Ajker Patrika

বিশ্বকাপের তাপ বুঝেছেন তাঁরা

রানা আব্বাস, অ্যাডিলেড থেকে
বিশ্বকাপের তাপ বুঝেছেন তাঁরা

বাংলাদেশ ক্রিকেটে ‘সিনিয়র ক্রিকেটার’ পরিভাষাটা একটু বেশিই প্রভাববিস্তারী। যেকোনো দলে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের আলাদা একটা গুরুত্ব থাকে, তাঁরা সেই জায়গাটা করেও নেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞদের জায়গায় নতুনদের প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া বাংলাদেশে মোটেও সহজ নয়।

এর কারণও আছে। গত এক দশকে সিনিয়র খেলোয়াড়রা নিজেদের এমন উচ্চতায় নিয়েছেন, তরুণেরা পার্থক্যটা সহজেই কমাতে পারেন না। সিনিয়রদের জায়গায় নতুন কাউকে ভাবা তাই সহজ নয় নীতিনির্ধারকদের। তবু গত এক বছরে কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। সেটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কম হয়নি। এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে যেমন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বাদ দিয়ে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে অনভিজ্ঞ কয়েকজনকে। মুশফিকুর রহিম অবশ্য এই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়ার আগে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন। বিষয়টা এতটাই ব্যতিক্রম, বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের আগে বড় পর্দায় লেখা ভেসে উঠল—‘আপনি কি জানেন, বাংলাদেশ এই প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে এল মুশফিক-মাহমুদউল্লাহকে ছাড়া?

মাহমুদউল্লাহকে বাদ দেওয়ার ব্যাখ্যায় বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরণ শ্রীরাম বিশ্বকাপ দল ঘোষণার দিন জানিয়েছিলেন, এটি নতুনদের বড় জুতায় পা গলানোর সুযোগ।

সেই বড় জুতায় তাঁরা ঠিকঠাক পা গলাতে পারেননি। মাহমুদউল্লাহর পজিশনে খেলা নুরুল হাসান সোহান ৫ ম্যাচে করেছেন ৪১ রান। মোসাদ্দেক হোসেন ৫ ম্যাচে ৩১ আর ইয়াসির আলী রাব্বি ৩ ম্যাচে করেছেন ৫ রান। এবার আফিফ হোসেনকেও সফল বলার সুযোগ নেই। হোবার্টে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৩৮ রানের ইনিংস বাদে তেমন ভালো ইনিংস আসেনি তাঁর কাছ থেকে।

বোলারদের মধ্যে বড় মঞ্চে আলো ছড়ানোর সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি শরীফুল ইসলাম। হাসান মাহমুদের বোলিং কিছুটা প্রশংসিত হলেও বড় মঞ্চের চাপ ঠিকঠাক নিতে পারেননি।

তারুণ্যনির্ভর এই দলের সাফল্য আরও বাড়ত যদি এই অনভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা ধারাবাহিক ভালো করতে পারতেন। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন তাই তরুণদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট নন।

বড় মঞ্চের চাপ-তাপের সঙ্গে যে পরিচয় হয়েছে, এটিই বড় প্রাপ্তি মনে করছেন তিনি।

গতকাল অ্যাডিলেডের টিম হোটেল থেকে দেশে রওনা দেওয়ার আগে সুজন বলেছেন, ‘(তরুণদের) পারফরম্যান্স খুশি হওয়ার মতো নয়। ওরা একেবারেই নতুন, অনভিজ্ঞ। যাদের বাদ দিয়ে তাদের নেওয়া, সিনিয়ররা একসময় অনভিজ্ঞ ছিল। তারা ধীরে ধীরে বড় হয়েছে। এরাও ধীরে ধীরে বড় হবে। তাদের প্রতি পূর্ণ আস্থা আছে। এরাও দেশের হয়ে ম্যাচ জেতাবে। পারফর্ম না করলেও তাদের যে অভিজ্ঞতা হলো, তারা যে বুঝতে পারল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের, বিশ্বকাপের কী তাপ, এটাই বড় বিষয়।’

তরুণ খেলোয়াড়দের ব্যর্থতার ভিড়ে ব্যতিক্রম ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বিশ্বকাপ দলে তাঁর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কম আলোচনা-সমালোচনা হয়নি। সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ৫ ম্যাচে ২ ফিফটিতে ১৮০ রান করেছেন শান্ত, বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে যেটি সর্বোচ্চ। শান্তকে নিয়ে সমালোচকদের একহাত নিলেন সুজন, ‘সবচেয়ে অবাক লাগে শান্তকে নিয়ে এত কথা হয়েছিল। এটা একটা ছেলের প্রতি অবিচার। এত কিছুর পরও সে যেভাবে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে, সেটা অসাধারণ। ওর ওপর যে চাপ ছিল সেখান থেকে বেরিয়ে আসা—চারিত্রিকভাবে অনেক বড় দৃঢ়তা দেখিয়েছে।

ক্রিকেট মনস্তাত্ত্বিক খেলা। এই চাপ নিয়ে খেলা খুব কঠিন। শান্তর ব্যাটিংয়ে শুরুতে এর প্রভাব ছিল। পরে সে খোলস থেকে বেরিয়ে এসেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ: এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ ৩০ জনের নামে মামলা

‘কথিত আওয়ামী লীগ সদস্যদের’ বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতার বিষয়ে ভারত অবহিত নয়: মুখপাত্র

কলকাতার নিউটাউনে বসে আয়েশ করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা

চাকরি না ছেড়েই বিদেশে পাড়ি, ৪৮ শিক্ষক বরখাস্ত

ভিসা ছাড়া পাকিস্তান সফরের চুক্তি হতে পারে শিগগির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত