Ajker Patrika

প্রসূতিদের আপন ঠিকানা

মো. শফিকুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৩: ৫৬
প্রসূতিদের আপন ঠিকানা

জেলার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আজমপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রটি এবারও উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছে।

এই কেন্দ্রটিতে প্রসূতি মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছেন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক সালেহা খাতুন। স্বল্প সময়ের মধ্যে পরিবার কল্যাণকেন্দ্রটিকে প্রসূতিদের কাছে নিরাপদ সন্তান প্রসবের এক আপন ঠিকানায় পরিণত করে তুলেছেন তিনি।

সন্তান প্রসবে এরই মধ্যে তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলাসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার আশপাশের এলাকায়।

পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক সালেহা খাতুন জানান, ২০২০-২১ সালে ৩২৫ জন প্রসূতি মায়ের স্বাভাবিক প্রসব করিয়েছেন তিনি। ২০১৯-২০ সালে করিয়েছেন ৩১৫ জনের।

উপজেলার মধ্যে এটি রেকর্ড। উপজেলাভিত্তিক এ পর্যন্ত তিনি ৯ বার পুরস্কার পান।

স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়ার আজমপুর এলাকায় ১৯৯০ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৬ সালে সালেহা খাতুন আসার পর বদলে যায় এর সেবাকার্যক্রম।

বর্তমানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি শুধু এই ইউনিয়নে সীমাবদ্ধ নয়। এখানে বিজয়নগর, সদর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসুদেব ইউনিয়ন, আখাউড়া দক্ষিণ, মোগড়া ও পৌরশহরের বিভিন্ন এলাকার প্রসূতি মায়েরা চিকিৎসাসেবা নিতে আসছেন।

সালেহা খাতুন জানান, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করালে মা ও শিশু উভয়ের জীবনই ঝুঁকিতে থাকে। এ জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে তিনি সিজার ছাড়াই স্বাভাবিক প্রসবে শিশু জন্মের কাজ করছেন।

দুর্গাপুর এলাকার রানা মিয়া জানান, হঠাৎ শেষ রাতে তাঁর স্ত্রীর প্রসব বেদনা ওঠে। গর্ভবতী হওয়ার পর এখান থেকে চিকিৎসাসেবা নেওয়ায় তাই আসা।

এ কেন্দ্র ছাড়া অন্য কোথাও হলে প্রসব ও পরবর্তী খরচ নিম্ন ২৫ হাজার টাকা লাগত। অথচ এখানে স্বল্প টাকায় সবকিছু মিটে যাওয়ায় বেজায় খুশি তিনি।

বিজয়নগরের সিঙ্গারবিল এলাকা থেকে আসা ফাতেমা আক্তার জানান, লোকমুখে শুনে আজমপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রে আসেন তিনি।

প্রথম সন্তানের মা হবেন, তাই নানা রকম দুশ্চিন্তা ছিল। এক সপ্তাহ আগে কোনো প্রকার সিজার ছাড়াই তাঁর স্বাভাবিক প্রসব হয়। বর্তমানে মা-সন্তান দুজনই ভালো আছে।

ধরখার এলাকার পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের পরিদর্শক রিনা বেগম বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের মধ্যে দিন দিন সেবা কার্যক্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত দুই মাসে ২০ জন প্রসূতি মায়ের সিজার ছাড়াই সন্তান প্রসব করানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে আজমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ভূইয়া স্বপন বলেন, এখনকার মায়েদের কিংবা তাঁদের পরিবারের মধ্যে সিজার করার প্রবণতা খুব বেশি। বিশেষ করে প্রবাসীর পরিবার হলে তো কথাই নেই। চেষ্টা করা হচ্ছে সরকারি এ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সিজার ছাড়াই প্রসূতি মায়েদের সেবা দিতে।

আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এমওএমসিএইচ কর্মকর্তা ডা. হাসমত আরা জাহান বলেন, ‘আজমপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রটি গোটা উপজেলার মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসার যেন কোনো ত্রুটি না হয়, সে বিষয়ে খুবই সতর্ক রয়েছি। ইউনিয়নভিত্তিক প্রতিটি কেন্দ্রে দিন দিন বাড়ছে চিকিৎসাসেবা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিলেটে পাথর লুটে জড়িত দুই দলের ৩৫ নেতা

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

একটি খনি ঘিরে সমৃদ্ধির স্বপ্ন দেখছে পাকিস্তান, কিন্তু চাবিকাঠি চীনের কাছে

আমরা দখল করি লঞ্চঘাট-বাসস্ট্যান্ড, জামায়াত করে বিশ্ববিদ্যালয়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত