Ajker Patrika

অবৈধভাবে খাল দখল ব্যাহত ফসল উৎপাদন

মতলব দক্ষিণ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২২, ০৯: ৪৯
অবৈধভাবে খাল দখল ব্যাহত ফসল উৎপাদন

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় অবৈধভাবে খাল ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব খাল দখল করছে বলে জানা গেছে। এতে কৃষকেরা জমিতে পানি দিতে না পারায় ফসল উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে।

কয়েক বছর ধরে খাল দখল চলছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানালেও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার খালগুলোর বিভিন্ন অংশের ওপর আড়াআড়িভাবে স্থানীয় লোকজন বাসা-বাড়ির অংশ বিশেষ, বাঁশের সাঁকো ও পাকা সেতু নির্মাণ করেছেন। ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১০০ ফুট চওড়া মতলব-বাবুরহাট খালের ওপরই নির্মিত হয়েছে শতাধিক সেতু। এ ছাড়া সেখানকার বাবুরহাট-মতলব-পেন্নাই সড়কের অংশে সহস্রাধিক দোকানপাট নির্মাণ করেছেন স্থানীয় লোকজন। এক-দেড় শ লোক ওই খাল দখল করেছেন। বাকি খালগুলোরও কিছু অংশ দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়া হয়েছে। এতে এসব খালে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। এসব খালে বর্ষাতেও নৌযান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রস্থ কমতে কমতে অনেক স্থানে বিলিনের পথে অনেক খাল। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি খাল দখল করে দোকান ও সেতু নির্মাণ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। ফলে হুমকিতে রয়েছে এসব খালের অস্তিত্ব। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।

উপজেলা ভূমি ও মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ১৮টি খাল রয়েছে। এগুলো হলো তেলী মাছুয়াখাল, কাশিমপুর-পুরণ, নারায়ণপুর, নলুয়া, চরপাথালিয়া, দিঘলদী, দূরগাঁও লক্ষ্মীপুর, সাড়পাড়, নাগদা, পুটিয়া, লামচরী, শাহাপুর, টেমাই, ধনারপাড়, বোয়ালজুড়ি, করবন্দ, বাইশপুর ও মতলব-বাবুরহাট খাল। এসব খাল ব্রিটিশ আমলের। এগুলো সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত।

স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিযোগ, দু-তিন বছর ধরে উপজেলার চরপাথালিয়া, নলুয়া, দিঘলদী, দূরগাঁও, ধনারপাড়, বাইশপুর ও মতলব-বাবুরহাট খালের বেশ কিছু অংশ বেদখল হয়ে আছে। এসব খালের ১০-১২ ফুট পাড়ের অংশ দখল করে অবৈধভাবে ঘর-বাড়ির অংশ, দোকান ও সেতু নির্মাণ করেছেন স্থানীয় লোকজন।

মুন্সীরহাট এলাকার বাসিন্দা আমজাদ আখন্দ বলেন, জীবিকার স্বার্থে খালের পাড়ে অনেকে দোকান দিয়েছেন। তবে অসাবধানতাবশত দোকানের কিছু অংশ খালের ভেতর ঢুকে গেছে। ইচ্ছাকৃতভাবে খাল দখল করেননি।

মতলব সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক অশোক কুমার রায় বলেন, খাল বা নদী দখল হলে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়। হুমকিতে থাকে জীববৈচিত্র্য। খাল দখলের এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ হওয়া উচিত।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা হক বলেন, অবৈধভাবে খাল দখলকারীদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকেও (পাউবো) বিষয়টি জানানো হয়েছে। পাউবোর সঙ্গে কথা বলে দখলদারদের উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত