Ajker Patrika

সার-কীটনাশক সবই ভেজাল

রাসেল আহমেদ, তেরখাদা
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৫১
সার-কীটনাশক সবই ভেজাল

খুলনার তেরখাদায় নকল ও ভেজাল দস্তা সারে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। নিম্নমানের কীটনাশকও ছড়িয়ে পড়ছে বাজারে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে। কয়েকজন প্রভাবশালী অসাধু ব্যবসায়ী এসব নকল সার খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে বাজারজাত করার কাজে যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, কৃষকেরা আসল দস্তার পরিবর্তে অবিকল দস্তা সারের মোড়কে নকল সার কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। এতে চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো চাষাবাদে উৎপাদন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন কৃষকদের অনেকে। এ বিষয়ে উপজেলার সচেতনমহল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সরেজমিনে নকল ও ভেজাল দস্তা সার এবং নিম্নমানের কীটনাশক বিক্রির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সার ব্যবসায়ীদের অনেকে বেশি লাভের আশায় ভেজাল ও নকল দস্তা সার এবং নিম্নমানের কীটনাশক অবাধে বিক্রি করছেন। আসল নকলের বিষয়টি যাচাই না করে তাঁদের কাছ থেকে সার ও কীটনাশক কিনছেন কৃষকদের অনেকে। জমিতে ব্যবহারের পর কৃষকেরা বুঝতে পারছেন এসব ভেজাল সার ও নিম্নমানের কীটনাশকের কার্যকারিতা।

সূত্র জানায়, প্রতি কেজি দস্তা সারের বাজার মূল্য এখন ২০০ টাকা। সেখানে একই মোড়কে ভেজাল দস্তা সার বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিদরে। দস্তা সারের পাশাপাশি অসাধু মুনাফালোভী সার বিক্রেতারা জৈব, সোডিয়াম, সালফেট ও সুফলা সারকে বোরো ধানের উপযোগী বলে বিক্রি করছেন।

তেরখাদা উপজেলায় নির্ধারিত পরিবেশক রয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তেরখাদায় উপজেলায় বিসিআইসি ডিলার আছেন ৬ জন। খুচরা সার ডিলার ৫৪ জন, বিএডিসি সার ডিলার ১৩ জন এবং কীটনাশক বিক্রি করেন প্রায় ১৯৬ জনের মতো। তাঁদের কেউ কেউ বৈধ ব্যবসার আড়ালে অবৈধভাবে নকল ও ভেজাল সার এবং নিম্নমানের কীটনাশক বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

জয়সেনা এলাকার কৃষক নিজাম খাঁ, ইখড়ি এলাকার কৃষক মোস্তাফিজুর শেখ, তেরখাদা পশ্চিমপাড়া এলাকার জাকির শেখসহ বেশ কয়েকজন কৃষক জানিয়েছেন, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে দস্তা সার কিনে তারা প্রতারিত হয়েছেন। এতে ধান উৎপাদনে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

তেরখাদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা বাজার থেকে সার, কীটনাশকের স্যাম্পল সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠিয়েছি। পরে পরীক্ষা করে তাতে ভেজাল পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে সার ব্যবসায়ীদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করাসহ সতর্ক করা হয়েছে। ভেজাল জব্দ করা সার ও কীটনাশক বিনষ্ট করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নকল ও ভেজাল সার বিক্রি ঠেকাতে পদক্ষেপ নিয়েছি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন সার ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে নকল দস্তা ও জৈব সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। তাই তাঁদের সারের নমুনা পরীক্ষার জন্য কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছি।’

কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে নকল ও ভেজাল প্রতিরোধ করা হবে। কোনো কৃষক যাতে প্রতারিত না হন, সে জন্য প্রয়োজনে আমরা আবারও ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ব্যবস্থা নেব।’

ভেজাল ও নকল সার উৎপাদন, বিক্রি ও বাজারজাতকরণ ঠেকাতে কৃষক, রাজনৈতিক নেতা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

আইসিএক্স বাদ দিলে ঝুঁকিতে পড়বে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব, বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত