Ajker Patrika

সমুদ্রসৈকত, অরণ্য ঘেরা পটুয়াখালীর সোনার চর

মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৫৯
সমুদ্রসৈকত, অরণ্য ঘেরা পটুয়াখালীর সোনার চর

বঙ্গোপসাগরের কোলে সোনার চরকে প্রকৃতি সাজিয়েছে অকৃপণ হাতে। এখানে আছে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ও সাত কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। বন বিভাগের সংরক্ষিত এই বনাঞ্চলে আছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ও বুনো পশু পাখি। নগরের কর্মচাঞ্চল্য থেকে বহুদূরে এই সৈকতের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য এখনো অনেক পর্যটকের অজানা। পর্যটনের অপার এই সম্ভাবনাকে এবার কাজে লাগাতে সোনার চরকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

জানা গেছে, প্রায় ৫০ বছর আগে রাঙ্গাবালী উপজেলার কোল ঘেঁষে জেগে ওঠে সোনার চর। সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের সময় সোনালি রং ধারণ করে এর সৈকত। এ কারণেই এর নাম দেওয়া হয় সোনার চর। ২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বর এখানকার বন্যপ্রাণীদের জন্য ২০২৬.৪৮ হেক্টর জমি নিয়ে অভয়ারণ্য ঘোষণা করে সরকার। পরবর্তীতে বন বিভাগ বনায়ন করে ওই বনে ছাড়ে ৩০০ হরিণ ও কিছু বানর। এ ছাড়া এখানে আছে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও নানা প্রজাতির পাখ-পাঠালে।

সংরক্ষিত বনাঞ্চলের উত্তর এবং পশ্চিমে বুড়া গৌড়াঙ্গ নদী এবং দক্ষিণ ও পূর্ব পাশে আছে বঙ্গোপসাগর। দক্ষিণ পূর্ব দিকে রয়েছে সাত কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। দুই পাশে সারি সারি বিভিন্ন প্রজাতির গাছগাছালির মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ছোট-বড় খাল। বনের মধ্যে রয়েছে কেওড়া, সুন্দরী, ছৌলা, করমচা, হেতাল, বাবলা, নোনাঝাউ, গোলপাতাসহ হরেক প্রজাতির গাছপালা। বুনো শূকর, বন বিড়াল, গুই সাপে দেখা মেলে এখানে। আর এ চরেই সারা দিনই পাখির কলরবে মুখর থাকে পুরো চর। বিশেষ করে শীত মৌসুমে ১০ লক্ষাধিক অতিথি পাখির সমাগম ঘটে এখানে। গাঙচিল, পাতিহাঁস, সাইবেরিয়ান লালহাঁস, পানকৌড়ি, বক, মদনটাক উড়ে বেড়ায় এখানে-সেখানে।

গলাচিপা লঞ্চঘাট থেকে স্পিড বোটে সোনার চরে যেতে সময় লাগে মাত্র দেড় ঘণ্টা। গলাচিপা থেকে সোনার চর রিজার্ভ ট্রলারে যাওয়া যায়। আবার গলাচিপা থেকে চর মন্তাজ পর্যন্ত প্রতিদিন লঞ্চ যাতায়াত করে। সেখান থেকেও যাওয়া যায় সোনার চর। চর মনতাজে রয়েছে বন বিভাগ, স্যাপ বাংলাদেশ ও মহিলা উন্নয়ন সমিতির ব্যবস্থাপনায় বাংলো। আরও রয়েছে কিছু হোটেল। এ ছাড়া রয়েছে বন বিভাগের ক্যাম্প। আপনি যদি রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পেতে চান তবে চরেই তাঁবু খাঁটিয়ে থাকতে পারেন।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে সৈকত লাগোয়া এলাকার বেশ কিছু গাছ মারা গেছে, যার ফলে এখানে আগত পর্যটকেরা কিছুটা হতাশা প্রকাশ করছেন।

পটুয়াখালী উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সোনার চরের সৈকতের গাছের গোড়ায় বেশি বালু জমায় গাছগুলো মারা গেছে। তবে সোনারচরের পূর্বদিকে জেগে ওঠা নতুন চরে ম্যানগ্রোভ বন সৃজন করার পাশাপাশি এখানে সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে জানতে বিশেষ একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।’

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘সোনার চরসহ আশপাশের দ্বীপ ও চর নিয়ে বিশেষ পর্যটন এলাকা ঘোষণার জন্য বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ জন্য রাঙ্গাবালী উপজেলার সঙ্গে ফেরি সার্ভিস চালু করার কথাও রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারা বড় হলে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিত হবে: সেনাপ্রধান

যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকারকে বহিষ্কারের কারণ জানাল এনসিপি

পাহাড়ের মাটিতে এখন মরুভূমির ফলের স্বাদ

আবাসন কোম্পানির অনিয়ম অনুসন্ধানে গড়িমসি, দুদকের উপপরিচালক বরখাস্ত

বিপুল বকেয়া সত্ত্বেও ব্যবসা হারানোর ভয়ে বাংলাদেশ-নেপালে সম্প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় চ্যানেলগুলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত