Ajker Patrika

টিকিট যেন সোনার হরিণ

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৪১
টিকিট যেন সোনার হরিণ

ময়মনসিংহ স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন সাতটি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে একটি ট্রেন চট্টগ্রামে, বাকি ছয়টি ট্রেন যায় ঢাকা। এই সাতটি আন্তনগর ট্রেনে ময়মনসিংহ স্টেশনের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৫২১ আসন।

এই স্বল্প সংখ্যক আসনের বিপরীতে চাহিদা অনেক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকে টিকিট পান না। এ ছাড়া রয়েছে কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য। এ স্টেশনে টিকিট যেন সোনার হরিণ।

ময়মনসিংহ স্টেশনে বরাদ্দ টিকিটের তুলনায় চাহিদা থাকে পাঁচ-ছয় গুণ বেশি। অনলাইনে অ্যাপসের মাধ্যমে টিকিট কাটার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন অনেকে। অনেকেই বাধ্য হয়ে কালোবাজারির কাছ থেকে চড়া দামে টিকিট কেনেন। কালোবাজারির দৌরাত্ম্য কমানোর পাশাপাশি প্রতিটি ট্রেনে কোচ বাড়িয়ে ময়মনসিংহ স্টেশনের জন্য অতিরিক্ত টিকিট বরাদ্দের দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

ময়মনসিংহ রেল স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা অভিমুখে তিস্তা এক্সপ্রেসে ১৫৩ টি, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেসে ৭৭ টি, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসে ৯৯ টি, যমুনা এক্সপ্রেসে ১০৭ টি, হাওর এক্সপ্রেসে ৪৩টি এবং মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে ৪২টি আসনসহ সব মিলিয়ে ৫২১টি আসন বরাদ্দ রয়েছে ময়মনসিংহের যাত্রীদের জন্য। আর চট্টগ্রাম অভিমুখী বিজয় এক্সপ্রেসে ২২২টি আসন বরাদ্দ আছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রতি ট্রেনে চারটি করে আসন বরাদ্দ থাকে।

সাধারণ যাত্রীদের জন্য যে আসনগুলো বরাদ্দ রয়েছে সেগুলোর মাঝে প্রথম শ্রেণির আসন খুবই কম। বেশির ভাগই শোভন শ্রেণির আসন। এ নিয়েও যাত্রীদের ক্ষোভ রয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহর হওয়ার পর যাত্রীর চাপ অনেক বেড়েছে।

সম্প্রতি ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, টিকিট কাউন্টারে ঢাকাগামী যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন। রাত দুইটা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও দুপুর পর্যন্ত টিকিট না পাওয়ার অভিযোগও করেন কোনো কোনো যাত্রী।

এক যাত্রীকে দেখা যায় লাইনে টুলের মধ্যে বসে ঘুমাতে। ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী সুকুমার বাবু নামে এক যাত্রী বলেন, ‘রাত দুইটা থেকে কাউন্টারে এসে সকাল ৯টার দিকে তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনে একটি সিট পেয়েছি। পরে ঢাকা থেকে ফিরতি টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছি। শরীরটা ক্লান্ত হওয়ায় একটু ঘুমিয়ে পড়ে ছিলাম। টিকিট পাওয়াটা সাধারণ যাত্রীদের জন্য খুবই কঠিন। এর মধ্যে রয়েছে কালোবাজারি।’

জেলা জনউদ্যোগ-এর আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, ‘ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহর হলেও আমাদের দুর্ভাগ্য যে ময়মনসিংহ থেকে সরাসরি ঢাকাগামী কোনো আন্তনগর ট্রেন নেই। আমাদের দাবি যাত্রী ভোগান্তি কমাতে আন্তনগর ট্রেন চালু না করলেও অন্তত বগি যেন বৃদ্ধি করা হয়।’

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ স্টেশন সুপার জাহাঙ্গীর আলম টিকিট সংকটের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, অনলাইনে ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি শুরুর পর থেকে কাউন্টারে টিকিটের সংখ্যা কমে গেছে। তারপরও তাঁরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেন স্বচ্ছভাবে টিকিট বিক্রি করার। টিকিট দিতে প্রশাসনের উচ্চপর্যায় থেকে তদবির আসে। মনে হয় এখানে বসে চাকরিটা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

কালোবাজারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্ল্যাটফর্মে কিংবা কাউন্টারের সামনে কোথাও কালোবাজারি হয় না। প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করা হয়। বাইরে অন্য কোথাও কালোবাজারি হয়ে থাকলেও কারা এর সঙ্গে জড়িত তা চিহ্নিত করা কঠিন। তবে টিকিট সংকট নিরসনে তিনিও নতুন ট্রেন চালু ও কোচ বৃদ্ধি করে আসন বরাদ্দের পক্ষে মত দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দনবাস চান পুতিন—ন্যাটো তো নয়ই, পশ্চিমা সেনাও থাকবে না ইউক্রেনে

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

তথ্য যাচাইয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করবেন—ইউটিউব চ্যানেলে সিইসির বার্তা

ফরিদপুরে চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে সেবা বন্ধের ঘোষণা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত