Ajker Patrika

খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে নৌবন্ধন

সাতক্ষীরা ও শ্যামনগর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ১১
খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে নৌবন্ধন

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির কারণে উপকূলের মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে নৌবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল সোমবার সকালে শ্যামনগরের সুন্দরবন উপকূলীয় বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশনের পেছনে খোলপেটুয়া নদীতে এ নৌবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা লিডার্স ও খাদ্যনিরাপত্তা (খানি) এর আয়োজন করে।

জেলে-বাওয়ালি ও ঘূর্ণিঝড় আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকার শত শত মানুষ পোস্টার ও ব্যানার নিয়ে এতে অংশ নেন। তাঁরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘আমাদের দুর্যোগ থেকে বাঁচান। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা দিন।’

অংশগ্রহণকারীরা টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তার দাবিতে নানা স্লোগান দেন। তাঁরা বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলের এই অঞ্চল বারবার ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের শিকার হচ্ছে। তাতে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে। দুর্যোগের মুখে হাজার হাজার পরিবার হারাচ্ছে তাদের বসতভিটা, কৃষিজমি ও মৎস্যসম্পদ। এ ছাড়া পানিবন্দী জীবন থেকে রক্ষা পেতে উদ্বাস্তু হচ্ছেন কেউ কেউ। তাই এসব মানুষকে বাঁচাতে হলে খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়াও উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে।

নৌবন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, ২০০৯ সালে আইলার তাণ্ডবের পর থেকে লবণাক্ততা বাড়তে থাকে উপকূলীয় এলাকায়। বর্তমানে লবণাক্ততার মাত্রা এতটাই তীব্র যে, উপকূলীয় এলাকায় কোনো ফসল উৎপন্ন হচ্ছে না। বিশেষ করে শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে লবণাক্ততা আর জলাবদ্ধতার কারণে মাছ চাষই একমাত্র সম্বল। কারণ, এসব জমিতে কোনো ফসলই হয় না। ২০০৯ সালে যেখানে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে শাকসবজি উৎপাদন হতো, বর্তমানে সেখানে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি উৎপাদন হচ্ছে। ধান উৎপাদনও আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে। এই অঞ্চলের মানুষের আয়ের প্রধান উৎস মাছ চাষ। তা-ও বছর-বছর দুর্যোগে ভেসে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকার মাছ। কর্মসংস্থানও কমে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে। এ অবস্থায় উপকূলবাসীর খাদ্যনিরাপত্তার বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। কারণ, সুষম খাদ্যের অভাবে উপকূলীয় এলাকার লক্ষাধিক মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও নারীরা অপুষ্টিজনিত রোগে ভুগছেন।

উপকূলীয় এলাকার মানুষসহ দেশের সব মানুষকে খাদ্যের ন্যায্য অধিকারের স্বীকৃতি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা। বক্তারা বলেন, সব মানুষের জীবিকা, খাদ্য এবং পুষ্টি নিরাপত্তায় সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশের সংবিধানে খাদ্যকে মৌলিক চাহিদা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছরেও খাদ্যকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।

মুক্তিযোদ্ধা মো. আফাজউদ্দিনের সভাপতিত্বে নৌবন্ধনে বক্তব্য দেন লিডার্সের মো. মনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত