Ajker Patrika

আব্দুর রাজ্জাক

সম্পাদকীয়
আব্দুর রাজ্জাক

তাঁর পোশাকে কোনো আভিজাত্যের ব্যাপার ছিল না। সব সময় পায়জামা-পাঞ্জাবি পরতেন। আর ঢাকার আঞ্চলিক উচ্চারণে কথা বলতেন। শোনা যায়, রান্না করতে এবং পছন্দের মানুষদের খাওয়াতেও ভীষণ ভালোবাসতেন।

ষাটের দশক থেকে যেসব ব্যক্তি জ্ঞানচর্চায় নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন, তাঁদের প্রায় সবাই তাঁর গুণমুগ্ধ শিষ্য কিংবা ছাত্র ছিলেন। তাঁদের মধ্যে আছেন রেহমান সোবহান, কামাল হোসেন, আনিসুজ্জামান, বদরুদ্দীন উমর, রওনক জাহান, হামিদা হোসেন, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সরদার ফজলুল করিম, আহমদ ছফা, হুমায়ুন আজাদ, সলিমুল্লাহ খান প্রমুখ।

পণ্ডিত হয়েও তাঁর লেখালেখিতে তেমন আগ্রহ ছিল না। জীবদ্দশায় শুধু একটি স্মারক বক্তৃতা এবং তাঁর অসমাপ্ত পিএইচডি থিসিস ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না। বক্তৃতাটি তিনি ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মুজাফফর আহমেদ চৌধুরীর স্মরণে দিয়েছিলেন।

তিনি জগৎবিখ্যাত মার্ক্সবাদী অধ্যাপক হ্যারল্ড লাস্কির অধীনে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসে পিএইচডি শুরু করেছিলেন। থিসিস লেখার শেষ পর্যায়ে হ্যারল্ড লাস্কি মারা গেলে তিনি থিসিস জমা না দিয়েই দেশে ফিরে আসেন। কারণ তাঁর ধারণা হয়েছিল, হ্যারল্ড লাঙ্কি ছাড়া এই থিসিসের মর্ম কেউ বুঝবে না। থিসিসের বিষয় ছিল ভারতের রাজনৈতিক দল।

বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের শেষাবধি তিনি জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদে যুক্ত ছিলেন। কখনো পদোন্নতি পাওয়ার চেষ্টা করেননি। ১৯৭৫ সালে তাঁকে জাতীয় অধ্যাপক পদে ভূষিত করা হয়।

তাঁর সম্পর্কে জানার উপায় হতে পারে তাঁর গুণমুগ্ধদের স্মৃতিচারণামূলক লেখাপত্র; বিশেষ করে আহমদ ছফার ‘যদ্যপি আমার গুরু’ এবং সরদার ফজলুল করিমের ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পূর্ববঙ্গীয় সমাজ: অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক-এর আলাপচারিতা’ বই দুটি গুরুত্বপূর্ণ।
১৯৯৯ সালের ২৮ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত