Ajker Patrika

সোহরাওয়ার্দীর পাশে এক নারী

হাবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী 
সোহরাওয়ার্দীর পাশে এক নারী

গল্পটা বলেছিলেন কবি জসীমউদ্‌দীনকে। তাই গল্পের সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ ক্ষীণ। এমনকি যাঁকে নিয়ে কথা, সেই মোহন মিয়ার সামনেও বহুবার গল্পটা বলেছেন হাবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী। কখনো প্রতিবাদ আসেনি অপরপক্ষ থেকে।

ঘটনা কলকাতার। ব্যাপারটা হলো, ইউসুফ আলী চৌধুরী মানে মোহন মিয়া তখন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর বিরুদ্ধপক্ষে অবস্থান করছেন। একদিন তিনি দেখলেন, সোহরাওয়ার্দী একটি মেয়েকে গাড়িতে তুলে নিয়েছেন। মোহন মিয়া বুঝলেন, একজন নারীকে নিয়ে এই বিহারের খবর রটে গেলে সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি নিজের গাড়িতে সোহরাওয়ার্দীর পিছু নিলেন। বালিগঞ্জ পার হয়ে গাড়ি চলতে লাগল। সেখানে একটি বাড়িতে ঢুকলেন সোহরাওয়ার্দী আর সেই মেয়েটি। মোহন মিয়া একটু দূরে গাড়ি রেখে অপেক্ষায় থাকলেন।

প্রায় দেড় ঘণ্টা পর সেই বাড়ি থেকে বের হলেন তাঁরা দুজন। আহা! যদি প্রমাণ করা যায়, কোনো মেয়েকে ফুসলিয়ে সোহরাওয়ার্দী এখানে-ওখানে ঘুরছেন, তাহলে তাঁকে রাজনীতির মাঠ থেকে বিদায় দেওয়ার জন্য আর কোনো যুক্তি-প্রমাণই লাগবে না!

সোহরাওয়ার্দী নিজের পাশে বসিয়ে মেয়েটিকে নিয়ে এবার গেলেন মুসলিম লীগ অফিসে। একটি মেয়েকে নিয়ে মুসলিম লীগ অফিসে ঢুকতেও বিব্রত হলেন না সোহরাওয়ার্দী! মোহন মিয়ার মাথাটা এলোমেলো হয়ে গেল। পার্টি অফিস থেকে বের হয়ে সোহরাওয়ার্দী আর সেই মেয়েটি আবার গাড়িতে উঠলেন। কিছুদূর চলার পর মোহন মিয়া ড্রাইভারকে দ্রুত গাড়ি চালাতে বলে সোহরাওয়ার্দীর গাড়ির সামনে নিয়ে রাখলেন। বললেন, ‘গাড়ি থামাও।’

নারীটির দিকে তাকিয়ে মোহন মিয়ার আক্কেল গুড়ুম! এ তো মেয়ে নয়। তাঁরই বড় ভাই মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী ওরফে লাল মিয়া। লাল মিয়ার মাথায় বড় বড় চুল দেখে মোহন মিয়া তাঁকে নারী ভেবেছিলেন। 

সূত্র: জসীমউদ্‌দীনের প্রবন্ধসমূহ, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬১-৬২

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত