Ajker Patrika

সেচের অভাবে বোরো খেত ফেটে চৌচির, বিপাকে কৃষক

ঝিকরগাছা প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২২, ১৪: ৪৭
সেচের অভাবে বোরো খেত ফেটে চৌচির, বিপাকে কৃষক

যশোর সদরের ছোট মেঘলা ও ঝিকরগাছা উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামে সেচের পানির অভাবে বোরো খেত ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে বোরো চাষ। গভীর নলকূপ বসানো নিয়ে দ্বন্দ্বে ওই এলাকায় সেচের পানি বন্ধ রাখায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকার কৃষকেরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মল্লিকপুর গ্রামের সাইফুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি গ্রামের বোরো ধানের খেতে তাঁর গভীর নলকূপ থেকে সেচের পানি সরবরাহ করে থাকেন। কিন্তু পানি দেওয়ার নামে টালবাহানা করায় ভুক্তভোগী কয়েকজন কৃষক নিজেদের উদ্যোগে গভীর নলকূপ বসান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাইফুজ্জামান ওই কৃষকদের নামে মামলা করেন। পরে কৃষকদের চাপে পড়ে এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সাইফুজ্জামান আপসে আসেন এবং সেচের পানি ঠিকঠাক দেবেন বলে কথা দেন। কিন্তু সাইফুজ্জামান এখন সেচের পানি দিচ্ছেন না।

সরেজমিনে মল্লিকপুর এলাকার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামের অধিকাংশ ধানখেতের মাটি শুকিয়ে ধান গাছ হলুদ হয়ে গেছে। দুই-এক দিনের মধ্যে এ সব খেতে সেচ না দিতে পারলে ধান গাছ সব মরে যাবে বলছেন কৃষকেরা।

ছোট মেঘলা গ্রামের আব্দুর রহিম ভুট্টো বলেন, ‘এ মাঠের শতাধিক বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষের জন্য আমরা ২০১৭ সালে একটি গভীর নলকূপ বসানোর আবেদন করি। উপজেলা সেচ কমিটি যাচাই-বাছাই করে ২০১৯ সালে লাইসেন্স দেয়। এ নিয়ে আরেক গভীর নলকূপের মালিক ঝিকরগাছার মল্লিকপুর গ্রামের সাইফুজ্জামান মামলা করেন। ফলে আমাদের নলকূপের লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায় এবং সেচ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। অথচ তাঁর নলকূপটি রয়েছে দুই হাজার ফুট দূরে ও নিচু জায়গায়।

কৃষক ভুট্টো আরও বলেন, প্রচলিত সেচ আইনে বলা আছে, একটি গভীর নলকূপ থেকে অপর গভীর নলকূপের দূরত্ব হবে ১ হাজার ৯৪১ ফুট। তারপরও সাইফুজ্জামান ওই বছরেই ১৯৮৬-৮৭ সালের সেচ আইন উল্লেখ করে একটি ষড়যন্ত্র মামলা করে আমাদের লাইসেন্সটি স্থগিত করে দেন। সেই থেকে কৃষকেরা মাঠটিতে বোরো চাষ করতে পারছেন না।

কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘সেচের পানির অভাবে আমার এক বিঘা জমির ধান গাছ একেবারে হলুদ হয়ে গেছে। এক বিঘা ধান চাষে মোট খরচের অর্ধেক করা শেষ। এখন যদি এ ধান না হয় তাহলে আমার যে ক্ষতি হবে, তা সহ্য করার মতো সামর্থ্য আমার নেই।

কৃষক সাইদুল ইসলাম, হাফিজুর রহমানসহ আরও কয়েক কৃষক বলেন, ‘সাইফুজ্জামান আমাদের জানিয়েছেন, তিনি তাঁর ইচ্ছামতো পানি দেবেন। এ ছাড়া পানি নিতে হলে আগের থেকে বেশি টাকা দিতে হবে।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সাইফুজ্জামানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলও তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত