Ajker Patrika

জয়পুরহাটে স্ট্রবেরি চাষে সাফল্য, লাভ চার গুণ

মো. আতাউর রহমান, জয়পুরহাট
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২২, ১৪: ০৭
জয়পুরহাটে স্ট্রবেরি চাষে সাফল্য, লাভ চার গুণ

স্ট্রবেরি চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন চাষিরা। একসময় কৃষকেরা ভাবেননি, বিদেশি জাতের এ ফল চাষ হবে জয়পুরহাটের মাটিতে। অথচ কৃষকেরা এখন স্বপ্রণোদিতভাবে স্ট্রবেরি চাষ করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছর স্ট্রবেরি চাষ করেছিলেন ৭৩ জন কৃষক। এ বছর নতুন করে আরও ৯ জন কৃষকসহ ৮২ জন স্ট্রবেরি চাষ করেছেন।

এখন এই এলাকার কৃষকেরা স্ট্রবেরি চাষ করে চার গুণ লাভের মুখ দেখেছেন।

সরেজমিন জয়পুরহাটের জামালপুর ইউনিয়নের কালীবাড়ি গ্রামের চান্দা মাঠে দেখা যায়, খেতের পর খেত জাল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে একেকটি ফসলের মাঠ। এর ভেতরেই কেউ করছেন স্ট্রবেরির পরিচর্যা, কেউ সেচ দিচ্ছেন, কেউ কেউ তুলছেন স্ট্রবেরি ফল।

কালীবাড়ি গ্রামের সফল স্ট্রবেরিচাষি ইউনুস আলী সাগিদার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ থেকে ৯ বছর আগে কৃষক আব্দুল মোমিন আমাদের এলাকায় প্রথম স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। তাঁর সাফল্য দেখে ছয় বছর আগে দেড় বিঘা জমিতে আমিও স্ট্রবেরি চাষ শুরু করি। অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় পরের বছর থেকে ২ বিঘা জমিতে প্রতিবছর স্ট্রবেরি চাষ করে ইতিমধ্যে স্বাবলম্বী হয়েছি।’ এখন অন্য চাষিরা তাঁর কাছ থেকে স্ট্রবেরি চারা সংগ্রহ করেন। অনেকে পরামর্শও নেন। ফলে দিন দিন এলাকায় স্ট্রবেরির চাষ বাড়ছে।

ইউনুস আলী সাগিদার আরও বলেন, ভাদ্র মাসের প্রথম দিকে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করতে হয়। এ জন্য পাওয়ার টিলার বা ট্রাক্টর দিয়ে ৫ থেকে ৬টি চাষ করে জমির মাটি ঝরঝরে করে নিতে হয়। তারপর সার, গোবর ও ক্যালসিয়ামের অন্য উপাদান ব্যবহার করে জমি প্রস্তুত করতে হয়। স্ট্রবেরি চাষের জন্য প্রতি বিঘা জমিতে সব মিলিয়ে খরচ হয় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। আর সব খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা।

সফল এই স্ট্রবেরিচাষি আরও বলেন, স্ট্রবেরি মৌসুমের শুরুতে সাদা ফুল ফোটে, পরে হলুদ রঙের ফল ধরে। সবশেষে পাকা লাল টুকটুকে রং ধারণ করে স্ট্রবেরি। উইন্টারডন জাতের একটি চারা গাছ থেকে মৌসুমে কমপক্ষে দুই কেজি ফল পাওয়া যায়। কিন্তু এ ফল বিক্রি করতে সমস্যার মুখে পড়তে হয়। এলাকায় স্ট্রবেরি সরাসরি বিক্রি করা যায় না। জমি থেকে তোলা স্ট্রবেরি ঢাকায় আড়তদারের কাছে পাঠাতে হয়। সেই স্ট্রবেরি বিক্রির পরে তাঁরা টাকা দেন। কোনো কারণে ঢাকায় পৌঁছানোর আগেই স্ট্রবেরি নষ্ট হলে বা হারিয়ে গেলে লোকসান হয়।

তাই সংশ্লিষ্টদের প্রতি এই এলাকায় স্থানীয়ভাবে স্ট্রবেরি ক্রয়-বিক্রয়ের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান কৃষকেরা। পাশাপাশি এ কাজে তাঁরা সহযোগিতা হিসেবে সরকারি প্রণোদনা চেয়েছেন।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কায়ছার ইকবাল বলেন, ‘জয়পুরহাট সদর উপজেলায় এবার প্রায় আট হেক্টর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ হয়েছে। এর পুরো কৃতিত্বই কৃষকদের। কারণ, কৃষকেরা স্বপ্রণোদিতভাবে স্ট্রবেরি চাষ করেছেন। কৃষকেরা যাতে লাভজনকভাবে স্ট্রবেরি চাষ করতে পারেন, সে জন্য আমরা তাঁদের পরামর্শসেবা দেই। আর আমাদের যাঁরা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আছেন, তাঁরা সার্বক্ষণিকভাবে কৃষকদের সঙ্গে মাঠেই থাকেন। তবে আমরাও মাঝেমধ্যে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য মাঠে যাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত