Ajker Patrika

করতোয়ার বুকে যন্ত্রের দাপট

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৩৮
করতোয়ার বুকে যন্ত্রের দাপট

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া নদীর অন্তত ২০টি স্থান থেকে চলছে অবাধে বালু উত্তোলন। ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মী ও প্রভাবশালীরা বালু উত্তোলনে জড়িত থাকায় স্থানীয় কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে পারছেন না। মাঝে-মধ্যে উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালালেও কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলনের এ মহোৎসব। তবে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করেই নদী থেকে বালু উত্তোলনের কথা স্বীকার করেছেন কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী।

স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর ধরে করতোয়া নদীর বিভিন্ন এলাকায় চলছে বালু উত্তোলনের এ মহোৎসব। দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও বিভিন্ন এলাকার কাঁচা-পাকা সড়ক। হুমকির মুখে পড়েছে কাটাখালি সেতু, বাঁধ ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ছাড়াও নানা স্থাপনা।

সরেজমিনে দেখা যায়, রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালির নির্মাণাধীন সেতুর পূর্ব পাশেই করতোয়া নদীতে তিনটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। একটু দূরেই সমসপাড়া গ্রামেও একাধিক ড্রেজার বসানো হয়েছে। এভাবে করতোয়ার অন্তত ২০টি পয়েন্টে ড্রেজার দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন। সবচেয়ে বেশি বালু উত্তোলন করা হচ্ছে পুলপাড়া, চকরহিমারপুর, বগুলাগাড়ি, খলসি, কাইয়াগঞ্জ, শাকপালা, কাটাখালি, ধর্মপুর ও ফুলবাড়ি এলাকায়। নদীতে বসানো ড্রেজার মেশিনের সঙ্গে মোটা পাইপ স্থাপন করে বালু তুলে ১-২ কিলোমিটার দূরেও সরবরাহ করা হচ্ছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, উত্তোলন করা বালু ফসলি জমিসহ বিভিন্ন সড়কের পাশে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। বালু পরিবহনের কাজে দিন রাত শত শত ট্রাক্টর ও ড্রাম্প ট্রাক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন সড়কে। বিকট শব্দ আর ধুলোবালিতে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তোলিত অধিকাংশ বালু সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো নির্মাণ ও রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের ছয় লেনের কাজে ব্যবহার হচ্ছে। নামে-বেনামি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানসহ কতিপয় ব্যক্তির কাছে বালু বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বালু ব্যবসায়ী একটি সিন্ডিকেট চক্র।

করতোয়া থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে তৎপরতার কথা জানিয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু সাঈদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত পাঁচ মাসে করতোয়া নদীসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৬০টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১৫টি মামলায় বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের কাছে নয় লাখ টাকার বেশি জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত একটি মামলাও হয়েছে। কিন্তু তার পরও বালু উত্তোলনকারীদের থামানো যাচ্ছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত