Ajker Patrika

ঈদের বেচাকেনায় দুই বছর পর তাঁদের মুখে হাসি

মো. নাজিম উদ্দিন ইমনকেরানীগঞ্জ (ঢাকা)
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ৪৭
ঈদের বেচাকেনায় দুই বছর পর তাঁদের মুখে হাসি

ঈদের পোশাক কিনতে সারা দেশের মানুষ যখন বাজারে ঢুকতে শুরু করে, ঢাকার কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টসপল্লির বেচাকেনা তখন গোটানোর পালা। প্রতিবছর এমনটাই হয়, কিন্তু গত দুই বছর হয়নি। কারণ আর কিছু নয়, করোনা। তবে এবার করোনার প্রকোপ অনেক কমে এসেছে। দুই বছর ধরা খাওয়ার পর এবার সাহস করে বাজারে নেমেছিলেন ব্যবসায়ীরা। বেচাকেনা প্রত্যাশামতো হয়েছে, হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখে।

কেরানীগঞ্জে ৬ হাজারের অধিক ছোট-বড় পোশাক কারখানা আছে। সেখানে কাজ করে প্রায় ৮ লাখ শ্রমিক। উপজেলার শুভাঢ্যা ও আগানগর ইউনিয়নে তিন শতাধিক বিপণিবিতানে শোরুম রয়েছে ১০ হাজারের অধিক। ঈদের বেচাকেনা প্রায় শেষের পথে। তবে এখনো সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতা আর কুলিদের হাঁকডাক কানে আসছে।

কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টসপল্লির ব্যবসায়ীদের দাবি, সারা দেশে তৈরি পোশাকের যে বাজার রয়েছে, তার প্রায় ৬০ শতাংশ সরবরাহ করা হয় এখানকার বাজার থেকে। এখানে ব্যবসায়ীদের মধ্য ৭০ শতাংশ নিজেরা পোশাক উৎপাদন ও বিক্রি করেন এবং বাকি ৩০ শতাংশ ব্যবসায়ী চীন, ভারত, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পোশাক এনে বিক্রি করেন। গত দুই বছর করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। এ বছরও ঈদুল ফিতরের মৌসুমকে লক্ষ্য করে টিকে থাকার লড়াইয়ে পোশাক উৎপাদন করেছিল কারখানাগুলো।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এ বছর করোনার প্রভাব না থাকায় এবং কোনো বাধানিষেধ না থাকায় কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টসপল্লিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি তৈরি পোশাক বিক্রি হয়েছে। পর্যাপ্ত মজুত না থাকায় অনেক ব্যবসায়ী চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে পারছেন না।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টসপল্লি থেকে সারা দেশে পাইকারি মূল্যে পোশাক সরবরাহ করা হয়। ফলে পবিত্র শবে মিরাজের পর থেকেই মূলত শুরু হয় কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টসপল্লির ঈদুল ফিতরের মৌসুম। প্রথম দিকে বেচাকেনা কম হলেও শবে বরাতের পর বেচাকেনা পুরোদস্তুর জমে ওঠে। আবার রমজান মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই শেষ হয়ে যায় ঈদের বেচাকেনা।

লাকি সেভেন গার্মেন্টসের মালিক মো. বরকত বলেন, ‘গত দুই বছরে করোনার ধাক্কায় আমরা দিশেহারা ছিলাম। আমরা পুঁজি হারাতে বসেছি। অনেক সাহস করে, ঝুঁকি নিয়ে এবার ঈদ মৌসুমকে লক্ষ্য করে ৮ হাজার প্যান্ট তৈরি করেছি। ইতিমধ্যে সাড়ে ৬ হাজার বিক্রি হয়ে গেছে। আরও ৫ হাজার প্যান্ট মজুত করতে পারলে এ বছরই আগের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারতাম।’

বাগেরহাট থেকে পোশাক কিনতে এসেছিলেন ইমামুল হক। তিনি বলেন, ‘আমি সারা বছরই কেরানীগঞ্জ থেকে মাল নিয়ে ব্যবসা করি। এ বছর ঈদ মৌসুমকে সামনে রেখে পোশাক কেনার জন্য এসেছি। তবে এবার পোশাকের দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। তা ছাড়া ব্যবসায়ীরাও চাহিদা অনুযায়ী পোশাক সরবরাহ করতে পারছেন না।’

কালীগঞ্জ নূর সুপার মার্কেটের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মো. ফায়সাল বলেন, ‘গত কয়েক মৌসুমে আমরা ব্যবসা করতে পারিনি। আগের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার একটু বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, এ বছর ব্যবসা ভালো হয়েছে।’

আরেক ব্যবসায়ী সেকান্দার আলী বলেন, ‘পুঁজির অভাবে আমরা ভালোমতো মজুত করতে পারিনি। যতটুকু মাল করেছি তা বিক্রি হয়ে গেছে। এখন হাতে টাকা আছে কিন্তু নতুন করে উৎপাদনের সময় নেই। বিক্রীত মালের টাকা দিয়ে নতুন করে উৎপাদন করতে গেলে মৌসুম শেষ হয়ে যাবে।’

ব্যবসায়ীরা এ বছর লক্ষ্য অনুযায়ী বিক্রি করতে পেরেছেন জানিয়ে কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির সভাপতি স্বাধীন শেখ বলেন, ‘এভাবে চললে আমরা করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারব। বেচাকেনা ভালো হওয়ায় রমজান মাস শুরুর আগেই পণ্য শেষ হয়ে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

সাবেক ‘র’-এর প্রধানের নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত