Ajker Patrika

আনারস চাষে ঝুঁকছেন চাষি

ময়মনসিংহ ও ফুলবাড়ীয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২১, ১৫: ৫৯
আনারস চাষে ঝুঁকছেন চাষি

ভালো ফলনের পাশাপাশি অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় আনারস চাষে ঝুঁকছেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া চাষিরা। দুই উপজেলার নাওগাঁও, এনায়েতপুর, সন্তোষপুর, কৃষ্টপুর ও রাঙ্গামাটিয়ায় চলতি বছর আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। একই জমিতে আনারসের পাশাপাশি অন্য ফসলে বাড়তি মুনাফাও করছেন তাঁরা। এদিকে কৃষকদের ঝুঁকি এড়াতে নিয়মিত পরামর্শ ও সহযোগিতার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

আনারস চাষি মো. আইয়ুব আলী বলেন, এ বছর ১০ একর জমিতে আনারসের চাষ করেছেন তিনি। এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখের মতো আনারস বিক্রি করেছেন। প্রতিটি ২৬ থেকে ২৮ টাকা পাইকারি দরে বাগান থেকে বিক্রি করে পেয়েছেন প্রায় ২৭ লাখ টাকা। প্রতিটি আনারসে তাঁর খরচ হয়েছিল ৯ থেকে ১০ টাকা। ইতিমধ্যে খরচ বাদে প্রায় ১৭ লাখ টাকা আয় হয়েছে তাঁর।

মোখলেসুর রহমান নামে এক চাষি বলেন, কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসে আনারসের চারা রোপণ করতে হয়। এক বছরের মাথায় আনারসের ফলন আসতে থাকে এবং দেড় বছরের মাথায় বাগানের সব আনারস বিক্রি করে শেষ করা হয়। একই জমিতে আনারসের পাশাপাশি অন্য ফসলও আবাদ করে বাড়তি আয় করছি। এ বছর আমার সাত লাখ টাকার মতো আয় হয়েছে।

একই জমিতে আকাশি গাছের সঙ্গে আনারস চাষ করে সফল হয়েছে মোজাম্মেল হক নামে এক চাষি। তিনি বলেন, আগে মানুষ আনারস চাষে অনীহা প্রকাশ করলেও কয়েক বছর ধরে প্রায় বাড়ি বাড়ি আনারস চাষ হচ্ছে।

কৃষকেরা বলছেন, আনারস বাগানে নিয়মিত ইউরিয়া, পটাশ, টিএসপি, জিপসাম ও জৈব সার প্রয়োগ করলে আর বেশি পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। মাঝেমধ্যে পচন রোগের আক্রমণ হলে কৃষি বিভাগের পরামর্শে সমাধান পাওয়া যায়।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেসমিন নাহার বলেন, ফুলবাড়িয়া ও মুক্তাগাছার উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ১ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। সাড়ে সাত শ কৃষক এ চাষে জড়িত রয়েছেন। প্রতি হেক্টর জমিতে ৩০ হাজার আনারসের চারা রোপণ করা হয়। হেক্টরে ২ লাখ ৪০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। বিক্রি হয় আট থেকে সাড়ে আট লাখ টাকার। হেক্টরে কৃষকের লাভ হয় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা।

এই কর্মকর্তা জানান, এক বছরেই কৃষক লাভের মুখ দেখতে পারে। আনারসের তেমন রোগ বালাই হয় না।

রাঙামাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিনা চৌধুরী বলেন, ‘রাঙামাটিয়াসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকায় ধান, মাছ, পোলট্রি এবং আনারসই আয়ের প্রধান উৎস। কৃষকদের পরামর্শের পাশাপাশি নানাভাবে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হয়।’

ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ খামারবাড়ির উপপরিচালক মো. মতিউজ্জামান বলেন, উপজেলার লাল ও পাহাড়ি মাটি আনারস চাষের জন্য উপযোগী। ফলন ভালো এবং দাম বেশি পাওয়ায় চাষিরা আনারস চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। কৃষি বিভাগ তাঁদের নিয়মিত পরামর্শ যাচ্ছে।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা একেএম রুহুল আমীন বলেন, ‘সামাজিক বনায়নের লক্ষ্যে ফুলবাড়িয়ায় গরিব, অসহায়, দুস্থ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রাধিকার দিয়ে বনের জমিতে লাগানো গাছ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিজন এক একর জমির গাছ দেখাশোনা করেন। পরে গাছ বিক্রি হলে লাভের একটা অংশ তাঁদের দেওয়া হয়। অনেকেই এসব জমিতে গাছের নিচে আনারসের বাগান করে অতিরিক্ত সুবিধা পায়। আনারসে দেওয়া সারে অন্য গাছও উপকৃত হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন, কে তিনি

বাংলাদেশের জন্য রাষ্ট্রদূত মনোনয়ন দিলেন ট্রাম্প

জাতীয় পার্টিকে রক্ষার দায়িত্ব বিএনপির—শামীম পাটোয়ারীর এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানালেন চুন্নু

প্রেমিকা-প্রেমিককে নির্যাতন করছিল কিশোর গ্যাং, উদ্ধারে গেলে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে পুলিশকে এলোপাতাড়ি কোপ

ডিবির হারুনকে ‘জিন’ ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল: সাবেক আইজিপি মামুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত