Ajker Patrika

ওস্তাদ রশিদ খান

সম্পাদকীয়
ওস্তাদ রশিদ খান

ওস্তাদ রশিদ খান ছিলেন ‘রামপুর-সাসওয়ান’ ঘরানার শিল্পী। তাঁর জন্ম ১৯৬৮ সালের ১ জুলাই ভারতের উত্তর প্রদেশের বদায়ূঁ গ্রামে। ছোটবেলায় গানের চেয়ে ফুটবল ও ক্রিকেটের প্রতি দুর্বার আকর্ষণ ছিল। গানের রেওয়াজ ভালো লাগত না। কিন্তু দাদা ওস্তাদ নিসার হুসেন খাঁ-সাহেবের কড়া শাসনে তিনি শৈশবে সংগীত চর্চা করতে বাধ্য হন। দাদার পাশাপাশি মামা গোয়ালিয়র ঘরানার ওস্তাদ গুলাম মুস্তাফা খাঁ-সাহেবের কাছ থেকেও তালিম নিয়েছেন তিনি।

তিনি দাদার সঙ্গে কলকাতায় এসে আইটিসি সংগীত একাডেমিতে ভর্তি হন ১১ বছর বয়সে। কারণ দাদা এখানকার শিক্ষক ছিলেন। এখানে শুরু হয় তাঁর শাস্ত্রীয় সংগীতের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। সেই ১১ বছর বয়সেই তিনি মঞ্চে প্রথম সংগীত পরিবেশন করেন। এর পরের বছর ১৯৭৮ সালে দিল্লিতে আইটিসি সংগীত সম্মেলনে সংগীত পরিবেশন করেন এবং অতি অল্প বয়সেই তাঁর সংগীত গায়কি সবাইকে আকৃষ্ট করে।

১৯৯৪ সালে প্রাতিষ্ঠানিক সংগীত পাঠ শেষ করে ওস্তাদ রশিদ খান পরিপূর্ণ সংগীতশিল্পীরূপে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর কলকাতাতেই স্থায়ী হন।

ঘরানাকেন্দ্রিকতা কখনোই ওস্তাদ রশিদ খানকে আটকে রাখতে পারেনি। তাই শাস্ত্রীয় সংগীত গাইলেও ফিউশন, বলিউড ও টলিউডের অনেক সিনেমায় গান গেয়েছেন তিনি। গেয়েছেন রবীন্দ্রসংগীতও।

সর্বদা বিনয়ী, নীতিমান ও ন্যায়নিষ্ঠ মানুষটি সংগীতচর্চার পাশাপাশি একটি সুস্থ সমাজ গঠনের স্বপ্নে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের প্রতিনিয়ত সংগীত সাধনা করতে তিনি সর্বদা উৎসাহিত করেছেন। সামাজিক ও উদার মানুষ হিসেবে তিনি সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার ওপর।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘ভালো গান গাইতে শেখার আগে ভালো মানুষ হও। মনকে উদার করতে শেখো। হৃদয় যার উন্মুক্ত নয়, উন্মুক্ত সুর তার কণ্ঠ থেকে কীভাবে উৎসারিত হবে?’

তিনি এ বছরের ৯ জানুয়ারি মাত্র ৫৬ বছর বয়সে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত