Ajker Patrika

মজুরি ৪৭৬ টাকা দেওয়া হলো ৩০০

ঝিকরগাছা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২২, ১০: ১৯
মজুরি ৪৭৬ টাকা দেওয়া হলো ৩০০

করোনার মধ্যে ৪৭৫ টাকা মজুরি চুক্তিতে কাজ করে ৩০০ টাকা করে পাওয়ার অভিযোগ করেছেন ঝিকরগাছা উপজেলা আনসার- ভিডিপির সদস্যরা। গতকাল তাঁদের ৩০০ টাকা হারে মজুরির টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে।

আনসার-ভিডিপির সদস্যরা জানিয়েছেন, করোনার মধ্যে ৪৭৫ টাকা প্রতিদিন মজুরি চুক্তিতে কোয়ারেন্টাইন, মহাসড়ক ও হাট-বাজারে রাতদিন ঝুঁকির মধ্যে কাজ করানো হয়। এ সময় তাঁদের মজুরির মাস্টার রুলে ৪৭৫ টাকা করে স্বাক্ষর করে নেওয়া হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে চুক্তি অনুযায়ী টাকা পেয়েছেন তাঁরা। তবে শেষের আড়াই মাসে তৃতীয় পর্বে ৪৭৫ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

আনসার-ভিডিপি সদস্য পৌর সদরের কাটাখাল এলাকার রেহেনা খাতুন বলেন, ‘করোনার সময় দুই মাস ১১ দিন কাজ করেছি। প্রতিদিন ৪৭৫ টাকা করে মাস্টার রুলে সে সময়ে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছিল। আজকে (মঙ্গলবার) টাকা দেওয়া হলো দিনে ৩০০ টাকা করে।’

একই এলাকার রিনা খাতুন বলেন, ‘স্যারেরা ৩০০ টাকা করে দিয়ে বলছেন, আর কোনো টাকা পাব না।’

রেহেনা খাতুনের ছেলে সম্রাট হোসেন বলেন, ‘একই চুক্তিতে আমি ২১ দিন ডিউটি করি। আমাকে ৩০০ টাকা করে ১০ দিনের টাকা দেওয়া হয়েছে। আর টাকা পাব না বলে জানিয়েছেন অফিসারেরা।’

উপজেলার ফুলবাড়ীয়া গ্রামের মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘৪৭৫ টাকা চুক্তিতে এক মাস ৫ দিন কাজ করেছি। টাকা পেলাম ৩০০ টাকা করে।’

নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘১৫ দিন কাজ করে টাকা পেলাম ১০ দিনের। খাতায় আছে নাকি ১০ দিন কাজ করেছি। গরিবের টাকা মেরে কি লাভ? আমরা এর বিচার চাই।’ উপজেলার পদ্মপুকুর গ্রামের ফারুক হোসেনও একই অভিযোগ করেন।

অবশ্য এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার পর রেহেনা খাতুন ও রিনা খাতুনকে ডেকে নিয়ে আরও ২৬০০ করে টাকা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা দুজনে বলেন, পরে অফিসের টিআই জাকির হোসেন আমাদের অফিসে ডেকে নিয়ে একটি সাদা কাগজে সই রেখে আরও ২৬০০ করে টাকা দিয়েছেন।’

আনসার ভিডিপির সদস্যরা জানান, আগে যে দুবার মজুরির টাকা ইউএনও কার্যালয়ের মাধ্যমে পেয়েছি, সে দুবারই চুক্তি অনুযায়ী ৪৭৫ টাকা করে দেওয়া হয়েছিল।

উপজেলা প্রশিক্ষক আনোয়ারা খাতুন বলেন, ‘মজুরি দেওয়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। জেলা কমান্ড্যান্ট এসে নিজে হাতে টাকা দিয়েছেন, আমার কিছুই করার নেই।’

জেলা কমান্ড্যান্ট সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, ‘সে সময় ৪৭৫ টাকা করে চুক্তি করা হয়েছিল ঠিক। সে মোতাবেক আমরা ঝিকরগাছা, শার্শা ও সদর উপজেলার বিল করে ডিসি অফিসে ২৭ লাখ টাকার চাহিদা পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু দীর্ঘদিন পর ১৫ লাখ টাকা পেয়েছি। এই টাকা থেকে তাঁদের টাকা দেওয়া হয়েছে। পরে হয়তো আর টাকা পাওয়া যাবে না।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল হক বলেন, ‘প্রথম দিকে আনসার-ভিডিপি সদস্যদের মজুরি বাবদ বাজেট ছিল। আমরা চুক্তি অনুযায়ী তাঁদের মজুরি পরিশোধ করে দিয়েছি। আমাদের বাজেট শেষ হলে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়। পরে কী হয়েছে জানি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত