Ajker Patrika

পশুর একটিই হাসপাতাল তাতেও নেই চিকিৎসক

মিন্টু মিয়া, নান্দাইল
পশুর একটিই হাসপাতাল তাতেও নেই চিকিৎসক

চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের ঘোষপালা গ্রামের হোসনা আক্তার (৪৫) সকাল ১০টায় একটি বাছুর নিয়ে এসেছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে।

বাছুরটি শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগছে। তাই বড় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু তিনি না থাকায়   উপসহকারী প্রাণিসম্পদের কাছ থেকে চিকিৎসা নেন হোসনা। শুধু হোসনা আক্তার নন, অনেকেই বড় চিকিৎসকের আশায় পশু-পাখি নিয়ে এসে ফিরে যাচ্ছেন।

হাসপাতালে ঢুকতেই দক্ষিণ পাশে টিনশেডের নিচে দেখা যায় একটি ছাগলের বাচ্চার পেট থেকে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রস্রাব বের করছেন গিয়াস উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। যিনি ভেটেরিনারি হাসপাতালে সার্জনকে সহযোগিতা করতেন। সার্জন না থাকায় তিনিই এখন সেবা দিচ্ছেন কোনো রকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই।

নান্দাইল উপজেলায় ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় সাড়ে ৪ লাখ জনগণের বাস। এ বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেশির ভাগ মানুষ কৃষিকাজে জড়িত। কেউ ফসল উৎপাদন করেন, আবার কেউ গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগির খামার দিয়ে আয়-রোজগার করেন। উপজেলায় নিবন্ধিত গবাদিপশুর খামার রয়েছে ২৮৩টি।

উপজেলায় ১৬ লাখ ৯৬ হাজার ৪০৪টি গবাদিপশুর জন্য একটি ভেটেরিনারি হাসপাতাল। তবে সেখানেও চিকিৎসক না থাকায় সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছেন উপজেলার গরু খামারি ও ব্যবসায়ীরা। গরুর বিভিন্ন ধরনের রোগ ও অপারেশনের সমস্যা দেখা দিলেও মিলছে না সেবা। ফলে গ্রাম্য চিকিৎসক দিয়ে সেবা দিতে হচ্ছে।

জানা গেছে, নান্দাইলের ভেটেরিনারি হাসপাতালের দুটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। এতে প্রাণীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা।

শেরপুর ইউনিয়নের মাদারীনগর গ্রামের জুলেছা বানু বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, ডাক্তার না থাকলে সেবা পাই না। অন্যরা শুধু বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা করাতে চায়, তা-ও আবার ৫০০ টাহা চায়।’ 

স্বপ্নযাত্রা অ্যাগ্রো ফার্মের খামারি বাপ্পি হাসান বলেন, ‘চিকিৎসকের সংকট আমাদের খামারিদের সবচেয়ে বড় সমস্যা। গরু-ছাগলের রোগ দেখা দিলে তাৎক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা পায় না। নান্দাইল প্রাণিসম্পদ ভেটেরিনারি হাসপাতালে শিগগির শূন্য পদ পূরণের দাবি করছি।’

উপজেলা উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (স্বাস্থ্য) মো. মোকছেদ আলী বলেন, ‘প্রধান দুটি পদই শূন্য, এতে আমাদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও চেষ্টা করছি যাঁরা হাসপাতালে সেবা নিতে আসছেন, তাঁদের সাধ্যমতো সেবা দিতে। আশা করছি, শিগগির শূন্য পদ পূরণ হবে।’

অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু সাদাত মো. সায়েম বলেন, ‘কাজের ওপর নির্ভর করে নান্দাইল আসা হয়। যেন অফিসের বেতন-ভাতা আটকে না যায়, সে জন্য যাই। তা ছাড়া চিকিৎসাসেবা আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব না। আমি আরও ৪ দপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে আরেকটি প্রক্সি ওয়ারে জড়াতে চায়: ফরহাদ মজহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত