Ajker Patrika

আমনে কৃষকের হাসি

এস এস শোহান, বাগেরহাট
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮: ০৩
আমনে কৃষকের হাসি

বাগেরহাটে শীতের শুরুতে আমন ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। অনুকূল আবহাওয়ায় জেলায় এবার আমনের আশানুরূপ ফলন হয়েছে। ধানের উপযুক্ত দামে খুশি চাষিরা। দ্রুত ধান কেটে বোরো রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা।

বাগেরহাট জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এ বছর আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৪ হাজার ৪১০ হেক্টর। আমনের আবাদ হয়েছে ৭৪ হাজার ৫ হেক্টর। এতে দুই লাখ ৪২ হাজার ৪৮০ মেট্রিকটন ধান উৎপাদন হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের। জেলার ফকিরহাট, রামপাল, মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলায় সবচেয়ে বেশি আমনের আবাদ হয়েছে। এ ছাড়া চিতলমারী, মোল্লাহাট, কচুয়া এবং বাগেরহাট সদর উপজেলায়ও কিছু কিছু এলাকায় আমনের চাষ হয়েছে।

অগ্রহায়ণের শুরু থেকেই ধান কাটা শুরু করেছে চাষিরা। কারও কারও ধানে কেবল সোনালি রং এসেছে, কয়েক দিনের মধ্যে কাটবেন। আবার কেউ কেউ ধান কেটে গোলায় ভরেছেন ইতিমধ্যে। কেউ আবার বিক্রিও করছেন প্রয়োজন অনুযায়ী। ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করছেন চাষিরা। শ্রমিকের মজুরিও রয়েছে সাধ্যের মধ্যে। তিন বেলা খেয়ে ৪০০ এবং না খেয়ে ৫০০ টাকা দিনে ধান কাটছেন শ্রমিকেরা। অনুকূল আবহাওয়া, ভালো দাম, হালকা শীত সব মিলিয়ে আমনচাষিদের মনে এক ধরনের আনন্দ বিরাজ করছে।

ফকিরহাট উপজেলার ছোট বাহিরদিয়া এলাকার আমনচাষি এস এম মোস্তফা হাসান বলেন, আমন ধান চাষ করা কৃষকদের পক্ষে এক ধরনের ঝুঁকির কাজ। আমনের বীজতলা প্রস্তুত থেকে ধানে মোচা আসা পর্যন্ত এলাকায় ঝড়-বৃষ্টি লেগে থাকে। এর পরেও আল্লাহর ওপর ভরসা করে তাঁরা ধান লাগান।

তবে এ বছর বীজতলা তৈরির সময় অতিবৃষ্টিতে কিছু বীজ নষ্ট হলেও সব মিলিয়ে ধান ভালো হয়েছে। তাঁর আট বিঘা জমিতে ১৫০ মণের মতো ধান হয়েছে। বর্তমানে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা দরে মণ বিক্রি করতে পারছেন। অপেক্ষা করলে আরও বেশি দামে বিক্রি করা যাবে।

একই উপজেলার পিলজংগ গ্রামের বীরেন বৈরাগী বলেন, দুই বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলেন। ফলন ভালোই হয়েছে। দ্রুত ধান কাটছেন। এই ধান ঘরে তুলেই বোরো ধান লাগানোর প্রস্তুতি নেবেন।

মোরেলগঞ্জের কালিকাবাড়ি এলাকার সজল শিকদার বলেন, ‘আমন ধানের ফলন হাইব্রিড ধানের থেকে কম। তারপরও আমরা আমন ধান লাগাই, কারণ এটা আমাদের এলাকার ঐতিহ্য। ছোটবেলা থেকেই আমরা আমন ধানের চাল খেয়ে বড় হয়েছি। এক বিঘা জমিতে আমনের চাষ করতে সাধারণত ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। ধান উৎপাদন হয় ১২ থেকে ১৫ মণ। অনেক সময় ভালো ধান হলে ২০ মণ হয়ে যায়। তবে এর পরিমাণ খুবই কম।’

শরণখোলার রায়েন্দা এলাকার আমনচাষি খালেক মুন্সি বলেন, ‘এবার আমাদের এলাকার বেশির ভাগ মানুষের আমন ধানের চারা নষ্ট হয়েছিল। ভাবছিলাম এবারের মৌসুম মার খাব, ধান ফলাতে পারব না। আল্লাহর রহমতে ধান ভালোই হয়েছে। এক একরে প্রায় ৪০ মণের মতো ধান পাব আশা করি।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোতাহার হোসেন বলেন, এ বছর নানা কারণে জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জিত হয়নি। তারপরও এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে ধানের দামও ভালো আছে। কোনো দুষ্টচক্র সিন্ডিকেট করে যাতে ধানের দাম না কমাতে পারে এ জন্যও কৃষি বিভাগের নজরদারি রয়েছে বলে জানান তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

তথ্য যাচাইয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করবেন—ইউটিউব চ্যানেলে সিইসির বার্তা

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

ফরিদপুরে চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে সেবা বন্ধের ঘোষণা

দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ছাত্রদলের বহিষ্কৃত ২ নেতাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত