Ajker Patrika

কোনো চিকিৎসক পায়নি শেবাচিম, সেবা ব্যাহত

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২২, ১৩: ০৯
কোনো চিকিৎসক পায়নি শেবাচিম, সেবা ব্যাহত

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) চিকিৎসক-সংকট কিছুতেই কাটছে না। বিভাগে প্রায় ৪ শ নতুন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হলেও তাঁদের কারও পদায়ন হয়নি এ হাসপাতালে। বরং গত মাসে ৯ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে শেবাচিম হাসপাতাল থেকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। এ সংকটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অদক্ষতা ও উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে হাসপাতালটির নানা সেক্টরে চরম অব্যবস্থাপনা চোখে পড়েছে।

জানা গেছে, গত মাসের শেষে বিভাগের ছয় জেলা হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬৬৮ শূন্য পদের বিপরীতে ৩৮৬ চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৪২তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) থেকে এসব চিকিৎসককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যদিও শেবাচিম হাসপাতালে একজন চিকিৎসকও দেওয়া হয়নি। এর আগে গত মাসের শেষে ৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে অন্যত্র বদলি করা হয়।

বদলি হওয়া অর্থোপেডিকস বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট সুদীপ্ত কুমার হালদার বলেন, কেন বদলি করছে, মন্ত্রণালয় ভালো জানে। তাঁরা মেডিকেল ফাঁকা করে চিকিৎসকদের জেলা শহরে পাঠাচ্ছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রজ্ঞাপনের তথ্য অনুযায়ী বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বরিশাল জেলায়। এই জেলায় সর্বোচ্চ ৯৭ চিকিৎসককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগীয় অফিসের উপপরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা প্রত্যাশা অনুযায়ী চিকিৎসক পেয়েছেন। শেবাচিম হাসপাতালে কেন এর মধ্যে কাউকে পদায়ন করা হয়নি, তা জানা নেই।

হাসপাতালের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা জাকারিয়া খান স্বপন বলেন, ৮৩ চিকিৎসক দিয়ে চলছে শেবাচিম হাসপাতালের আন্তবিভাগ ও বহির্বিভাগ। সেখানে দৈনিক ২ হাজার রোগীর চিকিৎসাসেবা চলে।

এদিকে শেবাচিম হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে এর বহির্বিভাগে মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড করা থাকছে। ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অবস্থান নিয়ে বিশৃঙ্খলাও করছেন। আবার ভ্রাম্যমাণ দোকানিরাও হাসপাতালের মধ্যে ঢুকে পড়ছেন। হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ড, পোস্ট করোনারি কেয়ার ইউনিট, শিশু ওয়ার্ডের মধ্য স্পর্শকাতর স্থানে হকারদের পণ্য বিক্রি করতে দেখা গেছে। শিশু ওয়ার্ডের এক রোগীর অভিভাবক মো. নাসিম বলেন, এভাবে যে কেউ ঢুকে পড়লে হাসপাতাল আর স্বাস্থ্যসম্মত থাকে না। সেবাও ব্যাহত হয়।

হাসপাতালের আন্তবিভাগে ওষুধ প্রতিনিধিদের রোগীর ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাটানির দৃশ্যও দেখা গেছে। যদিও অসহায় দরিদ্র রোগীরা ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের কিছুই বলতে পারেন না। বিভিন্ন ওয়ার্ডের বারান্দা আবার রোগীর স্বজনদের দখলে থাকতে দেখা গেছে।

জানতে চাইলে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানান, স্বল্প সময়ের মধ্যে হাসপাতালে নতুন চিকিৎসক পদায়ন করা হবে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে তিনি জনবলসংকটের কথা বলেছেন।

এ ব্যাপারে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলা সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন বলেন, ‘বরিশাল মেডিকেল অকার্যকর রাখা অনেক চিকিৎসকের কৌশল। এটি সচল হলে বেসরকারি হাসপাতালগুলো রোগীর সংকটে পড়বে। তা ছাড়া যেসব চিকিৎসক প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকেন, তাঁরাও দায়িত্ব পালনে উদাসীন। এমন সংকট আর অব্যবস্থাপনায় শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত