Ajker Patrika

ব্রহ্মপুত্রের চরে অবৈধ শ্মশানঘাট

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ মে ২০২২, ১৩: ৫৪
ব্রহ্মপুত্রের চরে অবৈধ শ্মশানঘাট

ব্রহ্মপুত্র নদের জেগে ওঠা চরে কংক্রিটের ঢালাই করে প্রতিমা বিসর্জনের ঘাট তৈরি করছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন। নদের চরে এমন নির্মাণকাজ অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও আইনবিরোধী বলে চরে এমন স্থাপনার কাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছে জন-উদ্যোগ নামে একটি সংগঠন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুর জান্নাত কনস্ট্রাকশন লিমিটেড মহানগরীর কাচারিঘাট ও বালুর ঘাট এলাকায় একটি বড় অংশ কংক্রিটের ঢালাই করে ঘাট নির্মাণকাজ করছে। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০০ ফুট ও প্রস্থ প্রায় ৩০ ফুট। নদের চরে কংক্রিটের ঢালাই করে নির্মাণাধীন জায়গাটিতে তৈরি করা হবে প্রতিমা বিসর্জনের ঘাট। প্রতিমা বিসর্জনের সময় কাদামাটিতে সমস্যা হওয়ায় এখানে পাকা স্ল্যাব করা হবে বলে জানা গেছে।

নদের চরে প্রতিমা বিসর্জন ঘাট নির্মাণের বিষয়টি জানার পর জেলা জন-উদ্যোগ কাজ বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে ২৩ তারিখ স্মারকলিপি দিয়েছে। স্মারকলিপিতে জেলা জন-উদ্যোগ উল্লেখ করে, নদী বা নদের চরে স্থাপনা নির্মাণ পরিবেশবিরোধী ও আইনবিরোধী।

এ বিষয়ে ফরিদপুর জান্নাত কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যতটুকু কাজ করা হয়েছে, এতটুকুই আমাদের কাজ শেষ। এখানে শুধু প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ঘাট নির্মাণ করা হবে। এখানে আর কোনো মাটি ফেলা বা ভরাট করা হবে না।’

জেলা জন-উদ্যোগের আহ্বায়ক নজরুল চুন্নু বলেন, হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এক রিটের রায়ে তুরাগসহ দেশের সব নদ-নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। নদ-নদী দেখাশোনা করা, দূষণ ও দখলমুক্ত রাখতে জাতীয় নদী কমিশন নামে একটি সংগঠনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। নদী কমিশনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক দায়িত্ব পালন করবেন। শহর রক্ষা বাঁধ থেকে প্রায় ১৫০ মিটার ভেতরে মূল নদীর কাছে নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। এতে নদের পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। নদের মাঝখানে কোনো মতেই ঘাট নির্মাণ করা যাবে না। এইটা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী। নির্মাণকাজ বন্ধ করার জন্য আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি লিপি দিয়েছি।’

জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি এমদাদুল হক মিল্লাত বলেন, ‘নদের চরে ঘাট তৈরির বিষয়টি শুনেছি। জেলা জন-উদ্যোগ ওই নির্মাণকাজ বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। এসব কাজ করার বিষয়ে আদালতের রিট আছে ও সরকারের পক্ষ থেকেও নিষেধাজ্ঞা আছে। যাতে নদী কারওর দখলে না যায়।’

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখলাক উল জামিল বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র নদে ঘাট নির্মাণ করার বিষয়টি জানার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, নির্মাণকাজ বন্ধ হবে।’

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, প্রতি বছরই এখান দিয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। প্রতিমা বিসর্জনের সময় জায়গাটি কর্দমাক্ত হয়ে যায়। এতে অনেক সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিমা বিসর্জন দিতে হয়। যে কারণে এই ঘাট নির্মাণ করা হচ্ছিল। ঘাট নির্মাণকাজ বন্ধ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘নদের চরে ঘাট করার বিষয়ে একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। আমিও অবগত রয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত