Ajker Patrika

বাংলাদেশের সোনা জয়ের সম্ভাবনা

নাজিম আল শমষের, ঢাকা
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২২, ১৮: ০৮
বাংলাদেশের সোনা জয়ের সম্ভাবনা

প্রশ্ন: বাংলাদেশে এসেছেন বেশ কিছুদিন হয়ে গেছে। এ সময়ে বাংলাদেশি শুটারদের মধ্যে কতটা সম্ভাবনা দেখতে পেলেন?
জায়ের রেজায়েই: গত কদিনে ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করে যতটুকু বুঝলাম, বাংলাদেশ বেশ কয়েকজন মেধাবী শুটার তৈরি করেছে। এদের প্রতিভা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে মনে হয়েছে ঠিক কীভাবে শুট করতে হবে, এই জায়গাটায় তাদের ঘাটতি আছে। এখানে শেখাতে এসেছি। এটা নিশ্চিত শুটাররা ভবিষ্যতে অবশ্যই ভালো কিছু করবে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ নিয়ে আপনার জানাশোনা কেমন?
রেজা: খুব বেশি জানি না। এই অল্প কদিনে শুটিং রেঞ্জ, অ্যাথলেটদের সম্পর্কে জানতে জানতেই সময় পার হয়ে গেল। ফেডারেশন যথেষ্ট সহায়তা করছে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের শুটারদের মনস্তাত্ত্বিক ঘাটতি থাকার অভিযোগ শোনা যায়। এ জায়গায় কীভাবে কাজ করতে চান?
রেজা: মনস্তাত্ত্বিক বিষয় অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিশেষ অনুশীলনের মাধ্যমে এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। অনুশীলন যদি ঠিকঠাক কাজে লাগানো যায়, তাহলে শুটারদের আত্মবিশ্বাস বেশ বেড়ে যাবে। অনুশীলনটাই হলো এখানে মূল বিষয়। কথা দিয়ে যদি কাজ হতো তাহলে শুটিংয়ের প্রয়োজনই পড়ত না। বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজন শুটারের মনস্তাত্ত্বিক জায়গায় উন্নতি সম্ভব। 

প্রশ্ন: এ ক্ষেত্রে আপনার কি বিশেষ পরিকল্পনা আছে?
রেজা: অবশ্যই আছে। জানি, একজন শুটার ঠিক কোথায় সমস্যা অনুভব করে। তখন তার মনের ভেতর কী চলতে থাকে, সেটাও জানি। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে ভালো পরিকল্পনা, ভালো প্রশিক্ষণের দরকার। সব যদি ঠিকঠাকভাবে কাজে লাগানো যায়, তাহলে শুটারদের যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

প্রশ্ন: ইরানের জাতীয় দলের সঙ্গে লম্বা সময় কাজ করেছেন। এখন বাংলাদেশে এসেছেন। দুই দেশের শুটারদের কতটা পার্থক্য মনে হয়?
রেজা: ইরানে শুটারের ছড়াছড়ি। বাংলাদেশে ঠিক কতজন শুটার আছে, সেই সংখ্যা আমার জানা নেই। ইরানে শুটিং লিগ আয়োজন করা হয় নিয়মিত। এটা গুরুত্বপূর্ণ। ইরানি একজন শুটার প্রতিমাসে অন্তত দুটো প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। আর একটি প্রতিযোগিতা মানে অন্তত ২ মাসের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হয়ে যাওয়া। বাংলাদেশে বেশি বেশি প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে। সম্ভব হলে লিগ পদ্ধতির ব্যবস্থা করা। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো এই লিগের পৃষ্ঠপোষক হতে পারে। শুটারদেরও আয়ের একটা ব্যবস্থা হবে তাতে। তাদের দক্ষতা বাড়বে। ভারতকে দেখুন, তাদের অন্তত ৬০ হাজার পেশাদার শুটার আছে। অসংখ্য প্রতিযোগিতা, বিশাল পাইপলাইন। বাংলাদেশেও এমনটা হওয়া উচিত। বাংলাদেশ-ভারতের ঐতিহ্যগত মিল রয়েছে। ভারত পারলে বাংলাদেশেরও পারা উচিত।

প্রশ্ন: ফেডারেশনকে আপনার এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন?
রেজা: ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইন্তেখাবুল হামিদকে বলেছি। লিগ আয়োজনের পরিকল্পনাটা তাঁর ভালো লেগেছে।

প্রশ্ন: সব কোচের নিজস্ব কিছু দর্শন থাকে। আপনি কোন দর্শনে এগোতে পছন্দ করেন?
রেজা: অনুশীলন, অনুশীলন আর অনুশীলন। একমাত্র অনুশীলনই একজন অ্যাথলেটের জীবন পাল্টে দিতে পারে। কঠোর অনুশীলন, ভালো মানের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা আর ভালো সরঞ্জামাদি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন—ধরুন একটা ভালো রাইফেল, এমনকি ট্রাউজার থেকে শুরু করে জ্যাকেটের মতো জিনিসগুলোও গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ দলে এসবে ঘাটতি আছে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের কোচ হয়েই বলেছেন, এশিয়ান গেমসে ভালো করতে চান। আপনার হাতে আছে আট মাসেরও কম সময়। এত অল্প সময়ে সাফল্য আনা সম্ভব?
রেজা: এমন নয় যে বাংলাদেশের শুটাররা মাত্র রাইফেল ধরা শিখেছে! অতীতে ভালো সাফল্য আছে, ছোট কিছু প্রতিযোগিতাও হয়েছে। পারফরম্যান্স আশাব্যঞ্জক। আমাদের অবশ্যই ভালো কিছু করা সম্ভব। আমরা অবশ্যই পারব।

প্রশ্ন: ডেনিস কোচ ক্লাভস ক্রিস্টেনসেনের অধীন কমনওয়েলথ গেমসে রুপা জিতেছিলেন শুটার আব্দুল্লাহ হেল বাকী। আপনার কোচিংয়ে তাঁর সোনা জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?
রেজা: অবশ্যই সম্ভব। শুধু বাকীই নয়, সবারই পদক জয়ের সম্ভাবনা আছে। এখানে প্রতিভা আছে, ভালো অ্যাথলেট আছে। এদের নিয়ে অবশ্যই ভালো কিছু আশা করা যায়। 

প্রশ্ন: এরই মধ্যে বাংলাদেশের শুটারদের মধ্যে কেউ আপনার বাড়তি নজর কাড়তে পেরেছেন?
রেজা: হ্যাঁ, পেয়েছি। কিন্তু তার নামটা এখন বলতে চাইছি না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত