধিকার দেয়নি। এর জন্য আলাদা সংস্থা আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে। তাদের ভূমিকাই মুখ্য। তবে এখন রক্ষকই ভক্ষক হয়ে উঠেছে। রাজধানীতে ভোরবেলা অথবা মাঝরাতে দেখা যায় অদ্ভুত কিছু দৃশ্য। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সার্জেন্ট বা ট্রাফিক পুলিশ পণ্যবাহী যানবাহন থেকে চাঁদা নেয়। এ কাজে তাদের সহায়তার জন্য এক বা একাধিক দালালকেও দেখেছি। তাদের নিয়ন্ত্রণ করবে কারা?
এবার স্পষ্ট করে বলতেই হয়, দ্রব্যমূল্যের যে ডায়রিয়া চলছে, তার চিকিৎসা কী, তা এখনই নির্ধারণ করা জরুরি। স্বল্প আয়ের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। সংসারের ব্যয় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সামনে যেন কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ হানা না দেয়, সে প্রত্যাশাই করছি রাষ্ট্রের কাছে।
আহমেদ শরীফ, কবি ও সাংবাদিক
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৩ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৩ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৪ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫