Ajker Patrika

পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ওবরিশাল প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ৫৯
পাঁচজনের অবস্থা  আশঙ্কাজনক

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় গুরুতর ২২ জনকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে একজন গত শুক্রবার রাতে মারা গেছেন। অন্য ২১ জনের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তার মধ্যে দুজনকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।

ঢাকা ছাড়াও বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন অগ্নিদগ্ধ ৩৫ জন ও অন্যান্য আঘাত পাওয়া ১১ জন। ঢাকা থেকে যাওয়া বার্ন বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। তাঁদের মধ্যে কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক নয় বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মহিলা মাদ্রাসায় কাজ করতেন

মারুফা বেগম। সেখানে পড়তে আসা বাচ্চাদের দেখাশোনা করতেন তিনি। প্রায় ৬ মাস পর মাদ্রাসা থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে বরগুনার পাথরঘাটায় বাড়িতে যাচ্ছিলেন মারুফা। তিনি এখন শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে কাতরাচ্ছেন। তার বড় মেয়ে মার্জিয়া চিকিৎসা নিচ্ছেন বরিশাল মেডিকেলে। আর ছোট মেয়ে মাহিদা মারা গেছেন।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউর দায়িত্বরত ডা. তানভীর বলেন, আইসিইউতে তিনজনকে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে শাহিনুর বেগম ও মারুফা বেগম নামের দুজনকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। আরেকজন মণিকা রাণীকে (৪৫) আজ তিনটার দিকে ভর্তি করা হয়। তার শরীরের ১৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। কিন্তু শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ায় শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। মনিকা রানির স্বামী বঙ্কিম চন্দ্র মজুমদারও বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন।

বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ড. আইয়ুব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যারা ভর্তি আছেন তাঁদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা ৭টি মেডিকেল টিম করেছি। যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক তাদের আইসিইউ ও এইচডিইউতে পাঠানো হয়েছে। দুজনের অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী জেসমিন বেগমের গর্ভের সন্তানকে গর্ভপাত করানো হয়েছে।’

বরিশালের শেরেবাংলায় রোগীদের চিকিৎসার সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে গতকাল দুপুরে গণমাধ্যম কর্মীদের ব্রিফ করেন ঢাকা থেকে আসা চিকিৎসক প্রতিনিধি দল। ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ ও প্লাষ্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মাসরুর রহমান বলেন, তারা বিভিন্ন ওয়ার্ডে রাখা রোগীদের নির্ধারিত একটি কক্ষে আনার পর তাদের তত্ত্বাবধানে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়।

আরেকজন সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুরুর রহমান বলেন, অগ্নিদগ্ধ রোগীদের জন্য স্থাপিত অস্থায়ী কক্ষে শনিবার দুপুর পর্যন্ত অগ্নিদগ্ধ ৩৫ রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ বছর থেকে ৭০ বছর বয়সী রোগী আছে। অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে পুরুষ ১৬ জন, নারী ৮ জন এবং শিশু ১১ জন। এ ছাড়া লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হননি, তবে শরীর অন্যান্য স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন এমন ১১ জন হাসপাতালের অন্যান্য ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসক নুরের রহমান আরও জানান, শুক্রবার দুপুর থেকে পর্যায়ক্রমে ১৭ জন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এই মুহূর্তে ভর্তি রোগীর কেউ আশঙ্কাজনক নন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত