Ajker Patrika

ধুলায় বিপর্যস্ত জনজীবন

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬: ২৮
ধুলায় বিপর্যস্ত জনজীবন

উন্নয়নকাজে খোঁড়াখুঁড়ি, রাস্তায় খানাখন্দ ও ধুলার দূষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ময়মনসিংহের প্রবেশ পথ শম্ভুগঞ্জ মোড় থেকে পাটগুদাম ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তায় ধুলার দূষণে চার জেলার মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ভোগান্তির কথা স্বীকার করে ধুলা দূরীকরণে নিয়মিত পানি দেওয়ার কথা জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

বিগত ছয় মাস ধরে ময়মনসিংহ থেকে ফুলপুর পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্ত করণের কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ ছাড়াও মটকি ভাঙা সেতুর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন আরেকটি সেতুর কাজ চলমান রয়েছে। রাস্তার দুপাশে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে রোদ উঠলেই বাড়ে ধুলার দূষণ আর বৃষ্টি হলেই কাদা। ময়মনসিংহ শহরের প্রবেশ পথের এই রাস্তা দিয়ে নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর এবং জামালপুর ছাড়াও বেশ কয়েক জেলার মানুষ যাতায়াত করে। তবে এই রাস্তায় ধুলায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি। অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন রাস্তার দুপাশের ব্যবসায়ীরা। বাড়ছে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি এবং অ্যালার্জির মতো রোগ।

ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে হালুয়াঘাটগামী ইমাম পরিবহনের যাত্রী আশরাফ হোসেন বলেন, ‘রাস্তার উন্নয়ন হচ্ছে ভালো কথা, কিন্তু ছয়টা মাস ধরে একটু রাস্তায় ধুলা, কাদা এবং জ্যামের জন্য ঘণ্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়।’

শম্ভুগঞ্জ বাজারের ধান ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘শহর থেকে প্রতিদিন গুদামে এসে গোসল করি এবং গুদাম থেকে শহরে গিয়ে আবার গোসল করতে হয়। এমন ধুলা বাপের জনমেও দেখিনি। প্রায় সময় নাক মুখ বন্ধ হয়ে আসে।’

হোটেল ব্যবসায়ী শরাফ উদ্দিন বলেন, ‘ধুলা বালির কারণে হোটেলে কেউ খাবার খেতে আসে না। ১০ মিনিট হোটেল খোলা থাকলেই সাদা হয়ে পড়ে। ছয় মাস ধরে ব্যবসা নেই। ঘর বাড়া ঠিকই দিতে হচ্ছে। কিছুদিন ক্যাশে বসে শ্বাস কষ্ট বেড়েছিল।’

স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফ আলী বলেন, ‘এমন ধীর গতির কাজ কখনো দেখি নেই। আজকে একটু খোঁড়ে কাল আরেকটু খোঁড়ে। মটকি ভাঙা ব্রিজের স্লাভ ভেঙে যাওয়ায় যান চলে ধীর গতিতে। প্রতিদিনই জ্যামের ভোগান্তি রয়েছে, ধুলা তো আছেই। যত দিন পর্যন্ত রাস্তার কাজ শেষ না হবে তত দিন এই এলাকার সামাজিক মর্যাদা বাড়বে না।’

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান এবং গলা বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. ফরিদ আল রিয়াদ বলেন, ‘ধুলা নাকের ভেতরে ঢুকে নাকের সাইনান্স ফুলে সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, হাঁচি এবং অ্যালার্জির মতো রোগে ভুগতে হয়। ধুলাবালি শরীরের অন্য রোগগুলোকে সতেজ করে মারাত্মক ক্ষতি করারচেষ্টা করে।’

ময়মনসিংহ পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ফরিদ আহমদ বলেন, ‘পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে ধুলাবালি। আমরা সব সময় বলে থাকি নতুন রাস্তার কাজ করতে হলে নিয়মিত পানি দেওয়ার জন্য। কিন্তু অনেকেই মানেন না, এতে করে আমাদের শারীরিক সমস্যা বাড়ছে।’

ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘উন্নয়নকাজ হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি একটু পোহাতেই হয়। অনেক দিন ধরে সড়কে কাজ চলায় নানা সমস্যা হচ্ছে তা বুঝতে পারছি। তবে রাস্তায় পানি ছিটানোর বিষয়টা ওভাবে ভাবা হয়নি। যেহেতু এ নিয়ে কথা উঠেছে, সে হেতু পানি ছিটানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত