Ajker Patrika

আবারও কমছে রেমিট্যান্স প্রবাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২২, ০৮: ৩৪
আবারও কমছে রেমিট্যান্স প্রবাহ

আবারও ভাটার টান পড়েছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিদায়ী ফেব্রুয়ারি মাসে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা হিসাবে) ১২ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এ অঙ্ক গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের চেয়েও ১৬ শতাংশ কম। আর যে রেমিট্যান্স এসেছে তা গত ১৯ মাসের মধ্যেও সর্বনিম্ন। এর আগে টানা পাঁচ মাস কমার পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে কিছুটা বেড়েছিল রেমিট্যান্স প্রবাহ। কিন্তু ফেব্রুয়ারি থেকে তা আবারও কমে যেতে শুরু করেছে।

রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা দিয়ে আসছিল সরকার। পরে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে তা বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। তারপরও রেমিট্যান্স প্রবাহে নেতিবাচক ধারা লক্ষ করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্সের হালনাগাদ তথ্য থেকে দেখা যায়, ২০২২ সালের দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা বিভিন্ন ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ পাঠিয়েছেন। আগের মাস জানুয়ারিতে তাঁরা পাঠান ১৭০ কোটি ৪৪ লাখ ডলার এবং ডিসেম্বরে পাঠান ১৬৩ কোটি ডলার। আগের বছরের ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল ১৭৮ কোটি ডলার।

গত ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩১ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। ৪২টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১১৪ কোটি ৯১ লাখ ২০ হাজার ডলার। আর পাঁচটি বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

রেমিট্যান্সের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের ৮ মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ৩২৪ কোটি ৭১ লাখ ডলার। ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ১ হাজার ৩৪৪ কোটি (১৩.৪৪ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৬৬৮ কোটি ৭২ লাখ (১৬.৬৮ বিলিয়ন) ডলার।

বিশ্লেষকেরা জানান, করোনার সময় প্রবাসীরা তাঁদের হাতে জমানো টাকা পাঠানোর কারণে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হয়েছিল। পরে কিছুটা কমলেও মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দাম বাড়তে থাকায় তা আবারও কয়েক মাস বাড়ে। কিন্তু করোনা সহনীয় হয়ে আসায় এবং আকাশপথে যাতায়াত স্বাভাবিক হওয়ায় মানুষের চলাচল বাড়তে থাকে, এর ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরেও প্রবাসীদের টাকা পাঠানোর সুযোগ তৈরি হয়। ডলারের বিনিময় হারের পার্থক্য বাড়ায় তারা অবৈধ চ্যানেলেও টাকা পাঠাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে। তবে বর্তমানে বিদেশগামী প্রবাসীদের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে সামনের দিনগুলোতে প্রবাসীরা আরও বেশি হারে রেমিট্যান্স পাঠাবেন বলে তাঁরা মনে করছেন।

এদিকে ডলারের বিনিময় হারের সঙ্গে টাকার পার্থক্য বেড়ে যাওয়ায় প্রবাসীরা যাতে অবৈধ পথে টাকা পাঠানো থেকে বিরত থাকেন, সে জন্য সরকার কিছুদিন আগে ঘোষিত প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করে। এতে করে প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে আরও বেশি হারে টাকা পাঠাবেন বলেও মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

জানা যায়, ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর রেমিট্যান্স প্রবাহেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ওই বছরের এপ্রিলে মাত্র ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, সরকার রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। সামনের দিনগুলোতে আশা করা যায় রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুরোনো রাউটার ফেলে না দিয়ে যে কাজে ব্যবহার করতে পারেন

পাকিস্তানের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার সামনে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে ভারত: ব্রিটিশ বিশ্লেষক

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

প্রশাসনিক আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ ভুল, আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধ সঠিক: বিএনপি

প্রথম ভাষণে গাজা প্রসঙ্গে যা বললেন পোপ লিও চতুর্দশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত