সাকীব মৃধা
‘আপনি বাসার এত কাজ করেন!’ ‘আন্টি আপনাকে দিয়ে এত কাজ করান? আন্টি তো জোস!’—ঢাকা ছেড়ে পঞ্চগড়ে চলে আসার পর থেকে ঘরে ও মাঠে নিজের কাজকর্মের ছবি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করার পর থেকে প্রায়ই ইনবক্সে এমন মেসেজ আসে। খানিকটা যে গর্ব হয় না তা নয়, কিন্তু এমনটা কী হওয়ার কথা? ছেলে হোক বা মেয়ে, বাসার কাজ সবারই জানা উচিত না?
আমরা দুই ভাই ঘরের প্রায় সব ধরনের কাজে কমবেশি পারদর্শী। এর পেছনে অবদান রয়েছে আমাদের মা আর বাবার। ছোটবেলা থেকেই ঘর ঝাড় দেওয়া থেকে শুরু করে বাসন ধোয়া, কাপড় কাচা ও ইস্তিরি করা, পানির ট্যাংক পরিষ্কার করা—আমাদের দিয়ে ঘরের হেন কোনো কাজ নেই যে তাঁরা করাননি।
আমি যখন কেজি বা প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী, আব্বা মাঝে মাঝে আমাকে তাঁর জুতা পলিশ করে দিতে বলতেন। বিরক্ত হতাম এই ভেবে যে জুতা কেন আমাকে পলিশ করে দিতে হবে? এই কাজ তো আমার না! অনেক বছর পরে এসে বুঝতে পেরেছিলাম, নিজের জুতা পলিশ করতে জানাটা আসলেই খুব দরকার। আর এ কাজটার মাধ্যমে আব্বা যে শিক্ষাটা দিতে চেয়েছিলেন তা বুঝেছি আরও পরে—কারও কোনো সৎ কাজই ছোট নয়।
আমার বয়স যখন আট বা নয়, তখন বাজার করার হাতেখড়ি হয়। বাসা থেকে বাজার ছিল প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্বে। হেঁটে বাজার করে আবার হেঁটে চলে গেছি বাসায়। বাজারের পরিমাণ বেশি হলে অন্য কথা। আরেকটু বড় হলে পানির বিল, কারেন্ট বিল দেওয়া শেখানো হলো। তখন বিকাশ-নগদ ছিল না। হা-হুতাশ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে বিল দেওয়া লাগত। এর মাঝেই বিছানা ঝাড়া, চাদর বিছানো, ঈদ এলে বাসার সব ফ্যান ও ক্রোকারিজ পরিষ্কার করার শিক্ষা পেয়ে গেছি।
১৯৯৮ সালের দিকের কথা। একবার আম্মা আমাকে দিয়ে লিভিং রুমে নাশতা পাঠাচ্ছেন মেহমানদের জন্য। যাঁরা এসেছেন তাঁদের বাড়ির কর্ত্রী আম্মাকে অনেকটা তাচ্ছিল্যের স্বরেই জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘ছেলেকে দিয়ে নাশতা পাঠাচ্ছেন কেন?’ আম্মা কোনো রাখঢাক না করেই বলেছিলেন, ‘ভালো কাজই তো করাচ্ছি, ছেলেরা ঘরের কাজ করবে না?’
দেশে-বিদেশে একা থাকার কারণে রান্নাটা বেশ রপ্ত করা হয়ে গেছে। প্রতিদিনের রান্নার পাশাপাশি পিৎজা, কেক, পাউরুটি, ক্রস্যান্টের মতো বেকিং আইটেমও বানানো শিখে গেছি। এসবের পেছনে ভাইয়ার অনুপ্রেরণা, আমার খুব কাছের বন্ধুদের আর ইউটিউবের অবদানই বেশি। রান্না জানাটা যে কত জরুরি, তা শহরের হোস্টেলে থাকা লাখ লাখ শিক্ষার্থী আর নতুন কর্মজীবীরা জানেন। অথচ অল্পস্বল্প রান্নার শিক্ষাটা বেশির ভাগ ছেলেকেই বাসা থেকে দেওয়া হয় না।
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে দেশের বেশ কিছু স্বনামধন্য মিডিয়া হাউসে কাজ করে তেঁতুলিয়ায় এসে ছাগল পালা ও ঘাস কাটারও অভিজ্ঞতা হয়েছে। এখন চা-বাগানে দিনে দুয়েকবার করে পোকা খুঁজি, কোন কীটনাশক দিতে হবে নির্ণয় করি, মাঝে মাঝে আব্বার সঙ্গে তাঁর সবজির বাগানে পানি দিই; তাতে আমার মান যাচ্ছে না, যাবেও না।
মোদ্দাকথা, আমি আমার পরিবার থেকে শিক্ষা পেয়ে এসেছি যে কোনো কাজই ছোট না; বরং কাজ জানতে ও করতে সংকোচের কিছু নেই, এর ভেতর আলাদা একটা আনন্দ আছে, গর্ব আছে। আজকে যেসব কাজ করতে পারার কারণে সাধুবাদ পাচ্ছি, তা থেকে খুব সহজে বোঝা যায় বেশির ভাগ পরিবারেই ছেলেদের দিয়ে কাজ করানো হয় না। অথচ এসব কাজ হচ্ছে ‘বেসিক লাইফ স্কিল’। বাসার কাজ জানার ক্ষেত্রে লিঙ্গভেদের কিছু নেই। ছেলে ও মেয়ে উভয়কেই সব ধরনের কাজ, ‘ফ্যামিলি ভ্যালু’, ত্যাগ শেখানোর পাশাপাশি মানুষকে সাহায্য করতে শেখানো উচিত, যেন দুর্দিনে তারা মানুষের পাশে থাকে।
‘আপনি বাসার এত কাজ করেন!’ ‘আন্টি আপনাকে দিয়ে এত কাজ করান? আন্টি তো জোস!’—ঢাকা ছেড়ে পঞ্চগড়ে চলে আসার পর থেকে ঘরে ও মাঠে নিজের কাজকর্মের ছবি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করার পর থেকে প্রায়ই ইনবক্সে এমন মেসেজ আসে। খানিকটা যে গর্ব হয় না তা নয়, কিন্তু এমনটা কী হওয়ার কথা? ছেলে হোক বা মেয়ে, বাসার কাজ সবারই জানা উচিত না?
আমরা দুই ভাই ঘরের প্রায় সব ধরনের কাজে কমবেশি পারদর্শী। এর পেছনে অবদান রয়েছে আমাদের মা আর বাবার। ছোটবেলা থেকেই ঘর ঝাড় দেওয়া থেকে শুরু করে বাসন ধোয়া, কাপড় কাচা ও ইস্তিরি করা, পানির ট্যাংক পরিষ্কার করা—আমাদের দিয়ে ঘরের হেন কোনো কাজ নেই যে তাঁরা করাননি।
আমি যখন কেজি বা প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী, আব্বা মাঝে মাঝে আমাকে তাঁর জুতা পলিশ করে দিতে বলতেন। বিরক্ত হতাম এই ভেবে যে জুতা কেন আমাকে পলিশ করে দিতে হবে? এই কাজ তো আমার না! অনেক বছর পরে এসে বুঝতে পেরেছিলাম, নিজের জুতা পলিশ করতে জানাটা আসলেই খুব দরকার। আর এ কাজটার মাধ্যমে আব্বা যে শিক্ষাটা দিতে চেয়েছিলেন তা বুঝেছি আরও পরে—কারও কোনো সৎ কাজই ছোট নয়।
আমার বয়স যখন আট বা নয়, তখন বাজার করার হাতেখড়ি হয়। বাসা থেকে বাজার ছিল প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্বে। হেঁটে বাজার করে আবার হেঁটে চলে গেছি বাসায়। বাজারের পরিমাণ বেশি হলে অন্য কথা। আরেকটু বড় হলে পানির বিল, কারেন্ট বিল দেওয়া শেখানো হলো। তখন বিকাশ-নগদ ছিল না। হা-হুতাশ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে বিল দেওয়া লাগত। এর মাঝেই বিছানা ঝাড়া, চাদর বিছানো, ঈদ এলে বাসার সব ফ্যান ও ক্রোকারিজ পরিষ্কার করার শিক্ষা পেয়ে গেছি।
১৯৯৮ সালের দিকের কথা। একবার আম্মা আমাকে দিয়ে লিভিং রুমে নাশতা পাঠাচ্ছেন মেহমানদের জন্য। যাঁরা এসেছেন তাঁদের বাড়ির কর্ত্রী আম্মাকে অনেকটা তাচ্ছিল্যের স্বরেই জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘ছেলেকে দিয়ে নাশতা পাঠাচ্ছেন কেন?’ আম্মা কোনো রাখঢাক না করেই বলেছিলেন, ‘ভালো কাজই তো করাচ্ছি, ছেলেরা ঘরের কাজ করবে না?’
দেশে-বিদেশে একা থাকার কারণে রান্নাটা বেশ রপ্ত করা হয়ে গেছে। প্রতিদিনের রান্নার পাশাপাশি পিৎজা, কেক, পাউরুটি, ক্রস্যান্টের মতো বেকিং আইটেমও বানানো শিখে গেছি। এসবের পেছনে ভাইয়ার অনুপ্রেরণা, আমার খুব কাছের বন্ধুদের আর ইউটিউবের অবদানই বেশি। রান্না জানাটা যে কত জরুরি, তা শহরের হোস্টেলে থাকা লাখ লাখ শিক্ষার্থী আর নতুন কর্মজীবীরা জানেন। অথচ অল্পস্বল্প রান্নার শিক্ষাটা বেশির ভাগ ছেলেকেই বাসা থেকে দেওয়া হয় না।
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে দেশের বেশ কিছু স্বনামধন্য মিডিয়া হাউসে কাজ করে তেঁতুলিয়ায় এসে ছাগল পালা ও ঘাস কাটারও অভিজ্ঞতা হয়েছে। এখন চা-বাগানে দিনে দুয়েকবার করে পোকা খুঁজি, কোন কীটনাশক দিতে হবে নির্ণয় করি, মাঝে মাঝে আব্বার সঙ্গে তাঁর সবজির বাগানে পানি দিই; তাতে আমার মান যাচ্ছে না, যাবেও না।
মোদ্দাকথা, আমি আমার পরিবার থেকে শিক্ষা পেয়ে এসেছি যে কোনো কাজই ছোট না; বরং কাজ জানতে ও করতে সংকোচের কিছু নেই, এর ভেতর আলাদা একটা আনন্দ আছে, গর্ব আছে। আজকে যেসব কাজ করতে পারার কারণে সাধুবাদ পাচ্ছি, তা থেকে খুব সহজে বোঝা যায় বেশির ভাগ পরিবারেই ছেলেদের দিয়ে কাজ করানো হয় না। অথচ এসব কাজ হচ্ছে ‘বেসিক লাইফ স্কিল’। বাসার কাজ জানার ক্ষেত্রে লিঙ্গভেদের কিছু নেই। ছেলে ও মেয়ে উভয়কেই সব ধরনের কাজ, ‘ফ্যামিলি ভ্যালু’, ত্যাগ শেখানোর পাশাপাশি মানুষকে সাহায্য করতে শেখানো উচিত, যেন দুর্দিনে তারা মানুষের পাশে থাকে।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৩ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৩ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৪ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫