Ajker Patrika

বাড়তি টোল, যাত্রী ভোগান্তি

শ্যামল চন্দ্র দাস, মতলব দক্ষিণ
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ২১
বাড়তি টোল, যাত্রী ভোগান্তি

যাত্রীদের জিম্মি করে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের ধনাগোদা নদীর খেয়াঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায় করা হচ্ছে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছেন স্থানীয় জনসাধারণ। তাঁদের অভিযোগ-এর আগেও বিভিন্ন সময়ে অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়ে জেলা পরিষদ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তাঁরা। তবে অজ্ঞাত কারণে ইজারাদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এর ফলে দুই উপজেলার বাসিন্দা এবং বিশেষ করে মতলব বাজার ব্যবসায়ীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ দেখা গেছে।

জানা যায়, মতলব দক্ষিণ ও উত্তর বাসিন্দাদের পারাপারের জন্য প্রাচীন এই খেয়াঘাটে যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত টোল আদায় করে আসছে ঘাট কর্তৃপক্ষ। জনপ্রতি ঘাটের টোল পাঁচ টাকা ও নৌকার ভাড়া পাঁচ টাকা করে দিতে হয় প্রতিবার। আর মাত্র ১০০ মিটারের নদীটি পারাপার হয়ে মতলব দক্ষিণের লোকদের বাজারে যেতে-আসতে খরচ দিতে হয় ২০ টাকা।

ভুক্তভোগীরা বলেন, যেখানে সরকারি কোনো বিনিয়োগ নেই, সেখানে কীসের ভিত্তিতে এই টাকা আদায় করা হয়। আর ইচ্ছে হলেই কেন অতিরিক্ত ভাড়া আমাদের দিতে হবে।

তাঁরা জানান, এই খেয়াঘাট দিয়ে ৭০টি নৌকায় প্রতিদিন ২০ হাজার যাত্রী পারাপার হয়, তাদের মধ্যে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাসহ স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী যাতায়াত করে থাকে। এ ছাড়া মতলব উত্তরের কৃষকদের বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্য মতলব বাজারে নিয়ে কেনা-বেচা করতে নৌকায় যেতে হয়। অনেক সময় পণ্যের ব্যাগসহ ছোট বস্তাপ্রতিও অধিক টাকা দিতে হয় ঘাট কর্তৃপক্ষকে।

উপজেলার কৃষকদের অভিযোগ, মতলব বাজারে ১০ টাকার কিছু বিক্রি করতে গেলে সেখানেও ইজারা দিতে হয়।

ধনাগোদা নদীতে যাত্রীরা খেয়া পারাপার হচ্ছেন। ছবিটি গতকাল মতলব বাজার সংলগ্ন খেয়াঘাট থেকে তোলাতবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘাট কর্তৃপক্ষের ইজারা নবায়ন না করে অবৈধভাবে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা। এর আগেও বিষয়টি নিয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা হলে কর্তৃপক্ষের নজরে আসে বিষয়টি। পরে মতলব দক্ষিণ নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘাটে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। আদালত ইজারাদারদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় ইজারা নবায়ন করার নির্দেশ দেন এবং ভাড়া তালিকা ঘাটে টাঙানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু পুনরায় কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবারও অতিরিক্ত অর্থ আদায় শুরু করেন।

পরে ইজারাদারদের দৌরাত্ম্যের কারণে সাধারণ মানুষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত ইজারাদারকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু ঘাট কর্তৃপক্ষ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হওয়ার ঘণ্টা সময় পর থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করায় যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা হক বলেন, ‘কয়েকবার অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। আবারও অভিযান পরিচালনা করা হবে।’

মতলব পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন লিটন বলেন, ‘পৌরসভা থেকে খেয়াঘাটটি ইজারা দেওয়া হয়নি, জেলা পরিষদ থেকে দেওয়া হয়েছে। তবে ইজারাদারের অনিয়ম আর অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ হতে ঘাট বাতিলের জন্য বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে। তারপরও জেলা পরিষদ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস কে মহিউদ্দিন রাসেলের সঙ্গে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি, তবে বেশি কিছু জানি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত