Ajker Patrika

গাইবান্ধা ভালো বার্তা দিল না

সম্পাদকীয়
গাইবান্ধা ভালো বার্তা দিল না

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি ভোটের মাঠে অনুপস্থিত থাকার পরও গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করতে হয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যে মোটা ব্যয় হলো, তা পানিতে ফেলার দায় এখন কে নেবে?

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করে বলেছেন, ‘সার্বিক বিবেচনায় উপনির্বাচনটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলেই এমন সিদ্ধান্তে আসতে হয়েছে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘কোনো একটি পক্ষ বা কোনো একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রভাবিত করতে পারছেন। ফলে আমাদের দৃষ্টিতে মনে হয়েছে, ভোট গ্রহণ নিরপেক্ষ হচ্ছে না।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার সরকারি না বললেও এটা বুঝতে কারও অসুবিধা হচ্ছে না যে কোন পক্ষ বা কোন প্রার্থী নির্বাচন প্রভাবিত করতে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে গেছেন। তার পরও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে আওয়ামী লীগ অবাক হয়েছে। জাতীয় পার্টিসহ ভোটে অংশ নেওয়া অপর চার প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন এবং আবার তফসিল ঘোষণা করে নতুনভাবে ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশন যে কঠোর অবস্থান নিয়ে নির্বাচন বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার সাহস দেখিয়েছে, সে জন্য একদিকে যেমন অনেকে কমিশনের প্রশংসা করছেন, অন্যদিকে মাত্র একটি আসনের উপনির্বাচন যে কমিশন সুষ্ঠুভাবে করতে পারল না, সেই কমিশন ৩০০ আসনে কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন করবে, সেই প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনের সমালোচনাও হচ্ছে। ভবিষ্যতে কমিশনের সমালোচনা আরও বাড়বে।

কয়েক বছর ধরে নির্বাচন নিয়ে অনিয়মের বহু অভিযোগ থাকলেও তা আমলে না নেওয়ায় নির্বাচন কমিশন নিয়ে মানুষের মধ্যে অনাস্থা ও হতাশা তৈরি হয়েছে। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে ফেব্রুয়ারি মাসে গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রতিও আস্থাহীনতা আছে। গাইবান্ধার উপনির্বাচন নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থার সংকট দূর করে কোনো ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারল না। কারণ, যাদের জন্য নির্বাচন ভন্ডুল হলো, যাদের জন্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেল, তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন কী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, সে সম্পর্কে কিছু বলেননি সিইসি।

গাইবান্ধার উপনির্বাচনে যে অনিয়ম হয়েছে, তার দায় স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের নির্বাচনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এড়াতে পারেন না। কোনো বিশেষ দল প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করার পরও তার প্রতি প্রশাসনিক সমর্থন অগ্রহণযোগ্য। দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকলেও সরকার ও দল যে আলাদা, সেটা গুলিয়ে ফেললেই তৈরি হয় জটিলতা। আবার সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন ও সরকারের পারস্পরিক সহযোগিতা। এ বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ ও নজরদারি করাই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। নির্বাচনের সময় নির্বাচনসংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক পক্ষপাতমুক্ত রাখতে না পারলে নির্বাচন কমিশনকে সফল বলা যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজীপুরে রাস্তা বন্ধ করে চলাচল করা সেই পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার

জামায়াত আমিরের বাসায় জ্যেষ্ঠ নেতাদের বৈঠক, পিআর নিয়ে অনড় অবস্থান

মির্জাপুরে বিএনপি নেতার পোস্টার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৭

নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, গুলি, এক শ্রমিক নিহত

কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইবরাহিমের নাম বাদ দিতে ইসিকে চিঠি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত