Ajker Patrika

১০ পরিবার চলে কুমড়ো বড়ি তৈরি করে

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ২২
১০ পরিবার চলে কুমড়ো বড়ি তৈরি করে

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রামে ভাংশিং পাড়া। এ পাড়ার ৮-১০টি পরিবার কুমড়ো বড়ি তৈরির পেশায় যুক্ত। তাঁদের জীবন-জীবিকা চলে ওই কুমড়ো বড়ির আয় থেকে। পরিবারের সব সদস্যই কুমড়ো বড়ি তৈরি এবং তা হাটবাজারে বিক্রির কাজে ব্যস্ত থাকেন বছরজুড়েই।

পরিবারের লোকজনের পাশাপাশি দিনমজুরি ভিত্তিতেও কাজ করেন অনেক কারিগর। এ অঞ্চলের সুস্বাদু কুমড়ো বড়ি এলাকার চাহিদা মিটিয়েও দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হয়ে থাকে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাইকারেরা এখান থেকে কুমড়ো বড়ি কিনে বিক্রি করেন তাঁদের এলাকায়। এমনটা জানালেন ভাংশিং পাড়ার বাসিন্দা ও কুমড়ো বড়ি তৈরির কারিগর মো. শফিকুল ইসলাম।

উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রামের ভাংশিং পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি বাড়িতে আগের দিন সন্ধ্যায় ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়েছে। পরের দিন সকালে ভিজিয়ে রাখা অ্যাংকার জাতের ডাল মেশিনে পিষে খামির তৈরি করা হয়। এরপর সেই খামিরের সঙ্গে রং, তেল, মেশানো হয়। এরপর সেই খামির উন্মুক্ত জায়গায় বাঁশের চাটাই, টিন ও পাটি বিছিয়ে সারি সারি বড়ি তৈরি করে রোদে শুকানোর জন্য রাখা হয়। পরে শুকনো বড়িগুলো বিক্রির জন্য মেপে বস্তায় প্যাকেট করা হয়।

উপজেলার নওগাঁ গ্রামের ভাংশিং পাড়ার আব্দুল জলিল জানান, আগে কুমড়ো বড়ি তৈরিতে অনেক লাভ হতো। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি বড়ি ৬৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়।

আরেক কুমড়ো বড়ি কারিগর মো. মেহের আলী বলেন, বড়ি তৈরির উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভ আর আগের মতো হয় না। তারপরও বড়ির ব্যবসা করে অনেক পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে।

কারিগরেরা আরও বলেন, কুমড়ো বড়ি সারা বছর তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু এটা শীত মৌসুমে বেশি তৈরি করা হয়। আর এ সময় কুমড়ো বড়ির চাহিদাও বেশি থাকে।

নওগাঁ গ্রামের ভাংশিং পাড়ার কুমড়ো বড়ি চাতালে কর্মরত কারিগর মাজেদা বেগম বলেন, ‘আগে ডাল পাটায় বেটে কুমড়ো বড়ি তৈরি করা হতো। এতে পরিশ্রম বেশি হতো। কিন্তু এখন অতটা পরিশ্রম করতে হয় না। এখন মেশিনের মাধ্যমে ডাল পিষা হয়। শুধু হাত দিয়ে করতে হয় বড়িগুলো।’

পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ গ্রাম থেকে আসা কুমড়ো বড়ি পাইকার (ক্রেতা) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এ অঞ্চলের কুমড়ো বড়ি সুস্বাদু হয়ে থাকে। তাই ওই কুমড়ো বড়িপল্লি থেকে প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকা দরে কিনে এলাকায় নিয়ে বিক্রি করা হয়।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফুন্নাহার লুনা জানান, এ অঞ্চলের কুমড়ো বড়ির বেশ কদর আছে। পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকেরাই এ কাজ বেশি করে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত